খড়গপুর: শুক্রবার দুপুরে খড়গপুর শহরের ছ নম্বর ওয়ার্ডে একটি রাস্তার উদ্বোধনে গিয়েছিলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। সাংসদ থাকাকালীন তার কোটার অর্থ বরাদ্দে ওই রাস্তার নির্মাণ হয়েছে। তাই সেই রাস্তা নিজে উদ্বোধন করতে হাজির হয়েছিলেন। তখনই স্থানীয় ওয়ার্ড বাসীরা ঘিরে ধরে তাকে। কৈফিয়ৎ চায় “এতদিন কোথায় ছিলেন ?”-তাতেই রণ মূর্তি দিলীপ ঘোষ। মহিলাকে নানা কটুক্তি করে হুঁশিয়ারি দিলেন “গলায় পা তুলে দেব” “ড্রেনে ফেলে মেরে দেবো”। জানিয়ে নিন্দার ঝড়।
খড়্গপুরের বিধায়ক হয়ে কিংবা সাংসদ থাকাকালীন তেমন কোন উন্নয়নের কাজ খড়্গপুরে তিনি করতে পারেনি বলে অভিযোগ রয়েছে দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকটি জায়গায় ছোটখাটো নিকাশী নালা, স্ট্রিট লাইট, ও রাস্তা নির্মাণ ছাড়া তেমন কোনো বড় উদ্যোগ তার কাছে দেখা যায়নি। হলে তার বিরুদ্ধে অনেক ক্ষোভ ছিল স্থানীয় বহু মানুষের। এই পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার দুপুরে খড়গপুর শহরের ছ নাম্বার ওয়ার্ডে একটি রাস্তার উদ্বোধন করতে হাজির হয়েছিলেন তিনি। নিজে সাংসদ থাকাকালীন অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন ওই রাস্তা নির্মাণে। অবশেষে সেই রাস্তা যখন নির্মাণ হয়েছে তখন তিনি আর সাংসদ নেই। তাহলেও নিজের বরাদ্দ করা অর্থের তৈরি হওয়া রাস্তা উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। উদ্বোধন করে ফেরার সময় চরম বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তিনি।
স্থানীয় বহু পুরুষ ও মহিলা বিভিন্ন রকম প্রশ্ন ছুড়তে থাকেন দিলীপ ঘোষ ও তার অনুগামীদের লক্ষ্য করে। এতদিন কোথায় ছিলেন? কোন উন্নয়ন করতে দেখা গেল না কেন? এমন নানা প্রশ্ন ছুড়তে থাকেন। তাতেই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন দিলীপ ঘোষ। পাল্টা দাঁড়িয়ে গিয়ে মহিলাকে বলেন-“বেশ করেছি এসেছি, কারো বাপের টাকায় নয় আমার কোটার টাকায় রাস্তা তৈরি হয়েছে, তাই উদ্বোধন করতে এসেছি। ৫০০ টাকার দালালরা সব ঘেউ ঘেউ করছে।” এতে বিক্ষোভ আরো বেড়ে যায়। তীব্র বাদানুবাদ তৈরি হয়ে যায়। কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিবৃত হয়ে থাকা দিলীপ ঘোষ মেজাজ হারিয়ে ওই মহিলাকে বলেন-“ড্রেনে ফেলে মেরে দেব। গলায় পা তুলে দেব। যা বলার তোদের প্রদীপ সরকারকে গিয়ে বলবি যা।”
সাংসদের মুখের এই ভাষা শুনে আরো উত্তেজিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। দিলীপ ঘোষের গাড়ি আটকে সামনে বসে পড়েন মহিলারা। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জাওয়ানরা লাঠি দিয়ে খেলে সরিয়ে সকলকে কোন ভাবে দিলীপ ঘোষ কে উদ্ধার করে নিয়ে যান। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা প্রদীপ সরকার বলেন-” একজন প্রাক্তন সাংসদ বা প্রাক্তন বিধায়কের মুখের ভাষা মহিলার উদ্দেশ্যে খুবই খারাপ। এটার নিন্দা করছি। সেই সাথে আমরা এর বিরুদ্ধে ঐ মহিলাকে আইনি আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।”