মেদিনীপুর: মেদিনীপুর সদর ব্লকের জঙ্গলমহল এলাকা পুরোটাই গ্রামীন। এই গ্রামীন এলাকার মধ্যে বেশিরভাগ কৃষক স্তরের লোকজন বসবাস করেন। সেখানেই প্রচারে গিয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী শ্যামল কুমার ঘোষ। মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের এই প্রার্থী পুরনো কংগ্রেস নেতা এবং কৃষক পরিবার থেকে উঠে আসা। তাই কৃষক অধ্যুষিত এলাকায় প্রচারে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন তিনিও একজন তাদের মতই কৃষক।তিনি চাষীদের সমস্যা বোঝেন৷ আর তা করতে গিয়ে দিনভর যা কান্ড করলেন তার রীতিমতো সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়ার মত বিষয়। দেখা গিয়েছে-রাস্তায় ধান নিয়ে আসা কৃষকদের কাছ থেকে ধান বোঝাই সাইকেল নিয়ে তিনি তা এগিয়ে দিচ্ছেন। কোথাও কারো ছোট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে নিয়েছেন। শ্রমিকদের সঙ্গে লরি থেকে দীর্ঘক্ষণ ইট নামিয়েছেন। কোথাও আবার খড় কাটতে থাকা বৃদ্ধের সঙ্গে হাত মিলিয়ে খড় কেটেছেন। চাষীদের সঙ্গে ধানও ঝেড়েছেন দীর্ঘক্ষণ। অনেকে মনে করছেন ভোট বড় বালাই।
মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে জোর টক্কর চলছে যে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে তা হল-তৃণমূলের সুজয় হাজরা, বিজেপির শুভজিৎ রায়, কংগ্রেসের শ্যামল কুমার ঘোষ। প্রচারে অবশ্য রয়েছেন সিপিআইএর প্রার্থীও৷ কংগ্রেস প্রার্থী শ্যামল কুমার ঘোষ পুরনো কংগ্রেস নেতা। সম্প্রতি কখনও নির্বাচনে লড়াই করেননি প্রার্থী হিসেবে। কিন্তু বহু নির্বাচনে লড়াইয়ে তিনি অংশ নিয়েছিলেন। শালবনির কৃষক পরিবার থেকে উঠে আসা এই কংগ্রেস প্রার্থী এবার মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী হয়ে নিজস্ব স্টাইলে প্রচার করছেন।
শনিবার দিনভর তার প্রচার ছিল মেদিনীপুর সদর ব্লক এলাকার কঙ্কাবতী ও নেপুরা সংলগ্ন গ্রামগুলিতে। জঙ্গলমহলের অংশ এগুলি। বেশিরভাগ চাষীদের সামনে নিজের প্রচার করলেন চাষী সেজে। এই মুহূর্তে মাঠ থেকে ধান কেটে বাড়িতে তুলছেন কৃষকেরা। ফলে সেই কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য নিজে কৃষক সেজে গেলেন প্রচার করতে গিয়ে। সেই কৃষকদের কাছে নিজেও একজন কৃষক- এটা প্রমাণ করতে একাধিক কর্মকান্ড করে বসলেন।
নেপুরা এলাকাতে সাইকেলে করে কৃষকেরা ধান বয়ে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে দেখে তার সাইকেল তার কাছ থেকে নিয়ে অনেকটা এগিয়ে দিলেন। গ্রামের ভেতর কৃষকেরা ধান ঝাড়ছেন দেখে তাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ধান ঝাড়া মেশিনে ধান ঝেড়ে দিলেন। এরপরে এক বৃদ্ধ কৃষক গরুর জন্য খড় কাটছেন দেখে, তার সঙ্গে হাত লাগিয়ে অনেকক্ষণ খড় কেটে দিলেন। গ্রাম থেকে বেরিয়ে আসার পথে দেখা গেল বহু শ্রমিকেরা লরি থেকে ইট নামাচ্ছেন। নিজের সাদা পাঞ্জাবি পরা অবস্থাতেই মাথায় উত্তরীয়কে ফেট্টী হিসেবে বেঁধে দীর্ঘক্ষন ধরে ইট নামালেন লরি থেকে। সেইসাথে শ্রমিকদের সঙ্গে ভোট প্রার্থনার কথোপকথন চালিয়ে গেলেন। এই সারাদিনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এখন ভাইরাল।
এই প্রসঙ্গে শ্যামল কুমার ঘোষ বলেন-” আমি নিজে একজন কৃষক পরিবারের ছেলে। এখনো চাষের কাজ সবটাই করি। এই চাষীদেরকে সেই সমস্ত কাজ করতে দেখে আমার মনে হল তাদেরকে দাঁড় করিয়ে রেখে নিজের কথা না বলাই ভালো। তাই তাদের কাজে হাত লাগিয়ে কাজ করতে করতে কিছুটা কথা বলে নিয়েছি। আমি নিজেও চাষীর ছেলে, ফলে এই কাজ করতে আমার কোন অসুবিধা বা অস্বস্তি অনুভব হয়নি। এটা আমার কাছে স্বাভাবিক।”