Medinipur Live :রাজমিস্ত্রির কাজ করতে এসে বাড়ি মালিকের মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন, দুই যুবককে ফাঁসির সাজা ঘোষণা মেদিনীপুর আদালতে,সহযোগী মহিলার যাবজ্জীবন কারাদন্ড
মেদিনীপুর: ২০২১ সালের ৩ই মে এর
ঘটনা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা থানার জামানা এলাকার স্বপন জানার পরিবারে এই
দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। তার বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে এসেছিল দুই যুবক। সঙ্গে
সহযোগিতায় ছিল এক মহিলা। বাড়ি মালিক স্বামী-স্ত্রী দুপুরে বাড়ির ভেতরে যখন
ছিলেন,
তখন তাদের কলেজ পড়ুয়া ছোট মেয়েকে একা পেয়ে তাদেরই পুরনো মাটির
বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করে রাজমিস্ত্রির কর্মী দুই যুবক। ঘটনায়
সহযোগিতায় ছিলেন রাজমিস্ত্রিদের সহযোগী মহিলা তপতী পাত্র। ঘটনার পরেই তাদের
গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। মঙ্গলবার মেদিনীপুর আদালত দুই যুবককে যাবজ্জীবন ও ফাঁসির
সাজা ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে সহযোগী মহিলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডেদণ্ডিত করেন।
জামনা গ্রামের বাসিন্দা স্বপন
জানার পুরনো মাটির বাড়ি ভেঙে সেখান থেকে একটু দূরেই নতুন করে পাকার বাড়ি তৈরি
হচ্ছিল। কয়েকদিন ধরেই সেই বাড়ি নির্মাণের রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন পাশের এলাকার
দুই যুবক বিকাশ মুর্মু, ছোটু মুন্ডা। তাদের সহযোগিতায় কাজ করতেন
তাদেরই এলাকার এক মহিলা তপতী পাত্র।
২০২১ সালের ৩ মে দুপুরে স্বপন
জানাবাবু ও তার স্ত্রী যখন বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, তখন তাদের কলেজ পড়ুয়া ছোট মেয়ে বাসন ধোয়ার জন্য বাড়ির বাইরে পুকুর
ঘাটে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে তার বাবা-মা তখন ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। কিছুক্ষণ পর স্বপন
বাবুর স্ত্রী যখন মেয়েকে খোঁজ করেন আর খুঁজে পাননি । রাজমিস্ত্রির কর্মীদের
জিজ্ঞাসা করার পর তপতী পাত্র নামে ওই মহিলা বলেন অন্য একটি ছেলের সঙ্গে বাইকে
করেছে কোথাও গিয়েছে। বিভিন্নভাবে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করেন ওই মহিলা। অনেক
খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে শেষে নিজের পুরনো মাটির বাড়ি খুঁজতে গিয়ে দেখতে পান
পুরনো একটি খাটের তলায় রক্তাক্ত, নিথর, নগ্ন দেহ পড়ে রয়েছে তাদের মেয়ের। তারপরেই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হলে ওই
রাজমিস্ত্রির তিনজন কর্মী পালানোর চেষ্টা করে। তাদের আটক করেন স্থানীয়রা। এলাকায়
উত্তেজনার শুনে ছুটে আসে পিংলা থানার পুলিশ এবং তাদের গ্রেপ্তার করে।
সেই ঘটনার মামলা চলে মেদিনীপুর
আদালতে। মঙ্গলবার সেই বিচারের রায় ঘোষণা করেন মেদিনীপুর আদালতের বিচারক। মৃত
ছাত্রের পরিবারের পক্ষে থাকা আইনজীবী দেবাশীষ দাস বলেন-” ২৬ জন সাক্ষীসহ এই
মামলার যাবতীয় প্রমাণ দেখার পর বিচারক দুই যুবকের যাবজ্জীবন সাজা, আর্থিক জরিমানা সহ ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছেন। সহযোগী মহিলারও যাবজ্জীবন
কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে।”
আদালত চত্বরে উপস্থিত মৃতা
ছাত্রের মা বলেন-” মেয়েকে আমি আর কোনদিন ফিরে পাবোনা। কিন্তু এদের শাস্তি
আরো কঠোর হলে আরো একটু শান্তি পেতাম।”