ICDS Centre : শীতের সকালে অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রে কাঁপছিল শীতবস্ত্রহীন দুই শিশু, দোকান খুলিয়ে পোশাক কিনে এনে পরালেন মহকুমা শাসক
Medinipur: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বসেছিল শীতের পোশাকহীন দুই শিশু, দোকান খুলিয়ে পোশাক কিনে এনে পরালেন মহকুমা শাসক। বৃহস্পতিবার সাত সকালেই মেদিনীপুরের বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শনে বেরিয়ে শীতবস্ত্রহীন শিশুকে কাঁপতে দেখে সব ফেলে দোকানে ছুটেছিলেন মহকুমা শাসক। তখনো দোকান খোলেনি। দোকান খুলিয়ে পোশাক কিনে ফের সেখানে এসে শিশুদের পরালেন তিনি। চরম মানবিকতার নিদর্শন রাখলেন তিনি।
ঘটনা মেদিনীপুর শহরের। বৃহস্পতিবার সকালে আটটা নাগাদ মেদিনীপুর শহরের শেখপুরা এলাকায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শনে হাজির হয়েছিলেন মেদিনীপুর সদর মহকুমা শাসক মধুমিতা মুখার্জি। শেখপুরা এলাকার ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ছাত্র-ছাত্রী প্রায় ৫০ জন। অনেকেই সেখানে প্রবেশ করেছিল। তার মধ্যে দুজন শিশুর শীতের পোশাক ছিল না। পাতলা পোশাকেই অন্যান্যদের ভিড়ে বসে কাঁপছিল তারা। পরিদর্শনে বেরিয়ে মহাকুমা শাসক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিমনিদের কাছে বিভিন্ন জিনিস খতিয়ে দেখছিলেন। সমস্ত হিসেবে মেলানো ও খাবারের গুণগত মান নিয়ে কথা বলার সময় তার নজরে আসে শীতে কাঁপতে থাকা দুই শিশুর অবস্থান। সঙ্গে সঙ্গে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। বুঝতে পারেন ভালো শীতের পোশাক নেই তাদের। এরপরেই সেই শিশু দুজনকে দিদিমণিদের বলে দেন নজর রাখার জন্য। নিরাপত্তা রক্ষী ও সঙ্গে থাকা লোক জনকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। গাড়ি নিয়ে মেদিনীপুর শহরে বিভিন্ন দোকানে ছুটে যান। বেশিরভাগ দোকান কখনো খোলেনি। অনেক পরে কোন একটি দোকানের সামনে হাজির হয়ে দোকানদারকে পেয়ে দোকান খুলতে অনুরোধ করেন। দোকান খুলিয়ে সেখানে দুই শিশুর জন্য ভালো শীতের পোশাক কিনে পুনরায় ফিরে আসেন ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। নিজে হাতে দুই শিশুকে পোশাক পরিয়ে দেন। পুরো পোশাক পরাণ নিজেই। এরপর তাদের সঙ্গে গল্প করেন। দীর্ঘক্ষণ বসে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের খোঁজখবর নেন তিনি। এরপর রওনা দেন অন্যত্র।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এই ভাবেই পরিদর্শন করেছেন মহকুমা শাসক মধুমিতা মুখার্জি। কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও একইভাবে পরিদর্শন করে তাদের খোঁজ নিয়েছেন। খাবারের গুণগতমান পঠন-পাঠন সবটাই হিসেব নিয়েছেন তিনি। মহকুমা শাসক সব দেখার পর সংবাদ মাধ্যমের সামনে সকালের ঘটনার বিষয়ে জানান।
মহাকুমা শাসক বলেন-” এমনি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। এখানে দেখলাম দুই শিশুর গায়ে শীতের পোশাক তেমন ভালো নেই।। তাই নিজেই পোশাক কিনতে বেরিয়েছিলাম । তাদের পোশাক দিয়ে কিছুটা স্বস্তি। ” তবে মহকুমা শাসকের এই বিষয়টা স্থানীয়দের নজরে আসে। অনেকেই মোবাইলে সেই মুহূর্তের ভিডিও গুলো ধারণ করেন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই ধরনের স্বেচ্ছা উদ্যোগ ও মানবিকতাকে দেখে ।

উল্লেখ করা যায়,জেলাশাসকের নির্দেশে জেলার সমস্ত স্কুলগুলিতে মধ্যাহ্নকালীন আহারের সামগ্রিক অবস্থা ও পরিকাঠাম খতিয়ে দেখা শুরু করেছেন আধিকারিকরা। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক, মাধ্যমিক, অতিরিক্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক, সহকারী জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সহ মোট ৬৫ জন আধিকারিক জেলার ৬৯ স্কুল পরিদর্শন শুরু করেছেন। তাঁরা বিদ্যালয়গুলির মধ্যাহ্নকালীন আহারের সামগ্রিক অবস্থা খতিয়ে দেখেন। জেলাশাসকের নির্দেশে ৭ জানুয়ারি থেকে এই পরিদর্শন শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ শে জানুয়ারি পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে আধিকারিকরা জেলার সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে তার রিপোর্ট জমা দেবেন।