Potato : আলু পাচার হচ্ছে নাকি? রাতের বেলা রাজ্যের সীমান্তের নাকা পয়েন্টে অতর্কিত খোদ কৃষি বিপণন মন্ত্রী!

দাঁতন: আলুর বাজারদর নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার ভিন রাজ্যে আলু রপ্তানি আপাতত বন্ধ করেছে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সীমান্তগুলিতে পুলিশের নাকা পয়েন্ট বসিয়ে সেই আলু রপ্তানি আটকানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাজ্য থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রতিটি লরিকে পরীক্ষা করা হচ্ছে পুলিশের পক্ষ থেকে। আলু ভর্তি লরি হলেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের ভেতরে। গত ৫ দিন ধরেই এই অভিযান শুরু হয়েছে রাজ্যের অন্যান্য সীমান্ত গুলির সাথে পশ্চিম মেদিনীপুরেও।এই জেলাতে ৬ টি নাকা পয়েন্ট রয়েছে ৷ রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুরে সীমান্তে থাকা এমন নাকা পয়েন্টে মঙ্গলবার রাতে অতর্কিত হাজির হলেন খোদ রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত্রি সাড়ে নটা পর্যন্ত সীমান্তের বিভিন্ন নাকা পয়েন্টগুলি ঘুরে নিজে গাড়ি পরীক্ষা করেছেন পুলিশের সাথে।



পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে চলতি বছরে মাঠ থেকে আলু তোলার পর ২ কোটি ৯০ লক্ষ প্যাকেট আলু ৯২ টি হিমঘরে রাখা হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে। বিভিন্ন সময় সেই আলু বের করে বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করা হয়েছে। এখনো হিমঘর গুলিতে মজুদ রয়েছে ৩৩ লক্ষ প্যাকেট আলু । তা সত্ত্বেও রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কোথাও আবার ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে আলুর।


এই পরিস্থিতিতে আলুর বাজারদর নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলুর দাম কমাতে ভিন রাজ্যে আলু রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছেন। আলু রপ্তানি আটকাতে রাজ্যের সমস্ত সীমান্ত এলাকায় পুলিশের নাকা পয়েন্ট রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন ৬ টি নাকা পয়েন্ট রয়েছে। তারই তিনটি নাকা পয়েন্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পরীক্ষা করলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। জাতীয় সড়ক ধরে উড়িষ্যার উদ্দেশ্যে আসা পরপর বিভিন্ন লরি গুলিকে পরীক্ষা করলেন পুলিশকে নিয়ে নিজে থেকেই। বিভিন্ন গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করেছেন নিজেই। প্রথমে বেলদা এলাকার নাকা পয়েন্ট, পরে দাঁতনের বামনপুকুর এলাকার নাকা পয়েন্ট, শেষে সোনাকোনিয়া তথা বাংলা ওড়িশা সীমান্তের নাকা পয়েন্টে পরীক্ষা করেছেন।

দাঁতন সীমান্তে গাড়ির কাগজ পরীক্ষা করছেন মন্ত্রী

এদিন বেচারাম মান্না বলেন-” রাজ্যে এই মুহূর্তে যে আলু মজুদ রয়েছে তা হল ৬ লক্ষ ২ হাজার মেট্রিক টন। অন্যদিকে দানা ঘূর্ণিঝড়ের কারনে রাজ্যে ১৫ দিন আলু চাষ পিছিয়ে গিয়েছে। তাই নতুন আলু পেতে জানুয়ারি মাসের ১০ থেকে ১৫ তারিখ পৌঁছে যাবে। আমাদের রাজ্যে প্রতিদিন আলু খরচ হয় ১৮ হাজার মেট্রিক টন। ডিসেম্বর মাসে যেহেতু কাঁচা সবজি থাকে তাই আলুর খরচ টা একটু কমে ১৫ হাজার মেট্রিক টন প্রায় হয়ে থাকে। তাই রাজ্যে থাকা পুরনো আলু আগামী ৪০ থেকে ৪৫ দিন চালাতে হবে। সেই কারণে রাজ্যের প্রয়োজনে এখানকার মজুদ আলু রাজ্যের বাইরে কোথাও এখন পাঠানো যাবে না। রাজ্যের মানুষের চাহিদা শেষ করে উদ্বৃত্ত থাকলে তখনই বাইরে পাঠানোর অনুমতি দেবো আমরা। এই মুহূর্তে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী লুকিয়ে আলু অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্ট করছেন। তাই বিভিন্ন নাকা পয়েন্টে পরীক্ষা করা শুরু হয়েছে। এই চেকিং পয়েন্টগুলিতে যারা কাজ করছেন তাদের উৎসাহিত করতে আমরা বিভিন্ন পয়েন্টগুলিতে ঘুরছি।”



এদের মন্ত্রী আরো বলেন-” ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজ্যকে অন্ধকারে রেখেই মালদার মাইতিপুর, দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত, কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধা দিয়ে প্রচুর আলু পাস করিয়েছে। এটা মনে হয়েছে রাজ্যকে সংকটে ফেলে একটা অপদস্ত করার চক্রান্ত। তাই আজকে আমরা নিজেরাও রাস্তায় নেমেছি। আমাদের লক্ষ্য-বাংলার মানুষের স্বার্থটা আগে দেখতে হবে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত লাভের জন্য এই আলু বাইরে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। “

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page