মেদিনীপুর: “আমাদের কোন নেতা নেই। দলের একটাই নেতা নরেন্দ্র মোদি। আমরা বাকি সবাই সদস্য”-মেদিনীপুরে দিলীপ ঘোষ অস্বস্তি কাটাতে কর্মীদের কাছে বার্তা দিলেন বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী শুক্রবার রাত নটা নাগাদ মেদিনীপুর শহরে। বিজেপির বিভিন্ন সময়ে শহীদ হয়ে যাওয়া কর্মীদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানাতে একটি কর্মসূচির আয়োজন হয়েছিল শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ মেদিনীপুর শহরে সিপাই বাজার এলাকার জেলা বিজেপি কার্যালয়ে। যেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী সহ বিভিন্ন স্তরের বিজেপি নেতৃত্বরা।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর মেদিনীপুর শহরে সিপাই বাজার এলাকায় জেলা বিজেপি কার্যালয়ে এই শহীদ কর্মী সভার আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও, বিজেপির জেলা সভাপতি সমিত মন্ডল, বিধায়ক হিরন চ্যাটার্জী, তুষার মুখার্জি শুভজিৎ রায় অরূপ দাস শংকর গুছাইত প্রমুখেরা। ২০২১ সাল থেকে নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় নাকি তৃণমূলের হাতে ৫৭ জন বিজেপি কর্মী নিহত হয়েছেন। তাদের স্মরণে বিজেপি এলাকার জেলার সামনে ৫৭ টি প্রদীপ জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন শুভেন্দু অধিকারী সহ নেতাকর্মীরা। এরপর মোমবাতি হাতে মৌন মিছিল বের হয় মেদিনীপুর শহরের রাস্তায়। শেষে কালেক্টরেট মোরে ক্ষুদিরাম বসুর মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শুভেন্দু অধিকারী।
গত তিনদিন ধরে রাজ্যজুড়ে দিলীপ ঘোষ ইসুতে বিজেপির মধ্যে একের পর এক অস্বস্তিকর মন্তব্য ও পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারী দুটি শিবিরের অনুগামীরা একে অপরের বিরুদ্ধে নানা রকম বাক্যবান অব্যাহত রেখেছে। রাজ্য সরকার আয়োজিত জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে স্বস্ত্রীক দিলীপ ঘোষ উপস্থিত থাকায় বিজেপি একপ্রকার তাকে অচ্ছুত তৈরি করে ফেলেছে। দিলীপ ঘোষ কোলাঘাটে দলীয় সভা করতে গেলে বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ দেখিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে। তারপর বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ সহ একের পর এক বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে নানা রকম কথা বলেছে। পাল্টা দিলীপ ঘোষ। নাম উচ্চারণ না করে শুভেন্দু অধিকারী সহ বিভিন্ন নেতাদের বিভিন্নভাবে আক্রমণ করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে দিলীপ ঘোষের অনুগামী বিজেপি জেলা সভাপতি সমিত মন্ডল সহ একদল বিজেপি কর্মীকে উল্টপক্ষের বিজেপি কর্মীরা বেধড়ক মারধর করেছিল। জেলা কার্যালয়ে দুদিন ধরে বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছে। সেই পরিস্থিতি কাটাতে সমস্ত পক্ষের বিজেপি নেতাকর্মীদের নিয়ে এই দলীয় কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারী নেতৃত্বে মেদিনীপুর শহরের জেলা বিজেপি কার্যালয়ে।
এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে শুরুতেই দিলীপ ঘোষ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দু বলেন-” আমাকে কেউ দয়া করে এই সমস্ত প্রশ্ন করবেন না। আমার স্পষ্ট অবস্থান মমতা ভাগাও, হিন্দু বাঁচাও। আর কোন উত্তর প্রশ্ন ভাষণ নেই আমার।”
বৃহস্পতিবার বিজেপি জেলা কার্যালয়ের সামনে বিজেপির দুটি গোষ্ঠীর মারধরের ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে যান বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন-” ইতিমধ্যে দলের পক্ষ থেকে সবাই বলে দিয়েছেন বিষয়টি। ওই ঘটনায় ভারতীয় জনতা পার্টির কেউই যুক্ত ছিলেন না। আজকে ঐক্যবদ্ধ পশ্চিম মেদিনীপুর বিজেপি। সবাই একসঙ্গে নেমে শহীদদের তর্পণ করছি। তৃণমূলকে সরাতে বিজেপি এক এবং ঐক্যবদ্ধ। আমাদের একজনই নেতা তার নাম নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী। আমাদের আর কোন নেতা নেই আমরা সবাই কর্মী। সবাই দলের সক্রিয় সদস্য। নেতা এক নরেন্দ্র মোদী প্রতীক এক পদ্মফুল। আমাদের আর কোন নেতা নেই আমরা ঐক্যবদ্ধ। এটা নিয়ে যারা আনন্দ করছে না আনন্দ করুন। উড়িষ্যার কথাই বলব-মিছা কউ মনকে পাও।”
