মেদিনীপুর: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ঢালাও উদ্বোধন ও শিলন্যাস হল পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্যমন্ত্রীর
প্রশাসনিক সভাতে ৷ ৪৫ টি প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি ৯৬ টি প্রকল্পের শিলান্যাস
করলেন এদিন মেদিনীপুর কলেজ ময়দানের প্রশাসনিক সভায় দাঁড়িয়ে। যার বাজেট ৬৯৬ কোটি
টাকা। জানিয়ে দিলেন উন্নয়নই তার একমাত্র লক্ষ্য।তবে প্রতিটি বক্তব্যের মাঝেই কেন্দ্রীয়
বঞ্চানার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি ৷
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রকে
দুষে তিনি বলেন– “ঘাটাল মাস্টার
প্ল্যানের বিষয়টা আমরা অলরেডি প্রসেস শুরু করেছি, এটা হয়ে
গেলে ১৭ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এখনো পর্যন্ত ক্লিয়ারেন্স
দিচ্ছেন না। আমাদের মন্ত্রীরা গিয়েও তিন চারবার সাক্ষাৎ করে এসেছে দিল্লিতে। আমরা
নিজেদের টাকা দিয়ে কিছু কাজ করেছি। বেশ কিছু খাল ও বাঁধ সংস্কার করেছি। সাড়ে
তিনশো কিলমিটার দৈর্ঘ্যের বাঁধ সংরক্ষণ
হচ্ছে। ২৭০০ কোটি টাকায় নতুন একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যাতে হাওড়া হুগলি
বর্ধমান মেদিনীপুর জেলায় বন্যা প্লাবিত অঞ্চলগুলোতে সুইস গেট তৈরি সহ বিভিন্ন কাজ
করা যায়”৷
কেন্দ্রের অনলাইন করন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী
মেদিনীপুরে বলেন– “আমরা ১১৫০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করছি।
এজন্য ৩০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অনেক গ্রামীণ রাস্তা খারাপ হয়ে গেছে।
কেন্দ্রীয় সরকার করছে না। বাংলার বাড়ি, প্রধানমন্ত্রী আবাস
যোজনা ১০০ দিনের কাজ, সবেতেই টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র।
আমাদের টাকা জিএসটিতে তুলে নিয়ে যায় অথচ এই টাকা দেয় না। বলেছে ১০০ দিনের কাজ
তারাই করবে যারা আধারের সঙ্গে লিঙ্ক থাকবে। গ্রামের লোকেরা এই আধার লিংক সবাই করবে
কিভাবে। জীবনটাকেই অনলাইন করে দিচ্ছেন তো! সবাই এটা করতে পারেনা, যাদের ক্ষমতা আছে তারা করতে পারে। বহু গ্রামে ব্যাংক পোস্ট অফিস কিছুই নেই
। তাহলে অনলাইন করবে কোথা থেকে?”
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আদিবাসীদের
দাবিকে মান্যতা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী,বল ঠেললেন কেন্দ্রের দিকে৷
তিনি বলেন– “সরকারি কর্মচারী শিক্ষকদের ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানো
হয়েছে। মার্চ মাস থেকে পাবেন। আমি মনে করি কুড়মীদের জন্য কুড়মী একাডেমি আছে।
আদিবাসীদের জন্য সাঁওতালি একাডেমী আছে। আপনাদের সরি এবং সারনা ধর্ম নিয়ে আমরা
ইতিমধ্যেই চিঠি লিখেছি কেন্দ্রীয় সরকারকে। আমরা চাই এটা হোক। এতে মানুষের
সেন্টিমেন্ট রয়েছে। আমরা আপনাদের এই বিষয়টা সমর্থন করি। কুড়মি মাহাতোরাও একটা
অনুরোধ করেছিল তাদের বিষয়টাও কেন্দ্র সরকারকে চিঠি লিখে জানিয়েছি। প্রতিটা
মানুষের জাতিগত সমস্যা আছে সেগুলো সমাধান করা দরকার। কিন্তু আমরা ম্যাজিসিয়ান নই,
টাকাও জোগাড় করতে হবে। অনেকে বলেন এটা পেলাম ওটা দাও ওটা পেলাম এটা
দাও। যেটা পেলে সেটা ধরে রাখতে যে টাকার প্রয়োজন সেটা কোথা থেকে জোগাড় হবে?
কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। বঞ্চনা করছে আর মিথ্যে কথা বলছে।
বিজেপি নেতারা গিয়ে বিভিন্ন খাতে টাকা দিতে বারণ করছে। ওদের লজ্জা থাকা উচিত কারণ
এটা মানুষের টাকা। জনগণের ট্যাক্স থেকে দিল্লি এই টাকা তুলে নিয়ে যায়”৷