Chandrakona : বেহাল সেতু থেকে দুর্ঘটনা, সেতু ভেঙে আগুন লাগিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরা
চন্দ্রকোনা: দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে ছিল পাশাপাশি গ্রামের যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি। শিলাবতী নদীর ওপর তৈরি বাঁশ ও কাঠের ওই সেতু দিয়ে দুই প্রান্তের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে যাতায়াত করেন। কিন্তু জরাজীর্ণ বিপদসংকুল সেতুটি মেরামতের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই স্থানীয় প্রশাসনের বা পঞ্চায়েতে। তাই বারবার দুর্ঘটনা ঘটছিল সেতু থেকে পড়ে। বুধবার এমনই এক ব্যক্তি বাইক সহ সেতু থেকে পড়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় থাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিত্সার জন্য। তারপরেই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ওই সেতু ভেঙে আগুন লাগিয়ে দিলেন বুধবার সন্ধার পর। ক্ষোভ উগরে দিলেন জন প্রতিনিধিদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে। ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা এলাকার।
চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের কদমতলা গ্রামে এই বাস ও কাঠের সেতুটি রয়েছে। দুই প্রান্তের দশটির বেশি গ্রামের মানুষ শিলাবতী নদীর ওপর দিয়ে পারাপার হওয়ার জন্য ওই বাঁশ ও কাঠের পুরনো সেতুটি ব্যবহার করে থাকেন। সাইকেল বাইক নিয়ে প্রতিদিনই ছাত্র-ছাত্রী রোগী সাধারন মানুষ সবজি বিক্রেতা সকলেই যাতায়াত করেন। সেতুটি ভঙ্গুর হয়ে পড়েছিল। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে দুই প্রান্তের মানুষ বার বার পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলেন। তাতেও খুব একটা নজর পড়েনি কারো।
স্থানীয় বাসিন্দা স্বদেশ পাল বলেন- “দুই প্রান্তের অন্তত কুড়িটা গ্রামের মানুষ এই সেতুটি ব্যবহার করে। কিন্তু সেতু টা খুব খারাপ অবস্থায় বিপদজনক হয়ে রয়েছে। বারবার প্রশাসনকে জানিয়েছি আমরা। তারা কেউই আমাদের কথা শোনেনি। ছাত্র-ছাত্রী থেকে বহু মানুষ এই ব্রিজ থেকে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। আজও বহু মানুষ কটকে চিকিৎসাধীন। নতুন করে আজকে আরও একজন দুর্ঘটনা গ্রস্ত হতেই মানুষ রেগে গিয়েছে। তাই এই বেহাল সেতুকে ভেঙে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।”একই রকম বক্তব্য আরো অন্যান্য স্থানীয় লোকজনের। সকলেরই দাবি-” প্রশাসন এই সেতু নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমাতে শিলাবতী নদীর মতো বেশ কিছু নদীর রয়েছে ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন ব্লক জুড়ে। যেখানে বেশিরভাগ জায়গাতেই নদীর ওপর দিয়ে যাতায়াত করার জন্য এই ধরনের বাঁশ বা কাঠের সেতু নির্মাণ করা রয়েছে। প্রতি বছর বন্যার সময় এই ধরনের সেতুগুলির বেশিরভাগ ভেঙে ধুয়ে চলে যায়। পরে প্রশাসন বা পঞ্চায়েত কিছুটা তৈরি করে, বাকিটা গ্রামবাসীদের নিজেদের তাগিদে তৈরি করে নিতে হয়। গত কয়েক মাস আগেই বর্ষা ও বন্যাতে ঘাটাল মহকুমার এমন কুড়িটির বেশি সেতু ভেঙে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যার সবগুলি আজও মেরামত সম্ভব হয়নি। বেশিরভাগ সেতু অবশ্য বিপদসংকুল এরকম হয়েই রয়েছে। সম্প্রতি একটি সেতুর নাম গ্রামবাসীরা দিয়েছিলেন “ডিয়ার লটারি” সেতু। তাতে নাকি বিভিন্ন রকমের দুর্ঘটনা ভাগ্যে ঘটে থাকে। এবার চন্দ্রকোনার কদমতলা এলাকার এই সেতু নিয়ে একই রকম বিক্ষোভ চরম আকার ধারণ করল