Chandrakona : লেঠেল মহিলা বাহিনীর দাপটে মদ শূন্য চাঁদুর গ্রাম
চন্দ্রকোনা: এলাকায় মদ বিক্রি ও মাতালের দাপটে শেষ পরিণতি হতে চলেছিল। পাড়ার মোড়ে মোড়ে মাতালরা সব সময় মদ্যপান করে লুটিয়ে পড়ে থাকত। মৃত্যুও হয়েছিল সম্প্রতি একজনের। তারপরেই মহিলা বাহিনী তাদের বিশেষ রূপ ধারণ করে। প্রশাসনের ওপরে ভরসা হারিয়ে নিজেরাই লাঠি ধরে গ্রামের এক প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত সোজা করা শুরু করেন। মদ ভাটি উচ্ছেদ তো হলোই, সেই সাথে মদ্যপ অবস্থায় রাস্তায় কাউকে দেখলেই বেধড়ক প্রহার শুরু হয় মহিলাদের। টানা কয়েক সপ্তাহ চলতেই দীর্ঘ পুরনো মদের গ্রাম এখন একেবারেই মদ শূন্য। গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিরা বলছেন, -গ্রামের চায়ের দোকান, মুদির দোকান সবেতেই চলত রমরমিয়ে মদের কারবার। রাত ভয়ে বাড়ি থেকে বেরোনো যেত না, শুধু মদের গন্ধ- আর মাতালের দৌরাত্ম্যে। তবে এখন গ্রামের প্রমীলা বাহিনির জন্য গ্রামে শান্তি ফিরেছে।উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সামিল হয়েছেন মহিলা প্রধান। ধন্যবাদ জানালেন মহকুমা শাসকও।
ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের চাঁদুর গ্রামে। জানায়ায় চাঁদুর গ্রামে প্রায় ৭০০ মত পরিবার বসবাস। কিন্তু এই গ্রামে বেশ কয়েক বছর ধরে রমরমিয়ে চলছিল মদের কারবার। বেশিরভাগ বাড়িতেই মদ খাওয়া নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকতো। মদ খেয়ে মারাও গিয়েছেন বেশ কয়েক জন। এই নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনকে গ্রামের মানুষজন জানালেও গ্রাম থেকে মদ তুলতে ব্যর্থ হয় প্রশাসন।
কিন্তু হঠাৎ করেই ঘুরে গেল মোড়, কারণ- কিছুদিন আগে গ্রামের পুকুর থেকে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। জানা যায় মদ্যপ অবস্থায় জলে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে তার। তারপরেই এলাকার মানুষ অভিযোগ তোলেন মদ খাওয়ার ফলেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামের মহিলারা। দ্রুততার সঙ্গে একত্রিত হন তারা। তারপরে গ্রামে যেখানে যেখানে মদের কারবার চলত সেখান থেকে তারা মদ নষ্ট করা শুরু করেন।শুধু তাই নয়, প্রশাসনের উপর আস্থা হারিয়ে গ্রামের মহিলারা আইন তুলে নেন নিজেদের হাতে।
গ্রামের মহিলাদের এই আন্দোলনে সামিল মনোহরপুর ৬/২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান মাধূরী সিং। তিনিও এই আন্দোলনে সামিল হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মদ খেয়ে মাতলামি করলেই প্রকাশ্যে লাঠি হাতে মহিলারা একত্রিত হয়ে তাকে গণপ্রহার করছেন।
অবশেষে গ্রামের মহিলাদের ভয়ে গ্রামের মদের কারবার ও মদ খাওয়া বন্ধ করেছে বেশিরভাগটাই। সম্পূর্ণরূপে গ্রামে মদ বিক্রি বন্ধ হয়েছে। মহিলাদের এই উদ্যোগে খুশি এলাকার প্রবীণ থেকে নবীন সকলে। আর গ্রামের মহিলাদের উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমান বিশ্বাস।