Chandrakona: চোলাই-এ অসুস্থ এক যুবক, রনং দেহী মহিলাদের হামলা চোলাই পাড়াতে
চন্দ্রকোনা: পাড়ার বেশিরভাগ লোকজনই বাড়িতে চোলাই তৈরি করে। পুলিশ ও আবগারি দপ্তরের অভিযান বহুবার হয়েছে। তারা চলে যেতেই সেই কারবার পুনরায় শুরু হয়। চোলাই পান করে এলাকার বেশিরভাগ যুবক বিপদগ্রস্ত। এতদিন তাও ঠিকঠাক চলছিল, দুদিন আগে এলাকার এক যুবক চোলাই পান করে অসুস্থ হয়ে পড়তেই পুরো পাড়ার মহিলারা চোলাই পাড়াতে এসে হামলা করলেন শনিবার বিকেলের পর। একের পর এক বাড়িতে গিয়ে ঝগড়া হুঁশিয়ারি ভাঙচুর করল তারা। চোলাই প্রস্তুতকারী এক মহিলাকে হুঁশিয়ারি দিল-“তোদের বিষাক্ত মদ পান করে আমাদের যুবক চরম সংকটে, সে মারা গেলে তোর ছেলেকেও বিষ খাইয়ে দেবো আমরা।”
ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা টাউন থানার অন্তর্গত দক্ষিণ বাজার এলাকায়। চন্দ্রকোনা পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ছে ওই এলাকা। স্থানীয় মহিলাদের দাবি, এলাকাতে রমরমিয়ে চোলাই মদের কারবার চলছে। বহুবার পুলিশ ও আফগানি দপ্তরকে জানানোর পর তারা অভিযানও করেছিল। অনেকবার অনেকেই অনেক ভাবে শাস্তি পেয়েছে। কিন্তু পরে আবার সেই কারবার শুরু করেছে। বর্তমানে ওই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে এই কারবার চলে। সেই কারবার ক্রমেই বেড়ে চলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলাটাই ভালো। এরপর পুলিশও আবগারি দফতরের ওপর ভরসা হারায় স্থানীয়রা।
স্থানীয় মহিলা আরতি রায় বলেন-” আমরা বহুবার পুলিশকে জানিয়েছি। তারপরেও সেই একই রকম ব্যবসা চলছে এলাকায়। প্রতিটি বাড়িতে চোলাই পান করে বাড়ির পুরুষেরা মাতাল হয়ে থাকছে। কেউ কোন কাজ করছে না। সংসার শেষ হয়ে গেছে সবার। অথচ যারা মদ বিক্রি করছে তারা ভালো রয়েছে। আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম, পুলিশ আমাদের তুলে দিতে বলেছে। তাই আমরা কাউকেই রাখবো না এখান থেকে ভেঙে তুলে দেব।”
শনিবার সন্ধ্যায় এলাকার বহু মহিলা একত্রিত হয়ে হাতে লাঠি ও অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে চড়াও হয় ওই চোলাই তৈরি করার পাড়া দক্ষিণ বাজার এলাকাতে। মহিলাদের দাবি এই পাড়ার বেশিরভাগ বাড়িতেই চোলাই তৈরি হয়। স্থানীয় মহিলা পূর্ণিমা রায় বলেন-“আমার ছেলের চারটে মেয়ে। সে সারাদিন মদ পান করে পড়ে থাকে। কোন ভ্রুক্ষেপ নেই তার সংসারে। এত বড় সংসারটা চলবে কি করে। কাজকর্ম না করে সারাদিন মাতাল হয়ে পড়ে থাকে। আমরা জানি না কিভাবে চলবে আমাদের। তোমরা সবাই উদ্ধার করো আমাদের না হলে আমরা শেষ।”
প্রতিবাদী মহিলা গীতা ঘোড়ই বলেন-” বাড়ির পুরুষেরা মদ পান করে বাড়িতে গিয়ে ঝগড়ায় অতিষ্ট করে দিচ্ছে। খাবার দাবারও ফেলে দিচ্ছে ছড়িয়ে। সাত বছরের বেশি সময় ধরে এই এলাকা মাতালদের এলাকা হয়ে গিয়েছে। অনেকভাবে আমরা চেষ্টা করেছি এটা বন্ধ করার। কিন্তু হয়নি। এবার আমরা নিজেরা সব ভেঙে তুলে দেবো বলে ঠিক করেছি।”
এদিন প্রতিবাদী মহিলারা একজোট হয়ে গিয়ে যে সমস্ত পরিবার মদ বা চোলাই তৈরি করে তাদের সাথে তুমুল ঝগড়া বিবাদ শুরু করে দেয়। চরম উত্তেজনা তৈরি হয়। বেশ কিছু বাড়িতে ভাঙচুর চলে আসবাবপত্র। চোলাই লুকিয়ে রাখার স্থানগুলিতে অভিযান চালিয়ে নষ্ট করে দেয় তারা। এক চোলাই প্রস্তুতকারক মহিলাকে গিয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়-” তোদের তৈরি করা চোলাই খেয়ে আমাদের একজন মরণাপন্ন। যদি সে মারা যায়, তোদের ছেলেকেও বিষ খাইয়ে মেরে দেবো আমরা। তোদের কোনোভাবেই ছাড়বো না আমরা।”
এমন চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে পুরো পাড়া তছনছ করে ক্ষান্ত হন প্রতিবাদী মহিলারা। ঘটনা ঘিরে শনিবার সন্ধ্যায় চরম উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।