TET :টেটের মেধা তালিকায় পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে শীর্ষে তিন ছাত্রী, অবাক তিন মেধাবীই
মেদিনীপুর: শুক্রবার দুপুরে
প্রকাশিত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ফলাফলে রাজ্যের মেধা তালিকাতে পশ্চিম
মেদিনীপুরের তিন ছাত্রী। তিনজনেই জেলার খড়গপুর মহাকুমার বাসিন্দা। সংবাদমাধ্যমে
ফলাফল জানতে পেরে অবাক হয়েছেন সকলেই। দুজন ডব্লিউবিসিএস এর জন্য প্রস্তুতির মাঝে
এই সফলতা পেলেও, অপরজন প্রত্যন্ত এলাকার ক্ষুদ্র কৃষকের
একমাত্র মেয়ে,লক্ষ্য ছিল শিক্ষকতাই। বিধায়ক অজিত মাইতি
বলেন- ” রাজ্য জুড়ে যে কটাক্ষ চলছিল নিয়োগ ইস্যুতে, পশ্চিম
মেদনীপুরের এই ফলাফল তাদের জবাব দিল।”
রাজ্যের মেধা তালিকার যুগ্ম
দ্বিতীয় বেলদা এলাকার বাসিন্দা মেঘনা চক্রবর্তী। মেঘনা স্থানীয় রেলওয়ে ঠিকাদার
সুজিত চক্রবর্তী এর একমাত্র মেয়ে। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী, বই পড়তে ভালোবাসে। বাবা সুজিত চক্রবর্তী ছোটবেলায় প্রতিকূলতার কারণে
পড়াশোনা করতে পারেননি। তাই গরিব মেধাবী পড়ুয়াদের প্রতিবছর সহযোগিতা করেন
বিভিন্নভাবে। প্রতিবছর কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করেন মেধাবী পড়ুয়াদের পড়াশোনার
জন্য। তার একমাত্র মেয়ে মেঘনা নিজেও মেধাবী। মেঘনার লক্ষ্য ডাব্লিউবিসিএস অফিসার
হওয়া। সেই প্রস্তুতির মাঝেই টেট পরীক্ষা দিয়ে রাজ্যে যুগ্ম দ্বিতীয় স্থান দখল
করেছে। মেঘনা সহ পরিবারের সকলেই খুশি। মেঘনার বাবা সুজিত চক্রবর্তী বলেন-”
মেয়ে বই পড়তে ভালোবাসে৷ তাই বই কেনার জন্য বইমেলায়
গিয়েছে। আমরা সকলেই চমকে গিয়েছি এই ফলাফলে। আমরা খুশি। মেধাবীদের স্বচ্ছ নিয়োগ
হলেই সমাজের ভবিষ্যৎ মজবুত হবে।”
রাজ্যের মেধা তালিকায় যুগ্ম
দ্বিতীয় হয়েছেন জেলার পিংলা এলাকার বাসিন্দা দীপিকা রায়। ওই এলাকার প্রত্যন্ত
গ্রামের ক্ষুদ্র এক কৃষকের মেয়ে। বর্তমানে এমএ পাঠরতা। বাড়িতে দুই বোনের দীপিকাই
বড়ো। দীপিকা এদিন জানান-” আমি এই ফলাফলে খানিকটা চমকে গিয়েছিলাম। ভালো
ফলাফল হবে জানতাম তবে রাজ্যে এই স্থান হবে সেটা ভাবিনি। খুশি হব যদি আমার নিজের
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমি শিক্ষকতায় যোগদান করতে পারি।” দীপিকাকে প্রশিক্ষণ
দেওয়া শিক্ষক শুভেন্দু বিকাশ রায় বলেন- “প্রত্যন্ত গ্রামের
খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করা এক মেধাবী ছাত্রী দীপিকা। ওর সঠিক স্থান ওর দখল করতে
পেরেছে। আমাদের ছাত্রীদের মধ্যে কৃতিছিল ও।”
অন্যদিকে বেলদা থানা এলাকারই
পাটপুর গ্রামের বাসিন্দা মনামী অধিকারী, রাজ্যে যুগ্ম তৃতীয়
হয়েছে সে। ওই এলাকার বাসিন্দা চাকুরীজীবী অশোক অধিকারীর এক ছেলে এক মেয়ে। মেধাবী
এই মনামী অধিকারী ডব্লিউবিসিএস অফিসার হওয়ার প্রস্তুতিতে রয়েছেন। তিনি জানান
” ফলাফলের চমকে গিয়েছি অনেকটা। আমার লক্ষ্য ডাব্লিউবিসিএস হলেও এই চাকরি
পেলে এখানে যোগদান করব।”
জেলার এই তিন কৃতিকে সম্মান
জানানোর সাথে সাথে পিংলার বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি
বলেন-” পশ্চিম মেদিনীপুরের কাছে এটা একটা গর্বের দিন। এরা প্রত্যেকেই
প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা। রাজ্যজুড়ে নিয়োগ নিয়ে যে কটুক্তি
চলছিল, এই শীর্ষ স্থানাধিকারীরা তার সঠিক জবাব দিলেন। প্রমাণ
করলেন নিরপেক্ষ স্বচ্ছ নিয়োগ পদ্ধতি হয় এই রাজ্য সরকারের।”