Chandra: কংসাবতী নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। সেই ব্যক্তির খোঁজে রাতভর তল্লাশি পুলিশ ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের। গভীর রাতে ওই ব্যক্তির খোঁজ না মিললেও নদীর জলে ভেসে আসতে দেখা গেল এক যুবককে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গুড়গুড়িপাল থানা এলাকায়। জানা গিয়েছে, ওই এলাকার চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবপুর এলাকার বেশ কয়েকজন কংসাবতী নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন বুধবার বিকেলে। মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ছাড়া জলে ফুলেফেঁপে ওঠে কংসাবতী। নদী পারাপার করার সময় গঙ্গাধর সামন্ত (৪০) নামে এক ব্যক্তি জলে তলিয়ে যায় বলে দাবি সঙ্গে থাকা অন্যান্যদের।
খবর যায় গুড়গুড়িপাল থানায়। পুলিশ এসে চারিদিকে খোঁজ খবর এবং তল্লাশি চালায়। তাতেও কোন হদিস না মেলায় সিভিল ডিফেন্সের টিম আনা হয়। ভরা নদীতে জলের স্রোত ছিল বেশি। ফলে শিবপুর এলাকা থেকে ভেসে ওই ব্যক্তি মনিদহ এলাকার দিকেও চলে আসতে পারে বলে ধারণা ছিল পুলিশের।
সেই মতো গুড়গুড়িপাল থানার ওসি মনোরঞ্জন শিটের নেতৃত্বে খেয়া পারাপারের একটি নৌকা নিয়ে নদী বক্ষে তল্লাশি শুরু করেন মনিদহ এলাকায়। রাত একটা নাগাদ দেখা যায় কেউ একজন নদীর জলে ভেসে আসছেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল নিখোঁজ ব্যক্তিই হয়তো ভেসে আসছেন। তড়িঘড়ি সঙ্গে থাকা দড়ি এবং বাঁশ দিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন।
উদ্ধারের পর দেখা যায় নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তি ইনি নন। কোনরকমে ওই যুবককে উদ্ধার করে স্থানীয় দেপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় পুলিশ। ওই যুবকের নাম অজয় মাহাত (২২)। বাড়ি পিড়াকাটার ভুরকুন্ডিশোল এলাকায়। অজয় বলেন, “আমি মানিকপাড়া গিয়েছিলাম বিকেলে। সেই সময় নদীতে জল কম ছিল। ফিরে যখন আসি তখন রাত বারোটা পেরিয়ে গিয়েছে। দুর্গাপুর ফেরিঘাটের কাছে নদীতে নামার পরই জলে স্রোতে আমি ভেসে যায়। ভেবে পারছিলাম না আমি বেঁচে ফিরব। ওই সময়ই নদীতে নৌকাতে পুলিশ টহল দিচ্ছিল। পুলিশই আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ না থাকলে আমি বেঁচে ফিরতে পারতাম না।”
পরে পরিবারে খবর দেওয়া হলে লোকজন এসে তাকে বাড়ি নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের শিবপুর, ভাটপাড়া সহ কংসাবতী নদী বক্ষে ওই নিখোঁজ ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু করে সিভিল ডিফেন্স। বিকেল পর্যন্ত ওই ব্যক্তির কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি বলেই পুলিশ জানিয়েছে।
চাঁদড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারকনাথ বেরা বলেন, “বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। সেই সময় গঙ্গাধর সামন্ত জলে ভেসে যায় বলে সঙ্গে থাকা লোকজন জানিয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। রাত থেকে সারাদিন ধরে পুলিশ এবং সিভিল ডিফেন্স খোঁজার পরেও এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। অন্যান্য গ্রামবাসীদেরও জানানো হয়েছে নদীতে জল বেশি রয়েছে, কেউ যেন মাছ ধরতে না যায়।”