Election : স্কুটিতে করেই গুরুকে পেছনে বসিয়ে জঙ্গলমহলে শেষবেলার ভোটার দর্শন তৃণমূল প্রার্থীর

শালবনী: একসময়ের মাওবাদী উপদ্রুত এলাকা, জঙ্গলমহলের সেই অংশেই স্কুটির পেছনে পলিটিক্যাল গুরুকে বসিয়ে জঙ্গলমহল চোখে বেড়ালেন মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা। শেষ রবিবারের প্রচার জমিয়ে তুললেন কর্ণগড় এলাকাতে। সুজয় হাজরা বললেন-” এই মাঠ আগে থেকেই পরিচিত। সকলের সঙ্গে শুধু দেখা করা ছাড়া, প্রচার কিছুই নয়। জয় সময়ের অপেক্ষা।”
মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা কয়েকদিন ধরেই লাগাতার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের জঙ্গলমহল এলাকা গুলিতে। এক সময় এই এলাকার ভোটারদের একটা বড় অংশ বিজেপির দিকে ফিরে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২১ সালের পর থেকে বিজেপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল, তৃণমূলের জনসম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টাতে তা পুনরুদ্ধার হয়েছে অনেকটাই। সেই এলাকাতেই পুনরায় উপনির্বাচনে জোর দিয়েছে তৃণমূল। যেখানে উপনির্বাচনের প্রচার পর্বেই শতাধিক বিজেপির সক্রিয় যুবক কর্মী তৃণমূল প্রার্থীর হাত থেকে দলের পতাকা নিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেছেন শনিবার বিকেলে। গড়মাল এলাকাতে বিজেপি কর্মীদের তৃণমূলে এই যোগদান বিজেপির ক্ষেত্রে যেমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হলো, তেমনি তৃণমূলের ক্ষেত্রে ইতিবাচক মাঠ তৈরি হল জঙ্গলমহলের ভোট কুড়ানোর ক্ষেত্রে। শনিবার সেখানেই প্রচার করেছিলেন বেশিরভাগটাই তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা। রবিবার সকাল থেকে শালবনির কর্ণগড়ে নজর দিয়েছিলেন।সঙ্গে আলাদা করে প্রচার করেছেন তৃণমূল সাংসদ জুন মালিয়াও ৷ শালবনীর একটি অংশে তাঁর হাত ধরেই বেশ কিছু বিজেপি কর্মী রবিবার বিকেলে যোগ দিয়েছেন টিএমসিতে ৷
কর্ণগড় একটি মন্দিরে পূজো দেওয়ার পর পাশাপাশি গ্রামে প্রবেশ করেন নিজের রাজনৈতিক গুরু দিনেন রায়কে সঙ্গে নিয়ে । বিশাল দল ভারি করে না হলেও, নিজের পুরনো স্কুটি টাতেই পুরনো ছন্দে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন গ্রামের পর গ্রাম বাড়িতে বাড়িতে ঘুরলেন তিনি। আগে থেকেই দলের কর্মীরা সেখানে প্রস্তুত ছিল। সুজয় হাজরা প্রতিটি ভোটারের কাছে গিয়ে রাজ্য সরকারের করে আসা উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে, মেদিনীপুর সদরের জঙ্গলমহলের চাঁদড়া, এনায়েতপুর, মনিদহ কঙ্কাবতী এলাকায় লাগাতার প্রচার চালিয়ে যান। তারপরে শালবনির গড়মাল ও সংলগ্ন এলাকায় প্রচার করেছেন। রবিবার কর্ণগড় সংলগ্ন এলাকা চষে বেড়ালেন। একসময়ের মাওবাদী উপদ্রুত এলাকায়, কোনরকম ভ্রুক্ষেপ না করেই দিনভর স্কুটি করেই ঘুরে প্রচার করলেন অন্যান্য দিনের মতো। বিরোধীরা ওই সমস্ত এলাকাতেই কয়েকদিন আগে আর জি কর ইসু মনে করিয়ে প্রচার করেছিল। সুজয় হাজরা পাল্টা এদিন বলেন-” আসলে বিরোধীদের কাছে তেমন কোন অস্ত্র নেই। নিজেদের ইতিবাচক করা কোনো কাজের হদিস নেই। তাই মানুষকে নেতিবাচক কথা শুনিয়ে ভোট নেওয়ার চেষ্টা করছে। মানুষ সবটাই বোঝেন। ভোটের ফলাফলের পর বুঝতে পেরে যাবেন কি হয়েছে।”
মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে এবার এই বিধানসভা তে মোট ভোটার ২ লক্ষ ৯১ হাজার। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৫৪২ জন। মহিলা ভোটার রয়েছে ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ১০০ জন। ফলে পুরুষদের থেকে মহিলা ভোটার বেশি হওয়াতে বিরোধীদের কাছে আশঙ্কার কারণ একটা রয়েছে। লক্ষী ভান্ডার এর প্রভাব মহিলাদের মনে বেশি পড়ে। যে কারণে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে বলে বিজেপির প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল মনে করেছিলেন। সেই লক্ষী ভান্ডারের প্রভাবের আধিক্য থাকবে মহিলা ভোটার বেশি থাকায়। তাহলে সে দিক থেকে তৃণমূলের জয় একেবারেই নিশ্চিত বলে মনে করছে শাসকদলের নেতৃত্বরা।