Garbeta,Ghatal: পশ্চিম মেদিনীপুরের বন্যা পরিস্থিতি একদিকে কিছুটা উন্নতি হলেও অপরদিকে অবনতি। জেলার গড়বেতা ১ ও ২ ব্লকে জলস্তর নামতে শুরু করেছে। তবে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ঘাটাল। বিপদ সীমা ছুঁয়ে গেছে ঘাটালের বাঁকা এলাকায় শিলাবতী নদীর জলস্তর। দুদিনের বেশ কিছু জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় চারজন সচিব পর্যায়ের আধিকারিক, জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন সেচমন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া। মানুষের সমস্যা শোনার চেষ্টা করলেন প্লাবিত এলাকায়। নিজে হাতে বিলি করলেন খিচুড়ি।
গত দুদিন ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা এলাকা প্লাবিত শিলাবতী নদীর জল বেড়ে। গড়বেতার দুটি ব্লক তথা গড়বেতা ১ ও গড়বেতা ২ প্লাবিত হয়েছিল। দুই এলাকা থেকে কয়েক হাজার মানুষকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রশাসন। ত্রাণ শিবির খুলে তাদের রাখা হয়। ওই এলাকাতেই শুক্রবার দুপুরের পর হাজির হওয়ার রাজ্যের সেচ মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া। সঙ্গে চারজন সচিব ছাড়াও জেলাশাসক খোরশেদ আলী কাদেরী ও পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। গড়বেতা ও হুমগড় এলাকার প্লাবিত এলাকায় মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। ত্রাণ শিবির গুলিতে থাকা লোকজনের সঙ্গে কথা বলে বস্ত্র বিলি করেন, বিলি করা হয়েছে ত্রানের সামগ্রীও।মন্ত্রী নিজে হাতে খিচুড়ি বিলি করেন ত্রাণ শিবিরে থাকা লোকজনদের জন্য।
এরপর মন্ত্রীসহ পুরো টিম রওনা দেয় ঘাটালের উদ্দেশ্যে। সেখানে চন্দ্রকোনা ১ ও ২ নম্বর ব্লকের প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে বন্যার্তদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেন। চন্দ্রকোনার মনসাতলা চাতালে উপস্থিত হওয়া প্লাবিত এলাকার লোকজনদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।
এদিন মানস ভুঁইয়া বলেন -” প্রশাসনের তৎপরতা প্রথম থেকেই অনেক বেশি ছিল। যে কারণে কোন বড় সমস্যা হয়নি মানুষকে উদ্ধার করতে। যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তাদের জন্য পর্যাপ্ত রসদ সামগ্রী রাখা হয়েছে। উচ্চপর্যায়ের সচিবরা এখানে হাজির হয়েছেন। জেলাশাসক পুলিশ সুপার সকলেই তৎপর রয়েছেন। জল স্তর গড়বেতাতে নিয়ন্ত্রণে আসছে, তবে ঘাটালের পরিস্থিতি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
জেলাশাসক খুরশেদ আলী কাদেরী জানিয়েছেন-“এখনো পর্যন্ত জেলাতে ৩৫টি ত্রাণ শিবির রয়েছে। পাঁচ হাজারের বেশি মানুষকে শিবিরে এনে রাখা হয়েছে। তাদের জন্য সমস্ত জিনিস সরবরাহ করা হচ্ছে। গড়বেতা এলাকায় জলস্তর নামতেই ত্রাণ শিবির থেকে অনেকে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। কমিউনিটি কিচেন চালু করা হয়েছে ঘাটালে। প্লাবিত এলাকার লোকজনরা সমস্ত খাবার পাবেন। পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনেকগুলি এনডিআরএফ এসডিআরএফ ও কিউআরটি টিম নামানো হয়েছে।”
শনিবার সকাল থেকে ঘাটালের আড়গোড়া চাতাল এলাকায় রাজ্য সড়ক জলের তলায়, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, প্লাবিত ঘাটালে বাড়ছে বন্যার জল, জল বাড়ায় সমস্যা বাড়ছে ঘাটালের বানভাসি এলাকার মানুষজনের।
শিলাবতী ও ঝুমি নদীর জলস্তর বেড়ে প্লাবিত ঘাটাল পৌর এলাকা সহ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। জলে ডুবেছে ঘাটাল পৌর সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র, রাজ্য সড়ক পৌর ঢালাই রাস্তা সহ একাধিক ঘরবাড়ি ও বিঘের পর বিগে কৃষি জমি। নৌকা ও ডিঙ্গি করে চলছে যাতায়াত, চরম সমস্যায় ঘাটালের বানভাসি এলাকার মানুষজন। ইতিমধ্যেই ঘাটাল পৌরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ড আড়গোড়া এক নম্বর চাতল এলাকায় ঘাটাল চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়ক জলের তলায়, বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা, ঘাটাল পৌরসভার ১৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,১০,১১ ওয়ার্ড জলমগ্ন, প্লাবিত ঘাটালে বাড়ছে বন্যার জল বন্যার জল বাড়াই নতুন করে সমস্যা বাড়ছে ঘাটালের বানভাসি এলাকার মানুষজনের।
এই প্রসঙ্গে ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন- “রাজ্য সরকার বন্যা নিয়ন্ত্রনে ব্যার্থ ৷ দেব এর প্রতিশ্রুতী শুন্য এখানে ৷ মানুষ সব বুঝে গিয়েছে ৷ ঘাটালের যা পরিস্থিতি সেখানে নৌকা পর্যন্ত নেই ৷” তবে তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরা ৷ তিনি বলেন-“একমাত্র টিএমসি লোকেরা ও প্রশাসনের সহযোগীতা ছাড়া কোথাও বন্যার্তদের কাছে কেউই নেই ৷ বিজেপি সহ বিরোধীরা পরিযায়ী পাখির মতো ভোটের সময়ে আসে৷ মানুষ দেখুক কারা রাজনীতি করে আর কারা পাশে থাকেন৷ ”