মেদিনীপুর: আরজি করের ঘটনায় কলকাতার পাশাপাশি নাগরিক আন্দোলন দেখেছিল মেদিনীপুর শহরও। ওই আন্দোলন থেকে শাসকদলের বিরুদ্ধে স্বর উঠেছিল। কিন্তু আরজি কর আবহে রাজ্যের ছ’টি বিধানসভা উপনির্বাচনে সেই নাগরিক আন্দোলনের কোনও প্রভাবই পড়ল না! ছ’টি আসনের সবকটিতেই জয়ী তৃণমূল। মেদিনীপুর শহরে এগিয়ে শাসক দল। “আরজিকরের প্রভাব যতটা পড়া দরকার ছিল তা পড়েনি। তবে শহরের ভোট শতাংশ কম পড়েছে। তাই মার্জিনটা আমাদের কমেছে।” বললেন বিজেপি প্রার্থী শুভজিৎ রায়। যদিও তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরার দাবি, “আরজিকর কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নয়, যার ফলে ভোটে প্রভাব পড়েনি। যারা রাজনৈতিক ইস্যু বানাতে চেয়েছিল তাদেরকে মানুষ সরিয়ে দিয়েছে।”
মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে ৩৩ হাজার ৯৯৬ ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা। জয়ের মার্জিন আরো বাড়ত বলে আশাবাদী তৃণমূল প্রার্থী। অন্যদিকে শহরে ভোট কম পড়ায় হতাশ বিজেপি প্রার্থী। বিজেপি প্রার্থী শুভজিৎ রায় বলেন, “উপনির্বাচনে মানুষের এনার্জি কম থাকে যে কারণে ভোট কম পড়েছে। লোকসভায় যত ভোটে আমরা লিড পেয়েছি, ততটা পায়নি। তখন ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এবারে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।” সুজয় হাজরা বলেন, “শহরে আমরা ৩০ হাজার লিড পেতাম। শহরে ভোট কম পড়েছে। আমাদের নিজেদের মধ্যেও আলোচনা করতে হবে। শহরের মানুষের মধ্যে ভোটের আগ্রহ বাড়াতে হবে।”
তবে শহর ছাড়াও গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ভোট পেয়েছে তৃণমূল। ২০ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়েছিল সুজয় হাজরা। একদিকে লক্ষ্মী ভান্ডারের প্রভাব, অন্যদিকে ভোটে হারের পেছনে পুলিশি সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলছেন বিজেপি প্রার্থী শুভজিৎ রায়। তিনি বলেন, “গ্রামীণ ভোটে লক্ষ্মী ভান্ডারের প্রভাব থাকতেই পারে। তবে ভোটের আগের দিন গোটা বিধানসভা জুড়ে দেখা গিয়েছে কি হয়েছিল। সরকারতন্ত্র এবং পুলিশতন্ত্র একত্রিত ভাবে কাজ করেছে। নীরব সন্ত্রাস চালিয়েছে টাকা দিয়ে। তার বিরুদ্ধেও মানুষ আমাদেরকে ভোট দিয়েছেন। আমরা লড়াইয়ে আছি এবং থাকবো। ২০২৬ এ বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় আসবে।”
সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা। তিনি বলেন, “২০১১ সালে ২৯ হাজার ভোটে জিতেছে। ২০১৬ সালে ৩২ হাজার ভোটে জিতেছে। ২০২১ সালে ২৪ হাজার ভোটে জিতেছে। যদি সন্ত্রাস হত তাহলে আমরা ১ লাখ ভোটে জিততাম। কিন্তু বিগত দিনের মার্জিন বলে দিচ্ছে কোন সন্ত্রাস হয়নি।”