Home Medinipur Live Maoist: সমাজ বদলাতে মাওবাদী হয়েছিলেন, মাইন বিস্ফোরণে ১৫ বছর জেল, অবশেষে মুক্তি...

Maoist: সমাজ বদলাতে মাওবাদী হয়েছিলেন, মাইন বিস্ফোরণে ১৫ বছর জেল, অবশেষে মুক্তি শোভা-র

10
0

মেদিনীপুর: বেলপাহাড়ির মাজুগোড়া এলাকার বাসিন্দা শোভা সিং। বাম আমলে জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা বঞ্চনার যে অভিযোগ বারবার তুলতেন, সেই বঞ্চনা থেকে নিজেদের দাবি আদায় করার লড়াইয়ে এবং সমাজ বদলানোর লক্ষ্য নিয়ে বাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলেন বছর বারোর নাবালিকা শোভা সিং।  বেলপাহাড়ির ওই এলাকাতে তখন মাওবাদীদের আনাগোনা। সমাজে বঞ্চনার উদাহারন তুল ধরে মানুষের মগজ ধোলাই করার পাঠশালা তখন দিত মাওবাদীরা ৷সকলকেই বলতো- আপনাদের দাবি আদাইয়ে মাওবাদীতে যোগ দিন ৷

মাওবাদীদের সমাজ বদলানোর সেই লড়াইয়ে সায় দিয়ে অভাবী পরিবারের ১২ বছরের নাবালিকা শোভাকে মাওবাদীদের সাথে চলে গিয়েছিল। সেখানেই মাওবাদীদের সঙ্গে হাত পাকিয়ে বড় হতে থাকে সে। মাওবাদী কার্যকলাপে নিযুক্ত থাকতে গিয়ে বাড়ি ফেরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন শোভা। বেলপাহাড়ি থেকে লালগড় এমন কি প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকাতেও মাওবাদীদের বিভিন্ন কার্যকলাপে সে থাকতো বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু তার মাওবাদী জীবনের ছেদ পড়ে ২০১০ সালে ঘাটশিলার একটি ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায়। বড় ওই বিস্ফোরণ কান্ডে ঝাড়খণ্ডের পুলিশ তদন্ত নেমে মাওবাদী সদস্যা শোভাকে গ্রেফতার করেছিল। রাঁচির হাইকোর্টে সেই মামলা চলছিল।

তবে ততক্ষণে পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম জেলাতেও বিভিন্ন নাশকতার মামলা তার নামে ঝুলে ছিল। ঝাড়গ্রাম থেকে ছটি মামলা ছিল তার নামে। রাঁচি হাইকোর্টে ছিল দুটি মামলা। মাওবাদী হিসেবে কাজ করার সময়ই এক মাওবাদী যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। এরপর ২০১০ সালে শোভা গ্রেপ্তার হয়ে রাঁচি হাইকোর্টে মামলা চলতে থাকে। ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ মামলাতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ধরা না পড়া শোভার স্বামী শিলদা ইএফআর ক্যাম্প হামলা কাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন পরে। তিনি এখনো বহরমপুর জেলে বন্দী।

শোভার বেলপাহাড়ির মাজুগোড়া এলাকার গরীব পরিবারের সেভাবে আইনীলড়াই করার ক্ষমতা ছিলনা৷ তবে তাতে পাশে দাঁড়িয়েছিল মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর৷ দীর্ঘ আইনী লডাই করেো যাবজ্জীবন সাজা ঘোষনা করা হয়েছিল রাঁচি আদালতে ৷ তারপরেও আইনী লড়াই ছিল –প্রমান করার যে- শোভা এই বিস্ফোরনে ছিলনা৷ সৌভাগ্যবছত কেউ স্বাক্ষীও দেয়নি যে শোভা বিস্ফোরনে ছিল বলে বলবে৷ তবুও এই লড়াইয়ে শোভা পনেরো বছর জেল জীবন কাটিয়েছে। অবশেষে আইনী লড়াই সফল৷ আদালত জানায় – শোভা বিস্ফোরনে ছিল এমন প্রমান না পাওয়ায় তাকে মুক্তি দেওয়া হল ৷ ততক্ষনে শোভা মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ছিলেন শেষ পর্বে। আদালতে শোভার বিপক্ষে সাক্ষী না পাওয়াতে তাকে জেল থেকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয় বিস্ফোরণ মামলায়। তবে বাকি মামলাগুলিকে আগেই জামিন পেয়ে গিয়েছিল শোভা।

ফলে রাঁচি হাইকোর্টে মুক্তির নির্দেশ পাওয়ার পরে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার জেল মুক্তি ঘটে। পরিবারের লোকজন ছাড়াও এপিডিআর কর্মীরা হাজির ছিলেন তার এই মুক্তি পর্বে। নাবালিকা শোভা বাড়ির লোকের সঙ্গ ছেড়েছিলেন ৷ প্রায় কুড়ি বছর পরে সেই শোভা রীতিমতো এক সিঁদুর পরা মহিলা হিসেবে জেল থেকে বের হয়ে পরিবারের লোকেদের কাছে এলেন ৷ তবে বাড়ি ছাড়ার সময়ে বাড়িতে বাবা- মা ছিলেন ৷ বর্তমানে বাবা নেই , মারা গিয়েছেন আগেই ৷ তবে মা ও ভাই রয়েছে ৷

YouTube player

Previous articleDilip Ghosh: “তৃণমূল চায় না দিলীপ ঘোষ টিএমসিতে যাক, আমাদের দলের হিজড়েরা রটিয়েছিল”-দিলীপ ঘোষ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here