![]() |
ঘাটালে বাড়ি থেকে উদ্ধার হচ্ছে সাপ |
মেদিনীপুর:
বন্যার জল কমতে শুরু করেছে জেলা জুড়ে। পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তার
মধ্যেই বিপদও বাড়ছে প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য। জল কমার সঙ্গে সঙ্গে উঁচু
জায়গায় আশ্রয় নেওয়া বিষধর সাপের আক্রমণ শুরু হয়েছে। গত ৮ দিনে পশ্চিম
মেদিনীপুর জেলাতে সাপের কামড় হয়েছে ১৫২ জনকে। তবে সকলেই সুস্থ ও চিকিৎসাধীন বলে
জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। জেলা জুড়ে ২০০ বেশি বিষধর সাপকে ধরে
অন্যত্র ছাড়া হয়েছে। বন্যার্তদের বাঁচাতে ব্লিচিং ছড়ানোতে জোর দেওয়া হয়েছে।
বন্যা কবলিত
এলাকার সমস্যা গুলির মধ্যে সবথেকে বড় সমস্যা সাপের কামড়। ঘাটালে যেহেতু সবথেকে
বড় বন্যা হয়েছে, সেখানে সবথেকে বেশি
ডুবে যাওয়া স্থান বিচার করে সাপের উপদ্রব বেশি হওয়ার আশঙ্কা আগেই করেছিল
প্রশাসন। সেই আশঙ্কা মত সত্যিই সাপের উপদ্রব এবার ঘাটাল মহকুমাতে ছিল সবথেকে বেশি।
বনদপ্তর এর কাছে তাই শুরুতেই জেলাশাসক সাপ উদ্ধারকারী লোকজনকে প্রস্তুত রাখার
নির্দেশ দিয়েছিলেন। ঘাটাল মহকুমা তে কয়েকজন লাগাতার সাপ উদ্ধার করেছেন দিন রাত
জেগে। যার মধ্যে অন্যতম মলয় ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। মলয় ঘোষ জানিয়েছেন-” গত
৮ দিনে ঘাটাল এলাকাতে তিনি ১০৩ টি বিভিন্ন রকম বিষধর সাপকে উদ্ধার করেছেন। এরমধ্যে
এশিয়া মহাদেশের সবথেকে বিষধর যে সাপ সেই কালাচ সাপ উদ্ধার করেছেন ৯ টি। ঘাটাল
মহকুমার সবথেকে বেশি এই সাপের উদ্ধার হয়েছে ঘাটাল পৌর এলাকা ও খড়ার পৌর এলাকাতে।
সবথেকে একদিনে বেশি সাপ উদ্ধার হয়েছে বড় বন্যার দিন। সেদিন একদিনে ১৯ টি সাপ
উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘাটালেই সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়েছিলেন ১৯ জন। তাদের সকলেই
বেশিরভাগ সুস্থ রয়েছেন। বন্যা কমলে এই সাপের উপদ্রব বেশি বাড়বে। কারণ উঁচু
জায়গাতে আশ্রয় নেওয়া সাপেরা এবার খাবারের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে
পড়বে।”
জেলা পুলিশ
সুপার ধৃতিমান সরকার জানিয়েছেন-” জেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথ উদ্যোগে যে
উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছিল তাতে মোট ১৫২ জন জেলা জুড়ে সাপের কামড় খাওয়া ব্যক্তিকে
উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে। সকলেই সুস্থ্য ও চিকিৎসাধীন। প্রসূতি উদ্ধার করা
হয়েছিল বন্যা কবলিত এলাকা থেকে ৪০৪ জনকে। যাদের মধ্যে ২৭০ জনের সন্তান হয়েছে
ইতিমধ্যে।”
ঘাটালের
মহাকুমা শাসক জানিয়েছেন-” জলের স্তর নেমে গিয়েছে। তাই সর্বত্র এখন নৌকো বা
বোটের প্রয়োজন হচ্ছে না। তবে উদ্ধারকারী টিম সবসময় প্রস্তুত থাকছে। কমিউনিটি
কিচেন ১১৪ টা চলছে। সাপের কামড়ে অসুস্থ যারা হয়েছিলেন তারা সকলেই প্রায় সুস্থ
রয়েছেন চিকিৎসাধীন হয়ে। ঘাটালে কমিউনিটি কিচেন চলছে ১১৪ টা।”
জেলাশাসক
খুরশেদ আলী কাদেরী জানিয়েছেন-” প্রচুর পরিমাণে হ্যালোজেন ট্যাবলেট, ব্লিচিং ও অন্যান্য জিনিসপত্র পাঠানো হয়েছে। বনদপ্তরের
কাছে অনুরোধ করা হয়েছে সাপ উদ্ধারকারী ব্যক্তিদের তৎপর রাখার জন্য। মানুষদের জন্য
পানীয় জল কমিউনিটি কিচেন পর্যাপ্ত রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ পরিষেবা সর্বত্রই ১০০
শতাংশ স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে।”