SSC AGITATION: “স্কুলে যান, মাইনে পাবেন, কে যোগ্য, কে অযোগ্য আপনাদের দেখার দরকার নেই,” মেদিনীপুরে চাকরিহারাদের বললেন মুখ্যমন্ত্রী
মেদিনীপুর:যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করার দাবিতে সোমবার সন্ধ্যা থেকে কলকাতায় এসএসসি দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মেদিনীপুর শহরে কলেজ মাঠের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী চাকরিহারাদের কর্মস্থলে ফেরার আর্জি জানান। তিনি বলেন, “কেন গরমে কষ্ট করে বসে আছেন? আপনারা স্কুলে যান, সিস্টেম অনুযায়ী মাইনে আপনাদের কাছে চলে যাবে। বেতন নিয়ে ভাবতে হবে না। যারা আপনাদের উস্কানি দিচ্ছে, তারা টাকা দেবে না। সরকার আপনাদের বেতন দেবে। কে যোগ্য, কে অযোগ্য আপনার দেখার তো প্রয়োজন নেই। ওটা দেখার জন্য রাজ্য সরকার আছে।”
সোমবার শালবনীতে জিন্দলদের পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্বোধনের পর মঙ্গলবার মেদিনীপুর শহরে কলেজ মাঠে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সভা থেকে চাকরিহারাদের উদ্দেশ্যে তিনি নানা বার্তা দেন। পাশাপাশি বিরোধীদের নাম না করেও উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “আমরা চাকরি দেবো, আর ওরা চাকরি খাবে। সুপ্রিম কোর্টে আপনাদের টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল, চাকরি বাতিল করে দিয়েছিল। কিন্তু আমরা রিভিউ পিটিশন করেছিলাম এবং তাতে বলেছি মাইনে পাবেন। সিস্টেম অনুযায়ী মাইনে আপনাদের কাছে চলে যাবে। এর জন্য কারো প্ররোচনা দেওয়ার দরকার নেই। দাঙ্গা করবার দরকার নেই। উত্তেজনা করবার দরকার নেই।”
চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-দের উদ্দেশ্যে বলেন, “গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি যেটা বাতিল হয়েছে আমাদের আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করতে দিন। আবার দরকার হলে রিভিউয়ে যাব। এটুকু বিশ্বাস করতে পারেন আমাদের উপর। যারা চাকরি খেয়েছে তাদের উপর ভরসা করবেন না। যারা চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে তাদের উপর ভরসা করুন।” ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলাও শুরু হতে চলেছে হাইকোর্টে। সেই বিষয়েও এদিন বলেন, “আবার দেখছি হাইকোর্টে একটা কেস করে বসে আছে। ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক ছাঁটাই করতে হবে। এরা কারা?” নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন তৃণমূলের মন্ত্রীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “যারা একদিন আমাদের মন্ত্রিসভায় ছিল, তারাও কম লোককে চাকরি দেয়নি। একবার ভাবতেও লজ্জা করছে না? মানুষের চাকরি কেড়ে নেওয়ার আগে তার একটা পরিবার আছে, সন্তান আছে, সে বাড়ি করেছে ব্যাংকের লোন নিয়ে। সে শোধ করবে কি করে একবার চিন্তা করবেন না? রাজনীতি করতে গেলে শুধু দানবিক মুখ দেখাবেন, মানবিক মুখটা কোথায় যাবে?”
এসএসসি ভবনের সামনে আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা নিশ্চিন্তে স্কুলে গিয়ে কাজ করুন। আপনাদের মাইনে নিয়ে ভাবতে হবে না। আইনের মধ্য থেকে রাজ্য সরকার আপনাদের কাজ করে দেবে। আপনাদের মনে রাখতে হবে, টাকা কিন্তু যারা উসকাচ্ছে তারা দেবে না, রাজ্য সরকার দেবে। আমি গতকাল কমপক্ষে ১০ বার যোগাযোগ করেছি। আমি কলকাতায় থাকলে এক মিনিটে মিটিয়ে দিতে পারতাম। কেউ কেউ অনড় রয়েছে কে যোগ্য, কে অযোগ্য লিস্ট বের করার দাবিতে। আরে আপনার কি যায় আসে? কেন অন্যদের কথায় পা দিচ্ছেন? যোগ্য কে, অযোগ্য কে আপনার দেখার তো প্রয়োজন নেই! ওটা দেখার জন্য রাজ্য সরকার আছে, কোর্ট আছে। আমরা এভিডেন্স নেব কোর্টে কি বলা হয়েছে। আপনি চাকরি করেন, আপনার চাকরিটা আছে কিনা দেখা দরকার। ঠিকমতো মাইনে পাচ্ছেন কিনা, সেটা আপনার দেখা দরকার। অন্যটা আপনার দরকার নেই। ওটা আমাদের উপরে ছেড়ে দিন।” বিজেপি ও সিপিএমকে নিশানা করে বলেন, “উত্তরপ্রদেশে ৬৯ হাজার চাকরি হারিয়েছেন বিজেপি সরকারে থাকাকালীন। কেউ চাকরি ফেরত পায়নি। ত্রিপুরায় সিপিএম সরকারের সময় ১০ হাজার চাকরি হারিয়েছেন কোর্টের নির্দেশে। বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল চাকরি ফেরত দেওয়ার। কিন্তু কেউ ফেরত পায়নি। অথচ আমি তো আপনাদের বলছি ফিরে পাবেন।”