Tiger : রেডিও কলার জানাচ্ছে বাঘ বেলপাহাড়িতেই ! যন্ত্র হাতে কর্মীরা ছুটছেন বিভিন্ন জায়গায়
Belpahari: শনিবার সকাল ছটা নাগাদ বনদপ্তরের টেকনিক্যাল টিমের রেডারে সাংকেতিক চিহ্ন বুঝিয়ে দিল উড়িষ্যার সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ (Shimlipal tiger reserve forest) এর বাঘ রয়েছে ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলার বেলপাহাড়িতেই। তাতেই ঘুম উড়েছে ওড়িশা (Orissa) ও ঝাড়গ্রাম জেলার বনকর্তাদের। মাইকিং করে গ্রামবাসীদের সাবধান করা শুরু করেছেন বনকর্তারা। নিজেদের কর্মী সংখ্যা বাড়িয়ে বাঘ ধরার খাঁচা ও বন্দুক, টেকনিক্যাল টিম নিয়ে বেলপাহাড়িতে ডেরা বাঁধলেন আধিকারিকরা। বনকর্তারা জানিয়েছেন-জিনাত ( Jinat বনদপ্তরের দেওয়া বাঘের নাম) ঝাড়গ্রামে ঢুকে পড়েছে। রেডিও সিগনাল (Radio Signal) এমনই জানিয়েছে। ২৪ ঘন্টায় নজরদারি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
বনদপ্তর (Forest) সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোরে ঝাড়খন্ড সীমানা(Jharkhand border) পার করে উড়িষ্যা থেকে আসা বাঘটি(Tiger) ঝাড়গ্রাম এর কটুচুয়া মাজগেড়িয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে। তার গলায় লাগানো রয়েছে রেডিও কলার (Radio callar)। সেই কলার থেকে পাওয়া সিগন্যাল জিপিএস ট্র্যাকারের(GPS tracker) মাধ্যমে যাত্রাপথের সন্ধান দিয়ে দিয়েছে বনদপ্তরকে। শনিবার সকাল ছটা নাগাদ সেই বাঘ এর অবস্থান বেলপাহাড়ি থানার অন্তর্গত জজুরধারা এলাকায় চিহ্নিত হয়েছে। কিভাবে এই চিহ্নিতকরণ হচ্ছে, কিভাবেই বা রেডিও কলার কাজ করে ?
কোন বাঘকে নির্দিষ্ট এলাকায় বনদপ্তরের পক্ষ থেকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ার আগে তাকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে অজ্ঞান করে গলাতে একটি রেডিও কলার পড়ানো হয়। রেডিও কলারটি অত্যাধুনিক উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাটারি পাওয়ার যুক্ত। বাঘের গলাতে লাগানো মজবুত সেই কলারে লাগানো থাকে একটি জিপিএস ট্র্যাকার। যা স্যাটেলাইট মারফত বনদপ্তর এর কাছে সিগন্যাল পাঠাতে পারে। বনদপ্তর বাঘের গলাতে সেই ট্র্যাকার তথা জিপিএস লাগিয়ে ছেড়ে দেয়। জ্ঞান ফিরলে বাঘ গলাতে লাগানো জিপিএস কলার নিয়েই বেরিয়ে যায়। প্রথমটা নিজের অস্বস্তি মনে হলেও বাঘ সেই কলার টেনে ছিঁড়ে ফেলতে পারেনা। বাঘ এরপর যেখানেই যায় সেই জিপিএস স্যাটেলাইট (Satelite) মারফত রুট ম্যাপ চিহ্নিত করে দেয় বনদপ্তরের রেডারে।
তবে সেই বাঘ অনেকটা দুরে চলে গেলে অনেক সময় রেঞ্জের বাইরে বেরিয়ে গেলে বনকর্তাদের সিগন্যাল ক্যাচিং ডিভাইস নিয়ে জঙ্গলে বের হতে হয়। গভীর জঙ্গলের বিভিন্ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগন্যাল খুঁজতে হয়। সেই কাজটাই এই মুহূর্তে চলছে বেলপাহাড়ির আমলাশোল এলাকাতে। ওড়িশা ও এই রাজ্যের সুন্দরবন এলাকার বনকর্তারা ও বাঘ ধরার ক্ষেত্রে পারদর্শী টিম কয়েকদিন ধরেই ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি সংলগ্ন এলাকায় নিজেদের জিপিএস ট্র্যাকারে বাঘের অস্তিত্বের সিগনাল পেয়ে অপেক্ষা করছেন।সাথে বিশাল বাহিনী রয়েছে বনদফতরের, বন্দুক বাহিনী, টেকনিক্যাল টিম, বাঘ ধরার বিশাল বিশাল খাঁচা,টোপ হিসেবে রয়েছে মহিষ, ছাগল৷ কেন ও কিভাবে এই পরিস্থিতি হল ?

জানা গিয়েছে গত ১৫ ই নভেম্বর, মহারাষ্ট্রের তাডবা আন্ধারী ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে বেশ কয়েকটি বাঘ নিয়ে আসা হয়েছিল উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলার (Mayurbhanj district) সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে। কয়েকদিন পর্যবেক্ষণের পর ২৪ শে নভেম্বর সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল সেগুলিকে। জিনাত নামের বাঘটিকে নিয়ে এসে রেডিও কলার লাগিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে ৮ ডিসেম্বর জিনাত নামের বাঘটি ঝাড়খণ্ডের জঙ্গলে ঢোকে। কয়েকদিন জামশেদপুরের রাজবাসা ও চিনাবাঁধি জঙ্গলে ঘুরেছে। বাঘের গতিবিধি নিয়ন্ত্রনের বাইরে মনে হওয়াতে সেখানে মহিষ শাবকের টোপ দিয়ে বাঘিনীকে ঘুম পাড়ানি গুলি ছুঁড়ে চেষ্টা করেও ধরতে ব্যর্থ হয়েছে বনদপ্তর। সেই বাঘ বর্তমানে ঝাড়গ্রাম জেলার সীমান্তে(Jhargram border) প্রবেশ করেছে। বনদপ্তরের ট্র্যাকার মেশিন নিয়ে থাকা কর্মীরা- জিনাতের লোকেশন পেয়েছে বেলপাহাড়ির আমলাশোল (Amlasol) সংলগ্ন জোজুরধারা এলাকায়। বনদপ্তরের বিশাল বাহিনীকে দেখে এলাকার লোকজনও যেন থরহরি কম্প। বনদপ্তর মাইকিং করে রাস্তাঘাটে বেরোনোর ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে এর জেরে স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্তকের ওই এলাকায়।
#tiger, #Royal Bengal tiger, #Tiger in Jhargram, #Tiger panic, #tiger in Jhargram forest, #tiger from orissa, #tiger in Paschim Medinipur,