e-car : পেট্রোলের দাম বেশি, পরিত্যক্ত জিনিস দিয়েই বাড়িতে ইলেকট্রিক মোনো ই-কার বানালেন বৃদ্ধ কাঠের মিস্ত্রি
মেদিনীপুর: ইচ্ছে থাকলে কত কিই না
করা যায়,
প্রবল ইচ্ছা শক্তি হার মানায় বয়সকেও। উদাহরণ মেদিনীপুর শহরের জজকোর্ট
এলাকার বাসিন্দা সেরাফত আলী। বৃদ্ধ ওই কাঠের মিস্ত্রি নিজের যাতায়াতের সুবিধার
জন্য বিভিন্ন বাহনের পরিত্যক্ত জিনিস দিয়ে বাড়িতেই তৈরি করে ফেললেন ইলেকট্রিক
মনো ই–কার। সমস্ত আবহাওয়াতেই স্বাচ্ছন্দে যাতায়াত করেন
বিভিন্ন স্থানে।
বছর ৬৫ এর বৃদ্ধ সেরাফত আলী
প্রায় ৪০ বছর ধরে কাঠের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। বাড়িতে এক ছেলে, সেও বাবার পেশাতেই । তবে তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধ সেরাফত আলী অনেকটা সৃজনশীল।
যে কারণে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে বিভিন্ন এলাকায় এখন তিনি চর্চিত।
বর্তমানে মোটরবাইকে পেট্রোল এর যা
মূল্য তাতে সাধারণ মানুষের অনেকটাই আর্থিক সমস্যা এনে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে
নিজে একটি ব্যাটারি চালিত বাইক তৈরি করবেন বলে ভাবনা শুরু করেছিলেন। তারপর নিজের
বয়সের কথা মাথায় রেখে চেষ্টা করলেন চার চাকার ব্যাটারি চালিত গাড়ি বানানোর।
নিজস্ব সেই সুপ্ত ভাবনাকে রুপ দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে যায় পেশাদারী কাজের পাশে। পাঁচ
মাস চেষ্টা করে বর্তমানে তিনি বানিয়ে ফেলেছেন একটি সুন্দর ইলেকট্রিক মনো ই–কার।
জানা গিয়েছে,
বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি তৈরি করতে সেরাফত বাবু স্টিয়ারিং সংগ্রহ করেছেন পরিতক্ত টাটা
ন্যানোর, বিকল হয়ে যাওয়া মহেন্দ্র ভ্যান এর স্টিয়ারিং
বক্স,টোটোর চাকা প্রভৃতি। হার্ডওয়্যার দোকান থেকে সংগ্রহ করেছেন লোহার সামগ্রী। আরো বিভিন্ন
জিনিস সংগ্রহ করতে হয়েছে পুরনো লোহা লাটকুটের দোকান থেকেও। কিনেছেন নতুন বিভিন্ন
সামগ্রীও।
প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন সময়
বিভিন্ন সামগ্রী নিজের মতো করে কিনে বাড়িতে ঝালিয়ে পূর্ণরূপে তৈরি করে ফেলেছেন
একটি ইলেকট্রিক কার। নিজস্ব মস্তিষ্কপ্রসূত কায়দায় ইলেকট্রিক ওয়ারিং পর্যন্ত
সম্পন্ন হয়েছে। তৈরীর প্রথম দিকে অনেক লোকই হাসাহাসি করছিল তাকে দেখে। সম্পন্ন
করার পর সেই গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হতেই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন
সকলকে। এখন আর হাসাহাসি নয় তাকে ঘিরে ধরেন চকে বাজারের লোকজন।
সেরাফত বাবু বলেন-” বর্তমানে
পেট্রোলের যা দাম, তাতে বাইক চালানো সমস্যা। তাছাড়া আমার মত
বয়স্ক লোকজন বাইকের থেকে চার চাকাতে নিরাপদ। সে কথা মাথায় রেখেই নিজস্ব উদ্যোগ
শুরু করেছিলাম। পাঁচ মাস চেষ্টা করে অবশেষে সফল। এখন নিজে তো বটেই, বাড়ির নাতি-নাতনীদের নিয়ে বাজারে স্কুলেও যাই। যে পরিমাণ টাকা এটাতে খরচ
হয়েছে তাতে হয়তো পুরনো টোটো কিনে নিতে পারতাম, কিন্তু নিজ
সৃষ্টির মজা আলাদা। বরাবরই আমি কোন না কোন কিছু আবিষ্কার করার চেষ্টা করি, এটা আমার ম্যানিয়া। এটা
এবার নিজের সৃষ্টিতে করেছি।”
তার এই আবিষ্কার এখন অনেক মানুষের
নজর কেড়েছে। চকে বাজারে বের হলেই কৌতুহলী মানুষদের নজর কাড়ে তার গাড়ি।