চন্দ্রকোনা রোড: নবম শ্রেণীতে পড়ার সময়ে বিদ্যালয়ের একটি পরীক্ষাতে টুকলি করায় শিক্ষকেরা বকেছিলেন ৷ বলেছিলেন বাড়িতে জানিয়ে দেবে৷ তারপর বিদ্যালয় থেকেই বাড়িতে আর ফেরেনি সেই ছাত্র ৷ অনেক খোঁজা থেকে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে ৷ বাবা-মা পরিজনেরা খুঁজে হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন ৬ বছর ধরে ৷ তারপরেই আশার আলো দেখালো আধার কার্ড ৷ ১৬ বছর বয়সে স্কুল থেকেই নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল যে ছাত্র, প্রায় ৬ বছর পর আঁধার কার্ডের নম্বর ধরে সেই নিখোঁজ ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ফাঁড়ির পুলিশ।
২০১৯ এর ৬ আগষ্ট স্কুলে গিয়েছিল সায়ন ঘোষ। তখন তার বয়স ১৬ বছর। বিদ্যালয়ে সেদিন পরীক্ষার সময়ে শিক্ষকেরা বকে ছিলেন ৷ বলেছিলেন- বাড়িতে জানিয়ে দেবে ৷ তারপর স্কুল থেকে আর বাড়ি ফেরেনি সায়ন। সায়নের আসল বাড়ি পুরুলিয়া জেলার বাঘমুন্ডি থানার তুনতুরি গ্রামে। কিন্তু সে থাকত মামার বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার ডাবচার পাশে বিলা গ্রামে।
সায়নের মা- নিতা দেবী জানান, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরেনি ২০১৯ সালের আগষ্ট মাস থেকে৷ প্রায় ৬ বছর নিখোঁজ থাকার পর সেই আগষ্ট মাসেই ছেলেকে উদ্ধার করে এনে দিলেন চন্দ্রকোনা ফাঁড়ির ইনচার্জ (Rajesh Parua) রাজেশ পারুয়া। ৬ বছর আগেই নিখোঁজ এর অভিযোগ জানানো হয়েছিল থানায়। কিন্তু ছেলে বাড়ি যেমন ফিরে আসেনি, তেমন তাকে উদ্ধার করা যায়নি। বাড়িতে ওর একটি আধার কার্ড ছিল। যার নম্বর ধরে অনলাইনে সার্চ করার পর জানতে পারা যায় ওই নম্বরে উড়িষ্যা রাজ্যের ঠিকানা লেখা রয়েছে।তার ছবিটা মিলছিল অনেকটা৷ সেই নথি নিয়ে চলতি বছরের গত ১৩ আগষ্ট থানায় গিয়ে জানালে ১৮ দিনের মধ্যেই আমার ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬ বছর ধরে নিখোঁজ থাকা সায়নের খোঁজ মিলেছে আঁধার কার্ডের সূত্র ধরে। উড়িষ্যায় পাঠানো হয়েছিল টিম। তারা তাকে উদ্ধার করে এনেছে। শনিবার গড়বেতা আদালতে তোলা হয়, সেখান থেকেই বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানতে পেরেছে, সায়ন বাড়ি থেকে পালিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরেছে। মন্দিরে রাত কাটানো থেকে শুরু করে খাবারও খেয়েছে। পরে উড়িষ্যায় একটি বাড়িতে আশ্রয় হয় তার। সেখানে নিজেকে স্বাবলম্বী হওয়ার কাজ শুরু করে। নিতা দেবী জানান, ছেলে জানিয়েছে তার মায়ের কাছে থাকবে। তবে এতদিন কেন বাড়ি ফিরল না বা ফেরার চেষ্টা করলো না ? রাস্তা কি হারিয়ে ফেলেছিল! সেসব প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা মিতার কাছে। তিনি বলেন, আদালত থেকে ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যাবো। ওর বাবা মানিক ঘোষ পেশায় চাষী ৷