খড়্গপুর: দলের বিভিন্ন কর্মসুচী নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে হাজির হয়েছিলে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ৷ খড়্গপুর শহরে নিজের কর্মসুচীর আগে সাংবাদিকদের সামনে নানা মন্তব্য করেছেন রাজ্যের বর্তমান ইস্যুতে ৷ কসবার কলেজের গনধর্ষন কান্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বিচারকদের রায় দেওয়া নিয়ে ৷ বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন টিএমসি দল নিয়েও ৷
আদালতের নির্দেশের পরেও রাজ্য সরকার ডিএ নিয়ে ব্যতিক্রমী পথে হাঁটতে চলেছে। এবার সেই ইস্যুতে কটাক্ষ করলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বললেন-” বারবার আদালত বলার পরেও সরকার তা মানছে না। উল্টে সেই রায় নিয়ে অন্য আদালতে গিয়ে স্টে করছে। চাকরির আবেদন করলেও চাকরি হচ্ছে না। এই সরকার কোন কিছুই মানছে না।”
কসবা কাণ্ড নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন-” অভিযুক্তদের জেল হেফাজত নিয়ে কিছু হবে না। শীঘ্রই ছাড়া পেয়ে যাবে। কারো হিম্মত নেই এদের বিরুদ্ধে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার। বিচারকদেরও হিম্মত নেই এই সরকার ও তাদের লোকজনদের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করার। দু একজন যে সমস্ত বিচারক অভিজিৎ গাঙ্গুলীর মত কড়া হাতে ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন তাদের বাড়ির সামনেও ধরনা অবস্থান হতো। হাইকোর্টে এখনো কয়েকজন রয়েছেন এমন বিচারক যারা সত্যের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন মানুষ তাদের সঙ্গে আছে। তারাও অনেকে ভয় পান যে এই রায় দিলে আগামী দিনে কি হবে! আদালত সুরক্ষিত নয়, আদালতের বিচারকগণও সুরক্ষিত নয়। তাহলে তারা কিভাবে কাজ করবে? “
সম্প্রতি মন্ত্রী শশী পাঁজার করা মন্তব্য নিয়ে তিনি বলেন-” আমি দেখলাম রাজ্যের একজন মহিলা মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেছেন রাস্তায় বাঁদরামো চলবে না। কলেজে নোংরামো করতে পারেন আপনারা! আপনাদের নেতারা নোংরামো করবে! আর রাস্তায় প্রতিবাদ করলে সেটা বাঁদরামো। আপনারা হচ্ছেন দুমুখো সাপ। রাস্তাঘাটে মহিলারা ধর্ষিত হচ্ছেন।আমি একটি ইস্যুতে বলেছিলাম বলে প্রতিবাদ করেছিলেন মহিলাদের হয়ে৷ রাস্তায় নামুন আপনারা এবার। আপনাদের নিজেরই আত্মসম্মান নেই। নিজেদের সমস্ত আত্ম সম্মান বিক্রি করে দিয়ে চাকরি করছেন তৃণমূলের। তাই আপনাদের মুখে বড় বড় কথা সাজে না।”
তিনি আরো বলেন-” বিরোধী দল হিসেবে বিজেপির দায়িত্ব এই ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করা আমরা সেটা করছি। সেটা করবেও, কারণ লোক সেই অধিকার আমাদের দিয়েছে। কিন্তু এত প্রতিবাদ সত্ত্বেও এই সরকারের কানে কিছু ঢোকেনা। তারা ধরেই নিয়েছে -যে যা ইচ্ছে করুক আমরা কিছু করবো না। নির্বাচনে আমরা ঠিক জিতে আসবো সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে। আজকে যে সংখ্যালঘু ভোটের ওপর এই সরকার রাজত্ব করছে , সেই সংখ্যালঘুদের অবস্থা চিন্তা করুন। তারা এখন সব থেকে বেশি অসুরক্ষিত। কালীগঞ্জের মতো ঘটনার পর সরকারের কোন হোল দল নেই। দুঃখ প্রকাশ করে দায়িত্ব শেষ করেছে। মমতা ব্যানার্জি এখন রথ টানছেন। এই পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু সমাজকেও ভাবতে হবে যে তারা তৃণমূলের কাছে বাঁধা পড়ে গেছে। তারা বেরোতে পারছেন না। তাদেরকেও এই অত্যাচার থেকে বাঁচাবার কেউ নেই। কয়েকজন সুবিধাভোগী নেতা সুবিধা নিয়ে সংখ্যালঘু সমাজকে বিক্রি করছে তৃণমূলের কাছে।”
তিনি কসবা কান্ড প্রসঙ্গে আরও বলেন-” এই কাণ্ড যে করেছে তার নাম প্রকাশ্যে লেখা রয়েছে কলেজের ব্ল্যাক বোর্ডে। তিনি সেখানে সর্বেসর্বা। ধর্ষক ও ধর্ষিতা দুজনেই তৃণমূলের দলের। ওটা কি তাহলে এখন বেশ্যালয় হয়ে গেছে তৃণমূল দলটা? সেখানে যে যাবে মহিলাদের কোন মান সম্মান থাকবে না। কেউ তার হয়ে কথা বলবেনা। ওখানে যে নেতাগিরি করবে সে যা ইচ্ছা করতে পারে। উত্তরবঙ্গের তৃণমূলের মহিলা কর্মী একুশে জুলাই এর সভা থেকে ফেরার সময় এক মহিলা তৃণমূল কর্মী অভিযোগ করেছিলেন তাকে দলের কর্মীরা ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন ট্রেনে। তাহলে ওই দলটাতে কিভাবে ভদ্রলোকেরা থাকতে পারে? “
