Home Medinipur Live Keshpur: শালিকে বিয়ে করতে বাধা দিয়েছিল শ্বশুরবাড়ি,রাগে ঘুমন্ত ১১ জনকে পুড়িয়ে দিয়েছিল...

Keshpur: শালিকে বিয়ে করতে বাধা দিয়েছিল শ্বশুরবাড়ি,রাগে ঘুমন্ত ১১ জনকে পুড়িয়ে দিয়েছিল জামাই, আমৃত্যু কারাদণ্ড মেদিনীপুর আদালতে

25
0

মেদিনীপুর: নিজের স্ত্রীর পর পর তিন কন্যা সন্তান হয়েছে। তাই নিজের স্ত্রীর ওপর থেকে মন সরে গিয়েছিল। মন পড়েছিল শ্যালিকার দিকে। তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। বাদ সাধে শ্বশুর বাড়ির পরিবারের লোকেরা। চরম গন্ডগোল শুরু হয়েছিল। সেই রাগে জামাই-রাতের অন্ধকারে শ্বশুরবাড়িতে একটি হলের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা সকলকে বাইরে থেকে দরজা-জানলা বন্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। যেখানে নিজের স্ত্রী সহ শ্বশুরবাড়ির পরিবারের ছয় জন মারা গিয়েছিল। পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছিলেন।-সেই ঘটনাতে অভিযুক্ত জামাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হল মেদিনীপুর আদালতে বুধবার। আইনজীবী জানিয়েছেন-মৃত্যুর পর তার দেহ বেরোবে জেল থেকে।

মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৩ সালের ৩০ শে এপ্রিল পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর থানার অন্তর্গত বাগাগেড়া এলাকায়।  জানা গিয়েছে বাগাগেড়ার পাশের গ্রামের যুবক তাহের আলীর সঙ্গে বাগাগেড়ার মিনারা বেগমের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পরপর তাদের তিনটি কন্যা সন্তান হয়। তখন থেকেই নিজের স্ত্রীর ওপর মন সরে গিয়েছিল তাহের এর। মন পড়ে শশুরের ভাই এর মেয়ে “টোটা” তথা শালিকার ওপরে। তাকে বিয়ে করার জন্য ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে। বিষয়টি শ্বশুরবাড়ির লোকেরা জানতে পেরে অশান্তি শুরু হয়ে গিয়েছিল। স্ত্রীকে নিয়ে গন্ডগোল শুরু হয় প্রথমে। বেধড়ক মারধর করা হয় স্ত্রী কে। পরিস্থিতি দেখে তাহেরের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাদের মেয়ে মিনারা সহ মেয়ের তিন মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে রেখেছিলেন। তবে জামাই তাহেরের সঙ্গে গন্ডগোল তুমল ছিল।

এই অবস্থায় ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল গভীর রাতে জামাই তাহের শ্বশুরবাড়িতে হাজির হয়ে গিয়েছিল। রাত এগারোটা নাগাদ সকলেই যখন শ্বশুরবাড়ির ভেতরে গরম আবহাওয়ার কারণে একটি বড় হলের মধ্যে অনেকেই ঘুমাচ্ছিল। তখন চুপিসারে ওই হলের বাইরে দরজা-জানলা সবটা বন্ধ করে দিয়েছিল। কোনভাবে ভেতরে পেট্রোল ঢেলে দেয় প্রচুর পরিমাণে। তারপরে বাইরে থেকে আগুন লাগিয়ে দেয়। মুহূর্তে দাও দাও করে ভেতরে আগুনে জ্বলতে থাকে ঘুমিয়ে থাকা শ্বশুরবাড়ির ১১ জন। যেখানে তাহেরের স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তান সহ শ্বশুর শাশুড়ি ও অনেকেই ছিলেন। চিৎকার চেঁচামেচিতে পাড়ার লোকজন জুটে বুঝতে পারে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়েছে। সেটিকে জামাই এর কাজ সেটিও কোনোভাবে দেখে ফেলেছিলেন অনেকে। জামাই সেখান থেকে ফেরার হয়ে যায়।

ঘটনার পর কোনোভাবে দরজা জানালা ভেঙে ভেতর থেকে সকলকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মেদিনীপুর হাসপাতালে ভর্তি করলেও তাহেরের স্ত্রীসহ ৬ জন মারা গিয়েছিল পরপর চিকিৎসা চলাকালীন। বাকি পাঁচজন আশঙ্কা জনক অবস্থায় চিকিৎসা হয়।

এই ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ তাহের সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে মামলা শুরু করেছিল। ৬৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করার পর মঙ্গলবার মেদিনীপুর আদালতে বিচারক দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন তাহের আলীকে। বাকিদের ১৩ জনকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেন বিচারক। বুধবার তাহের আলীর অমৃত্যূ কারাদণ্ড ঘোষণা করেন বিচারক।

এই মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর রাজ কুমার দাস বলেন-” বিচারক এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন আগেই। আজ তার আমৃত্যু কারাদণ্ড ঘোষণা করেছেন তাহের আলীর।” এই রায় শোনার পর-মা হারা তাহের এর মেয়ে কেঁদে কেঁদে জানান-” এই রায় এ আমরা খুশি। যেভাবে আমাদের জীবনটা তছনছ করে দিয়েছে আমার বাবা, আমার মা সহ সবটা শেষ করে দিয়েছে মামাবাড়ির। আমাদের মাথার উপর কেউ নেই। আমরা তিন বোন রয়েছে সবকিছু হারা হয়ে। তাই এই ধরনের বাবার ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। তবুও এই রায় এ আমরা খুশি।”

Previous articleBelda: রেলক্রসিং-এ আটকে টোটোতে বসে থাকা রোগীর প্রাণপণ হার্ট পাম্প করছেন পরিবারের লোকেরা,দীর্ঘক্ষন আটকে সবার সামনে মারাই গেলেন অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী
Next articleDilip ghosh: মেদিনীপুরে দিলীপ ঘোষের ছবিতে জুতোর মালা টাঙ্গালেন বিজেপি কর্মীরা,তালা ঝুললো বিজেপি কার্যালয়ে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here