Medinipurlive: জঙ্গলমহলের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হঠাৎ হাজির জেলাশাসক, নজর রেজিস্টারে
শালবনি: শুক্রবার অফিস সময়ের শুরুতেই হঠাৎ জঙ্গলমহলের একটি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হানা দিলেন জেলাশাসক খুরশেদ আলী কাদেরী। অতর্কিতভাবে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রবেশ করে কর্মীদের উপস্থিতি দেখলেন। নিজে চেয়ারে বসে পরীক্ষা করলেন রেজিস্টরে থাকা রোগীদের পরিসংখ্যান। খতিয়ে দেখলেন নাবালিকা প্রসুতির সংখ্যা কত। তবে সেই সংখ্যা যে রয়েছে সেটাও পরীক্ষা করেছেন তিনি। স্বাস্থ্যকর্মীদের জানালেন-নাবালিকাদের প্রেগনেন্সি সমস্যা বিষয়ে তারা যেন বোঝান গ্রামবাসীদের। চিত্রটা দেখা গেল শালবনির জঙ্গলমহল এলাকার কর্ণগড়ে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, কেশপুর, খড়গপুরের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাতে নাবালিকা বিয়ের প্রবণতা সবথেকে বেশি। যে কারণে এই ধরনের প্রসূতিদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার পেছনে নাবালিকাদের বিয়ের বিষয়টি সব থেকে আগে সামনে এসেছে। জেলার সব থেকে বেশি নাবালিকা বিয়ের ঘটনা পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলিতে। তাই নানান পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা সামনে এনে নাবালিকাদের বিয়ে আটকানোর চেষ্টা হয়েছে। এরপরেও ফিল্ড স্তরে কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে তা দেখতে ভিজিট জেলাশাসকের।
শুক্রবার বেলা ১১ টা নাগাদ শালবনী থানার অন্তর্গত কর্ণগড় এলাকায় হাজির হয়ে গিয়েছিলেন জেলাশাসক। সেখানকার সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঢুকে পড়েন। স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সাথে সাথে নিজের চেয়ার টেবিলে বসে রেজিস্টার পরীক্ষা করেন। সেখানে প্রসূতিদের নাম দেখে নাবালিকা প্রসূতি কতখানি তাও হিসেব করেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের জানার চেষ্টা করেন এদের জন্য কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ওষুধের মজুদ কতটা রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছ থেকে জেলাশাসক জানতে পারেন-জঙ্গলমহলের ওই এলাকাতে নাবালিকা প্রসূতির সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। তাদের জন্য বিভিন্ন বোঝানোর চেষ্টাও যথেষ্ট হচ্ছে বলেও স্বাস্থ্য কর্মীরা জানান। জেলাশাসক পরামর্শ দেন-রূপশ্রী সহ বিভিন্ন যে সমস্ত সরকারি সুবিধা রয়েছে তা নাবালিকাদের বোঝানো হোক। নাবালিকা বিয়ে ও প্রসূতি আটকাতে সকলেই তৎপর হোক স্বাস্থ্য কর্মীরাও।
স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনের পর পাশেই থাকা একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ঢুকে পড়েছিলেন জেলাশাসক। সেখানে খাবারের মান পরীক্ষা করে কথা বলেন কর্মীদের সঙ্গে। তারপরে চলে যান একটি রেশন দোকানে। রেশনে দেওয়া চালের গুণমান পরীক্ষা করেছেন তিনি। কথা বলেন কর্মীদের সঙ্গে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করেন গ্রামবাসীদের মধ্যে কি কি সুবিধা পাচ্ছেন বা পাচ্ছেন না।।
এদিন জেলা শাসক বলেন-” নাবালিকা বিয়ে বন্ধের জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সেই কাজ ইতিবাচক একটা প্রভাব ফেলেছে। পরিসংখ্যান অনেক কমেছে। মানুষকে সর্বস্তরের মাধ্যমে সচেতন করার কাজ চলছে। আশা রাখছি খুব শীঘ্রই সেই সংখ্যা শুন্যতে এসে হাজির হবে।”