মেদিনীপুর: রাজ্য সরকারের আদিবাসী
উন্নয়ন দপ্তরের পক্ষ থেকে রাজ্য স্তরের আদিবাসী একাঙ্ক নাটক প্রতিযোগিতার আয়োজন
হয়েছে মেদিনীপুর শহরে প্রদ্যুত স্মৃতি সদনে। বুধবার তার উদ্বোধন হয়েছে
আনুষ্ঠানিকভাবে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রীরা। ৯টি জেলার
আদিবাসীদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী হল ছিল ফাঁকা। যারা ছিলেন তারা
গুটিকয়েক আদিবাসী ছাড়া বেশিরভাগটা অন্যান্য সম্প্রদায়ের। আর তা দেখেই রেগে চটে
গেলেন তিন মন্ত্রী। চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে আয়োজক দপ্তরকে দেখিয়ে জেলাশাসককে
ব্যবস্থা নিতে বললেন সকলেই।
৩ এবং ৪ মে এই রাজ্য স্তরীয়
একাঙ্ক নাটক প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়েছে মেদিনীপুর শহরে প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদন হলে।
যার আয়োজন করেছে আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর। পুরুলিয়া বাঁকুড়া পশ্চিম মেদিনীপুর
ঝাড়গ্রাম সহ রাজ্যের নটি আদিবাসী অধ্যুষিত জেলা থেকে প্রতিযোগীদের নিয়ে এই দুদিন
ধরে প্রতিযোগিতার আয়োজন হয়েছে। বুধবার এই কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে উপস্থিত
হয়েছিলেন জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যা রানী টুডু, বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, শ্রীকান্ত মাহাতো
সহ জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদরী, পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার ও
অন্যান্যরা।
এদিন রাজ্য স্তরীয় কর্মসূচির
উদ্বোধন পর্বেই- আদিবাসীহীন ফাঁকা হল দেখে সমস্ত মন্ত্রীই রেগে যান। বিরবাহা
হাঁসদা বলেন-“মুখ্যমন্ত্রী দুহাত ভরে জঙ্গলমহলের আদিবাসীদের জন্য বিভিন্ন
উপহার দিয়েছেন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে আমরা তা গ্রহণ করার অবস্থায় নেই।
তা না হলে আজকে এই হল ফাঁকা থাকতো না। আমরা আদিবাসীরা মুখ্যমন্ত্রীর জন্য কি করছি? সেটা কেউই এখন আদিবাসীরা ভাবছেন না। এই দায় কিন্তু আমাদেরই। মুখ্যমন্ত্রী
কোন কিছু বিচার না করে প্রভূত উন্নয়ন করেছেন আদিবাসীদের জন্য, পাশের রাজ্য ঝাড়খন্ড তা করতে পারেনি আদিবাসী মুখ্যমন্ত্রী হলেও।
আদিবাসীরা একটা অর্কের্স্টা ,সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলে ভিড়
করে হাজির হয়ে যায়। আজকে কেন নেই?”
মন্ত্রী সন্ধ্যা রানী টুডু
বলেন-” বিষয়টা সত্যিই দুঃখের। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে আমাদের
আদিবাসীদেরও সতর্ক হতে হবে। আমরা পিছিয়ে পড়বো আদিবাসীরাও।”
চরমভাবে উপস্থিত প্রশাসনের
আধিকারিকদের হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া। এদিন মানস বাবু মঞ্চে
প্রশাসনিক আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বলেন-” এই ঘটনা আমাকেও ব্যথা দিয়েছে। এটা
আয়োজন করার আগে জেলার ট্রাইবাল দপ্তর আমাদের সঙ্গে একটাবার যোগাযোগ করতে পারতেন।
তাহলে এই দৈনতা প্রকাশ পেত না। এই দফতরকে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের
সরকারকে অপমান করার কোন অধিকার নেই। আচ্ছা টুনি বল খেলতে গেলে দুই থেকে পাঁচ হাজার
লোক হয়ে যায়। মেদিনীপুরের আবেগকে অবহেলা করবেন না। প্রশাসককে মেদিনীপুরের
ইতিহাসটা পড়া প্রয়োজন ছিল। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এই কাণ্ডটা কারা করে তাদের আমি
চিনি। প্রশাসকরা একবার সেটা জেনে নেবেন। এত বড় কর্মসূচি এখানে মুখ্যমন্ত্রীর একটা
ছবি পর্যন্ত নেই? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে দুহাজার কথা
বলছি এখানে, অথচ তার কোন ছবি নেই? এটা
কার গাফিলতি জেলাশাসক দেখবেন দয়া করে।”