Salboni : ইংরেজরা বসিয়েছিল গ্রাম, বর্তমান প্রতিরক্ষা মন্ত্রক দিল উচ্ছেদের নোটিশ,ঘুম উড়েছে ৩০০ পরিবারের
শালবনী: পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলের একটা পরিত্যক্ত জমিতে ইংরেজদের সময়ে এয়ারপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল। সংলগ্ন এলাকাতে তৈরি হয়েছিল বসতি। ইংরেজরা চলে যাওয়ার পর সেই সমস্ত বসতি এখন বড় গ্রামে পরিণত হয়েছে। গ্রামের নাম কমলা। পাশেই ইংরেজদের পরিত্যক্ত এয়ারপোর্ট এখন টাকা ছাপানোর টাকশাল তৈরী হয়েছে। তৈরি হয়েছে কোবরা ক্যাম্পও। ইংরেজদের বসিয়ে যাওয়া সেই বসতি থেকে ৩০০ পরিবারকে উচ্ছেদের নোটিশ দিল দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। প্রতিরক্ষা দফতরের জমি দাবি করে-১৫ দিনের মধ্যে বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার নোটিশ। ঘটনায় ঘুম উড়েছে ওই এলাকার তিন শতাধিক পরিবারের। তৃণমূল এর আশ্বাস- ” আপনারা নিশ্চিন্তে ঘুমান, আমরা বুঝে নেব।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী থানার অন্তর্গত কমলা এলাকা। ১৯৪০ সালের আগে ওই এলাকায় ইংরেজদের ব্যাবহার করার এয়ারপোর্ট ছিল। বিশাল এলাকা জুড়ে ওই এয়ারপোর্টের পাশে বেশ কিছু মানুষ নিজেদের বসতি তৈরি করেছিল। সেই থেকেই তাদের বসবাস। জঙ্গলমহলের ওই এলাকাতে এই মুহূর্তে তিন শতাধিক পরিবারের বসবাস। যাদের বেশিরভাগটাই তপশিলি জাতিসম্প্রদায়ের ও কৃষক পরিবার। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি বেশিরভাগই চাষবাস ও দিনমজুরের কাজ করে দিনযাপন করছিলেন।
অন্যদিকে, ইংরেজদের বিতাড়নের পর তাদের পরিত্যক্ত এয়ারপোর্ট এর জমিতে তৈরি হয়েছে টাকা ছাপানোর টাকশাল। তার পাশেই তৈরি হয়েছে কোবরা বাহিনীর প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। আরো কিছুটা দূরে বিভিন্ন ফ্যাক্টরি তৈরি হয়েছে। যার কারণে বহু বছর ধরে তৈরি হওয়া কমলা গ্রামের বাসিন্দাদের আর্থিক সুদিন ফিরতে শুরু করেছিল। তার মাঝে বিশাল খাঁড়া নেমে এলো ২০২২ সাল থেকে। দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের চিঠি-“ওই জমি তাদের, তাই এলাকা খালি করে দিতে হবে।”
২০২২ সালের সেই চিঠি আসার পর স্থানীয় বাসিন্দারা জেলা প্রশাসনের হাত ধরে কলকাতায় গিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দপ্তরে নিজেদের কাগজপত্র ও বৈধতার জিনিসপত্র দেখিয়েছিলেন। তারপর বিষয়টা থেমে গিয়েছিল। সম্প্রতি ডিসেম্বরের শুরুতে ফের নোটিশ আসে ওই গ্রামে। প্রতিটি বাড়ির বাসিন্দাদের নাম করে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে-আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই বাড়ি ঘর খালি করে চলে যেতে হবে। তাতেই মাথায় যেন বজ্রাঘাত পরিবার গুলির কাছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি- “এখানে এমন কেউই নেই যারা এখান থেকে গিয়ে অন্যত্র বাড়ি ঘর করতে পারবে। সকলেই গরিব ও খেটে খাওয়া মজুর কৃষক।”

খবর পেয়ে সেখানে হাজির হন মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরা। তাঁর কারণ তার বিধানসভা এলাকার মধ্যেই ওই কমলা গ্রাম। বিধায়ক সুজয় হাজরা, গ্রামে সভা করে জানিয়ে দেন-” আপনারা নিশ্চিন্তে ঘুমান। রাজ্য সরকার এই ধরনের উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। আমরা পাশে আছি। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত আমরা কার্যকর হতে দেব না।” সংবাদ মাধ্যমের সামনে সুজয় হাজরা বলেন-” এটার বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছি। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো অনুসারে কেন্দ্র তথা প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এটা করতে সবার প্রথম রাজ্য সরকারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত ছিল। দীর্ঘ পুরনো বসতি এভাবে উচ্ছেদ করা যায় না। তারা এই দেশেরই বাসিন্দা, তারা যে কত পুরনো বাসিন্দা ও বসতির উপযুক্ত কাগজপত্র তাদের রয়েছে। এই উচ্ছেদ আমরা সর্বতোভাবে আটকাবো এবং মানুষদের পাশে থাকবো।”
#Salboni, #Jangalmahal, #Paschim Medinipur, #Medinipur Live, #MLA Medinipur, #Sujoy Hazra, #Salboni Villages, #Eviction Notice, #Defence Ministry