By-election : মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা, প্রার্থী “নিশ্চিত” ধরে নিয়েই মানসিক প্রস্তুতি তৃণমূল কর্মীদের

মেদিনীপুর: জুন মালিয়ার ছেড়ে যাওয়া বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিল নির্বাচন কমিশন। দেশের ১৫ টি রাজ্যের ৪৮ টি বিধানসভা উপনির্বাচন, ও দুটি লোকসভা কেন্দ্রে এই উপনির্বাচন হবে। মেদিনীপুরে এই উপনির্বাচন হতে চলেছে ১৩ই নভেম্বর। ভোট গণনা ২৩ নভেম্বর। অন্যদলের তেমন সাড়া না থাকলেও শাসক দলের মধ্যে প্রার্থী কে হবে তা এক প্রকার নিশ্চিত ধরে নিয়েই কর্মীরা মানসিক প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন মঙ্গলবার থেকেই।
গত দু সপ্তাহ আগে পর্যন্ত মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের সম্ভাব্য বিধায়ক পদপ্রার্থী কে হতে পারে তা নিয়ে জল্পনা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেটা একেবারে নিশ্চিত হয়েই গিয়েছেন অনেকেই। বিশেষ করে দুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে বিজয়ার প্রণাম পর্ব নিয়ে অনেকেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থী কে হতে পারে। সোমবার মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা সহ ৪০ জন তৃণমূলের নেতৃত্ব এই বিজয়ার শুভেচ্ছা প্রণাম জানাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে নেত্রীর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণের বৈঠক হয়েছে উপনির্বাচন নিয়ে। সেখানেই সুজ হাজরার হাতে কর্মীদের জন্য মিষ্টি দেন নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়৷ এই পরিস্থিতিতে দলের একটা অংশ মনে করছেন-সম্ভাব্য এই উপনির্বাচনের তৃণমূলের প্রার্থী জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা। যদিও সুজয় হাজরা এই প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করেননি। তার সাফ মন্তব্য-“এ বিষয়ে আমার জানা নেই। নেত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন, এবং দল বা নেত্রী তারাই জানেন এই প্রসঙ্গে।”
লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে জুন মালিয়ার নাম ঘোষণা হওয়ার পর সুজয় হাজরা বনাম জুন মালিয়া অনুগামীদের মধ্যে একটা মতপার্থক্য সমস্যা জটিলতা তৈরি করেছিল। তখনই দলের পক্ষ থেকে শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ ছিল -“সুজয় হাজরা যেন সমস্তভাবে জুন মালিয়ার এই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করে।৷” অবাধ্য সৈনিকের মতো সুজয় হাজরা জুন মালিয়ার জন্য আপ্রাণ লড়াই দিয়েছিলেন। বিজেপিকে পর্যদস্ত করে জয়ী হয়েছেন জুন মালিয়া। ফলে অনেকেই মনে করছেন-দলের সেই নির্দেশ মানার সম্মানিক প্রাপ্য সুজয় হাজরারই। তাই দল নিশ্চিত ভাবে প্রার্থী করতে চলেছেন সুজয় হাজরাকেই।
তবে প্রার্থী কে হবে তা প্রকাশ্যে ঘোষণা না হলেও দলের মধ্যে মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে গত কয়েক মাস ধরে। বিরোধীদের মধ্য থেকে বিজেপি সিপিআইএম কংগ্রেস কাউকেই সেভাবে প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়নি। যেভাবে তৃণমূলকে প্রস্তুতি নিতে দেখা গিয়েছিল। বন্যা প্লাবিত পরিস্থিতিতেও মানুষের পাশে দাড়িয়ে সেই সহানুভূতি অর্জনের কাজটা করতেও দেখা গিয়েছে শাসকদলের নেতৃত্বদের৷ সেখানেও সুজয় হাজরাকে যেভাবে সামনে থেকে বিলি বন্টন করতে দেখা গিয়েছে সেভাবে দলের অন্যদের দেখা যায় নি।
কংগ্রেস অবশ্য মঙ্গলবারই নির্বাচন কমিশনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই নিজেদের এজেন্ডা ও কর্মসূচি ঘোষণা করে দিয়েছে। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সমীর রায় জানিয়েছেন-” এই মুহূর্তে তৃণমূলের স্থান একেবারে মানুষের মনে বিরূপ। বিজেপির প্রতি মানুষের মোহ নেই। মানুষ তৃতীয় শক্তি হিসেবে যাদের চাইছে তারা সিপিএমও হতে পারে না। ফলে তৃতীয় শক্তি হিসেবে মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস ভালো স্থান পাবে। আমাদের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সর্বত্র কর্মী ও লোকবল না থাকলেও মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে রয়েছে। আমরা এই বিষয়ে অনেকটাই আশাবাদী এই উপনির্বাচনে।”