খড়্গপুর: বুধবার খড়্গপুরের সেই আক্রান্ত সিপিআইএম নেতা অনিল দাস তথা ভীম দাস এর বাড়িতে হাজির হলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ৷ খড়্গপুর শহরের কামারপাড়া এলাকাতে অনিল দাসের বাড়িতে গিয়ে তাঁর খোঁজ নিয়ে সাহস যোগালেন দিলীপ ঘোষ৷ বিরোধীদের এক হয়ে থাকার বার্তা দিয়ে প্রতিবাদী নেতাকে সম্মান জানালেন ৷গত ২১ মার্চ খড়্গপুরে টিএমসির মহিলারা দিলীপ ঘোষকেও যেভাবে আক্রমন করেছিল, সেই কথা মনে করিয়ে দিলীপ বললেন- “এই মহিলারাই আমাকেও আক্রমন করতে চেয়েছিল,বলেছিলাম বুকের ওপর দিয়ে গাড়ি চালাবো, দরকারে চালাবোও”৷ তবে এই কান্ডে আক্রমনকারীরা কেউই গ্রেফতার হয়নি মঙ্গলবার পর্যন্ত ৷
সোমবারের খড়্গপুর শহরে সিপিআইএম নেতা অনিল দাসকে টিএমসি নেত্রী বেবি কোলে শর্মার প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে পেটানোর ঘটনাতে নিন্দার ঝড় সর্বত্র ৷ প্রতিবাদ বেড়েছে অভিযুক্তদের সকলকে গ্রেপতার না করাতে ৷ সেই প্রসঙ্গে বুধবার দিলীপ ঘোষ বলেন- “গ্রেফতার কি করে হবে? যে অপরাধ করেছে সে থানায় গিয়ে বসে চা খেয়ে এসেছে। এফ আই আর করার আগেই তৃণমূলের নেতা প্রদীপ সরকার পৌঁছে যাচ্ছে থানায়। কি এফ আই আর হবে সে লিখে দিচ্ছে। একটা ঘটনা বা অত্যাচার হলে চার দিন ঘোরাতে থাকে পুলিশ। এফআইআর নিতে চায়না। তার সাক্ষী এই আক্রান্ত ভীম দা রয়েছেন। গরিব মানুষের জন্য গিয়েছিলেন। এটাই যদি পুলিশের চরিত্র হয় তাহলে মানুষ কার কাছে যাবে। গুন্ডা বদমাশরাই দাপিয়ে বেড়াবে। জমি জায়গা দখল হচ্ছে বাড়িঘর লুট হয়ে যাচ্ছে দিনের বেলা সোনার দোকান লুট হচ্ছে।। দোকানদারের কাছ থেকে টাকা পয়সা লুঠ হয়ে যাচ্ছে রাস্তায়। এগুলো একেবারে সাধারণ ঘটনা হয়ে গিয়েছে খড়্গপুরে। তৃণমূল শুধু পৌরসভা এলাকাটা জিতেছে এখানে, তাতে যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে বিধায়ক সাংসদ সবগুলো জিতে গেলে তো থাকতে পারবেনা মানুষ”।
দিলীপ ঘোষের আরো দাবি-” অনিল দাস এর ওপর আক্রমণ পরিকল্পিত। এটা প্ল্যান করে করা হয়েছে। এখানে যারা আক্রান্ত রয়েছেন মহিলারা, যাদের বাড়িঘর দখল করেছে তৃণমূলের ওই নেত্রীরা, তার বিরুদ্ধেই এই অনিল দাস লড়েছিলেন। তাই এই অনিল দা তথা ভিমদার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে আক্রমণ। চার দিন ধরে প্ল্যান করা হচ্ছিল আমরা জানি। তাকে অপমান করার সুযোগ খোঁজা হচ্ছিল। আগের থেকে পুলিশ ও সবার সাথে সেটিং করা ছিল ওদের। নেতা থেকে যারা গন্ডগোল করেছিল সবাই গিয়ে থানায় পৌঁছে গেল। থানাতে বসিয়ে আক্রমণকারীকেও আশ্রয় দিল। যাতে পাবলিক কোনোভাবে আক্রমণ না করে ফেলে। এই ধরনের পরিকল্পনা করে অপরাধ করা হচ্ছে। তৃণমূলের নেতারা আছে।”
কয়েক মাস আগে দিলীপ ঘোষের ওপরে এই ধরনের মহিলারাই আক্রমণ করেছিল। সেই ঘটনা উল্লেখ করে দিলীপ ঘোষ বলেন-” এই মহিলারাই আমার সঙ্গে অপকর্ম করতে চেয়েছিল। আমাকে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। আমার গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করেছিল। দিলীপ ঘোষ কে আটকানো অত সহজ নয়। বুকের ওপর দিয়ে গাড়ি চলে যাবে বলেছি। দরকার হলে চলবে। এই ধরনের মহিলাদের আমরা সমাজ থেকে আলাদা করব। আর যে ছোটলোক নেতারা এই মহিলাদের তৈরি করেছে এবং তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে তাদেরকেও প্রকাশ্যে আনবো।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি নির্বাচন প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন-” আমাদের দল গণতান্ত্রিক দল। সংবিধান অনুযায়ী প্রতি তিন বছর অন্তর নির্বাচন হয়। সারাদেশে এটা চলছে। এই রাজ্যেও চলছে। এরপর কেন্দ্রেও সভাপতি হবে। পার্টির প্রক্রিয়া চলছে। এটাতে আমরা অভ্যস্ত আছি।”
কসবার ল কলেজের ঘটনা নিয়ে বর্তমান প্রশাসন ও প্রশাসক দলের পদক্ষে প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন-” যা হচ্ছে এসব আই ওয়াশ মাত্র। একটা ছেলে ১১ বছর ধরে একটা কলেজে আছে। প্রথমে শিক্ষার্থী, পাস করার পর প্র্যাকটিস, তারপর চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, সে কে এমন? সে নিজে চাকরি করবে কাকে চাকরি দেবে সেই ঠিক করবে? প্রিন্সিপাল তাহলে কেন আছে? ওদের হিম্মত নেই পুলিশ দিয়ে কলেজটাকে চালানোর। আরজিকরে যেখানে অপরাধ হয়েছিল সেই বাড়িটাকেই ভেঙ্গে দেওয়া হল। কয়েকশো লোক নিয়ে গিয়ে বাড়িঘর ভেঙে পুরো প্রমাণ নষ্ট করে দেওয়া হল। তৃণমূলের উপরের নেতারা এগুলো করাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। হয় উনি করাচ্ছেন,না হলে ওনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যা তিনি সামলাতে পারছেন না।”
