Ghatal : গত তিন দিন ধরে অতি বর্ষণের কারণে শিলাবতী নদীতে জল স্তর বৃদ্ধি পেয়ে গিয়েছে। বুধবার বিকেল থেকেই সেই জলস্তর বেড়ে জল বিভিন্ন গ্রাম্য এলাকায় প্রবেশ করতে শুরু করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত গড়বেতা ও ঘাটালের বহু গ্রামে জল ঢুকে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরী হয় ৷ বিকেলের দিকে চন্দ্রকোনা টাউনের ঘোষখিরা এলাকাতে শিলাবতী নদীতে একটি স্থানে বাঁধ ভেঙে যায় ৷ তত্পরতা বাড়াতে হয়েছে প্রশাসনকে ৷
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা ২ ব্লকের চারটি অঞ্চল, গড়বেতা এক ব্লকের ১১ টি অঞ্চল প্লাবিত পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। শিলাবতী নদীর জল ওই এলাকার সমস্ত চাষের জমি ডুবিয়ে দিয়েছে। গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করে দিয়েছে। বিকেলের পরে বেশ কিছু গ্রামে জল প্রবেশ করে বন্যার পরিস্থিতি তৈরী করেছে ৷ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহকুমা শাসক মধুমিতা মুখার্জী সেখানে হাজির হয়েছিলেন ৷ অতিরিক্ত জেলা শাসক ও মহকুমা শাসক সেখানে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে পরিস্থিতি হিসেব করেছেন৷ অনেককেই উদ্ধার করে করে বিভিন্ন আশ্রয়ে রেখে খাবারের ব্যাবস্থা করেছেন ৷
অন্যদিকে জেলার ঘাটাল এলাকায় শিলাবতী নদীর জল বেড়ে ডুবতে শুরু করেছে চন্দ্রকোনা দুই ব্লকের বহু এলাকা। ওই এলাকাতে একাধিক কাঠের ও বাঁশের সাঁকো জলের তলায় চলে গিয়েছে। বহু স্থানে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। চন্দ্রকোনার চৈতন্যপুর এলাকায় শিলাবতী নদীর ওপর দিয়ে যাতায়াতকারী গুরুত্বপূর্ণ কাঠের সাঁকো সহ কেশাডাল, নিত্যানন্দপুর, ঘোষকিরা সহ বিভিন্ন এলাকাতে একই ভাবে নদী পথে যোগাযোগ ছিন্ন হতে শুরু হয়েছে। বিকেলে ঘোষখিরা এলাকাতে একটি শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে চাষের জমি ডুবতে শুরু করে ৷
নদী বাঁধ মেরামতের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহু জায়গায় জেসিবি দিয়ে কাজ হচ্ছিল। রাতারাতির জল বেড়ে যাওয়ার কারণে চন্দ্রকোনার ধরমপোতা এলাকায় সেই জেসিবি জলের তলায় ডুবে গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিনদিন ধরে বাঁকুড়ায় অতি বর্ষণের কারণে সেই জলস্তর শিলাবতী নদীতে পড়েছে। তাছাড়াও মুকুটমণিপুর ও বিভিন্ন জলাধার থেকে যে জল ছাড়া হয়েছে তার কারণেও শিলাবতী নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ঘাটালে ঝুমি নদীতেও জল বাড়তে শুরু করেছে।
এই প্রসঙ্গে ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন-“ শীলাবতির জল বেড়ে গড়বেতা ও ঘাটালের বহু স্থানে জল ঢুকেছে ৷ কিন্তু বন্যা পরিস্থিতি এখনও বলবো না ৷ তবে বহু খানাখন্দ গর্তে জল ঢুকেছে ৷ সাধারন মানুষকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করবো ৷ সাপের কামড় হলে দ্রুত সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে বলবো ৷ সকলেই সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামো রয়েছে সেখানে হাজির হবেন অসুবিধা হলে ৷”
তবে এদিন গড়বেতা এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে বহু গ্রামবাসীকে প্লাবনের হাত থেকে রক্ষা করতে উদ্ধার করে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে নানা আশ্রয় কেন্দ্রে ৷
