কেশপুর: ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন সেরে সড়ক পথে মেদিনীপুরের উদ্দশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ৷ বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কেশপুরের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময়ে ভীড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে যান ৷ দেব ও শিউলি সাহাকে সাথে নিয়ে গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে বেশ ৬ মিনিট বক্তব্য রাখেন ৷ কেশপুরের মানুষের উদ্দেশ্যে নানা বক্তব্য রাখেন ৷ সম্প্রতি কেশপুরে বহু পরিযায়ী শ্রমীক ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে বাধা পেয়ে ফিরে এসেছেন ৷ তাদের উদ্দেশ্যেও বার্তা দিয়েছেন তিনি ৷
বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন- “আরামবাগ থেকে শুরু করে ঘাটাল হয়ে এখানে গাড়িতে করে আমরা হাজির হয়েছি। প্রায় ১০ ঘন্টা ধরে গাড়িতে করে ঘুরছি। আপনারাও অপেক্ষা করছেন। আপনাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা, প্রণাম সালাম জানাই। এই কেশপুরের মাটিতে আমি অনেকবার এসেছি। এখানে জামশেদ ভবনের নামে অনেক অত্যাচার হত। সেই অত্যাচারীরাই এখন বিজেপি হয়েছে। এই অত্যাচারের প্রতিবাদে বিভিন্ন ডেড বডি নিয়ে আমি প্রতিবাদে হাজির হয়েছিলাম। এর প্রতিবাদেই বলেছিলাম সিপিএমের শেষ পুর এই কেশপুর থেকে হবে।”
কেশপুরের মানুষের ভিড়ে ফের ভোটার তালিকা প্রসঙ্গে বলেন-“এই ভোটার তালিকার নামে এনআরসি করার প্ল্যান চলছে। বিজেপিকে আমি বিশ্বাস করি না। যাদের এপিক কার্ড রয়েছে, আধার কার্ড রয়েছে , রেশন কার্ড রয়েছে, তারা দয়া করে আবার ভোটার তালিকায় নাম রাখবেন। ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও লক্ষ্য রাখবেন। কারণ ওরা পরিকল্পনা করছে যাতে নামগুলো বাদ দেওয়া যায়। আপনারা জেনে রাখুন আপনাদের গায়ে হাত পড়লে আমরা কেউ ছেড়ে কথা বলব না। এটা অস্তিত্বের লড়াই। এখানে হকার থেকে দোকানদার সমস্ত লোকজনকে নিয়ে নিজেদের নাম ভোটার তালিকায় তুলবেন।”
সেই সাথে কেশপুরের পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন “যারা বাইরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন, অত্যাচারিত হয়ে ফিরে আসছেন। তাদের জন্য আমাদের একটা পোর্টাল আছে। তারা সেখানে জানান। উল্লেখ করবেন আমরা ফিরে এসেছি আমাদের সাহায্য করা হোক। আমরা সেটা দেখার ওর এই সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা ব্যবস্থা করে দেব। বাড়ি না থাকলেও কমিউনিটি কিচেন করে দেবো। তারা কর্মশ্রীর কাজেও অংশগ্রহণ করবে। যেটা ১০০ দিনের কাজ বলা হতো। হাতেও কিছু সাহায্য তুলে দেবো। অন্য রাজ্যে গিয়ে অত্যাচারিত হওয়ার দরকার নেই। মনে রাখবেন আমরা মাথা নত করতে শিখিনি। বাংলায় ফিরে আসুন, আমরা একখানা রুটি পেলে আধখানা আপনাদের দেব। মনে রাখবেন ভোটার তালিকায় নাম অবশ্যই তুলবেন। মনোনয়নের দিন পর্যন্ত ওরা কিন্তু নাম কাটে। গুজরাটে বসে বসেই প্ল্যানগুলো করছে। এই প্ল্যান ঘ্যাচাং ফু করে দিতে হবে। মানুষ যারা জেনুইন ভোটার তাদের প্রত্যেককে ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।”
এরপরে সড়ক পথে সন্ধা সাড়া ৬ টা নাগাদ মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী ৷ বুধবার বেলা বারোটা নাগাদ ঝাড়গ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন ৷
