মেদিনীপুর: নির্বাচনী লড়াই শুরু হলেই যেন একে অপরের বিরুদ্ধে থাকা প্রার্থীরা ব্যক্তিগত শত্রুতায় মুখর হয়ে যায়। একে অপরের বিরুদ্ধে কেচ্ছা কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি দৃশ্য দূষণ শব্দ দূষণ সবটাই তৈরি করে। একটু ব্যতিক্রমী চিত্র দেখা গেল মেদিনীপুর শহরে বুধবার রাতে। রাস্তা দিয়ে আমজনতা যাওয়ার সময় দেখল কংগ্রেস প্রার্থী রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন ও তৃণমূল প্রার্থী স্কুটিতে বসে একে অপরের মুখোমুখি খোশ গল্পে বিভোর। কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে থাকা প্রবীণ কংগ্রেস নেতারাও সুন্দর গল্প করছেন। ছবিটি মোবাইলে তুলেও ফেললেন অনেকে। মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের দুই প্রার্থীরই ব্যাখ্যা -“দুজনেই জাতীয় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি আমরা। রাজনৈতিক সৌজন্যতা ভুলি কি করে?”
মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী এবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা। তিন সপ্তাহ ধরে চুটিয়ে প্রচার ও দলীয় কর্মসূচিতে লেগে রয়েছেন। উল্টো দিকে রয়েছেন অন্যান্য বিরোধীদের মতো কংগ্রেসের প্রার্থী শ্যামল কুমার ঘোষ। দুই প্রার্থীই অবশ্য মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা। পুরনো পরিচিতি আছে দুজনেরই একে অপরের মধ্যে। কিন্তু সম্পর্ক এতখানি গাঢ়ো অবশ্য নয়।
বুধবার রাতে কংগ্রেস প্রার্থী শ্যামল ঘোষ প্রচারে বেরিয়েছিলেন নান্নুর চক সংলগ্ন এলাকাতে। ছোটখাট ব্যবসায়ী পথচারী সকলের সঙ্গে জনসংযোগ সেরে যখন যাচ্ছিলেন তখন নান্নুর চকে নিজের দলীয় কার্যালয় থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন স্কুটিতে করে তৃণমূল প্রার্থী সুজয় হাজরা। তখনই মুখোমুখি দেখা কংগ্রেস প্রার্থী শ্যামল ঘোষের সঙ্গে সুজয় হাজরা।।
দুজনেই একে অপরকে মুখোমুখি দেখে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে পড়েন। দুজনের মধ্যেই খোশ গল্প শুরু হয়ে যায়। একে অপরের সঙ্গে করমর্দন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন। কিরকম কি কাজ চলছে কোথাও সমস্যা হচ্ছে কিনা তারও খোঁজ নিলেন সুজয় হাজরা। কংগ্রেস প্রার্থী ও কুশল বিনিময় করে বেশ কিছুক্ষণ ধরে গল্প করলেন সুজয় হাজরার সঙ্গে। তার সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা শম্ভু চ্যাটার্জি সহ অন্যান্যরাও।
এই প্রসঙ্গে শ্যামল ঘোষ বলেন-” রাজনীতি যে যাই করুন না কেন, একে অপরের সঙ্গে যে সৌজন্যতটা সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান। সেটা আজকে যেন কোথাও বিলীন হয়ে গেছে। আমরা এখনো সেটা ভুলিনি। রাজনীতির লড়াই রাজনীতির মাঠেই থাকুক। একে অপরের মুখোমুখি দেখা হয়েছিল অনেকক্ষণ কুশল বিনিময় করে গল্প করেছি মাত্র। সকলেই ভালো থাকুন।”
একইভাবে সুজয় হাজরার দাবি-” দুজনেই আমরা জাতীয় রাজনৈতিক দলের অংশ। আমাদের মধ্যে রাজনীতির লড়াই যেমনটাই ঘটুক সৌজন্যতা তো অবশ্যই থাকবে। যা বর্তমান যুগে একেবারেই হারিয়ে গেছে। আমরা আর যাই করি এই সৌজন্যতা হারাতে চাই না। একে অপরের শুভেচ্ছা ও কুশল কামনা করেছি মাত্র।”