Dilip Ghosh: বিয়ে করে কলকাতায় রেখে খড়্গপুর দিলীপ ঘোষ, উপহার নিয়ে এসে হতাশ কর্মীরা
খড়গপুর: বিয়ের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই স্ত্রীকে কলকাতায় রেখে একাই খড়্গপুরে দলীয় কার্যালয় হাজির হয়ে গেলেন বিজেপির নেতা দিলীপ ঘোষ। শনিবার রাত আটটা নাগাদ খড়্গপুরে রেলওয়ে বাংলোতে তিনি হাজির হয়েছেন। কর্মীরা আগে থেকেই জানতেন তিনি আসবেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বিজেপি পুরুষ ও মহিলা কর্মীরা, নতুন বৌদিকে বরণ করবেন বলে উপহার ফুল নিয়ে হাজির হলেও একাকী দিলীপ ঘোষ কে দেখে হতাশ হয়ে যান। শেষ পর্যন্ত সেই সমস্ত উপহার দিলীপ ঘোষকেই দিয়ে দেন। ২৪ ঘন্টার মধ্যে স্ত্রীকে ছাড়া হাজির হওয়াতে নানা রকম জল্পনা তৈরি হয়। তবে দিলীপ ঘোষের এদিনই জন্মদিন ছিল। একা দিলীপ ঘোষ কে নিয়েই পুরুষ ও মহিলা বিজেপি কর্মীরা কেক কেটে সেলিব্রেশন করলেন রাতেই। তবে একাধিক জল্পনার জবাব দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ সাংবাদিকদের সামনে।
রবিবার বামেদের ব্রিগেড প্রসঙ্গে কটাক্ষ করেছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন- “বামেদের সিলিন্ডার খালি হয়ে গেছে অক্সিজেন আর কোথায় পাবে ? ওরা শুধু বছরে একবার ব্রিগেড করে বোঝায় যে পার্টিটা এখনো উঠে যায়নি, আছে এখনো। সেটারই প্রমাণ দিচ্ছে এবারও। গত নির্বাচনের আগেও জোট সঙ্গীদের নিয়ে ব্রিগ্রেড করেছিল। তাতে লাভ কি হয়েছে? ফলাফল তো একই আছে। ওরা বোঝার চেষ্টা করে কতজন লোক ওদের সঙ্গে আছে। ওদের যত জন ভোটার, ততজনই ক্যাডার, আর ততজনই ব্রিগেডে আসে।”
বিয়ে করে কলকাতায় রেখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আলাদা হাজির হলেন খড়্গপুরে। স্ত্রী ছাড়া দিলীপ ঘোষকে নিয়ে জল্পনা তৈরি হয় কর্মীদের মধ্যেই। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা দিলীপ ঘোষ কে জিজ্ঞাসা করলে দিলীপ ঘোষ বলেন-“অনেকে তো মনে করেছিলেন দিলীপ ঘোষ বিয়ে করবে না, কিন্তু বিয়ে করেছে। কে কি মনে করলো তাতে কি যায় আসে। চিন্তা করতে তো আর মানুষের পয়সা লাগে না। যে যাই ইচ্ছা ভেবে যাক।”
কুনাল ঘোষ বলেছেন বৌদিকে অনুরোধ করবো দিলীপ দা কে মধু খাওয়াতে-এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন-” উনি নিজে মধু খেয়েছেন কখনো। আগে উনি খান। তারপরে না হয় অন্য লোককে বলবেন। উনি কি খান আমরা জানি। তা না হলে উল্টোপাল্টা বকেন কেন। বৌদিকে জ্ঞান দিতে হবে না।”
দিলীপ ঘোষ কে বাংলো থেকে উৎখাত করার জন্য রেলকে চিঠি দিয়েছিল খড়গপুর তৃণমূল। পাল্টা বিজেপির পক্ষ থেকেও খড়গপুর ডি আর এম অফিসে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তারপরেই রেলের পক্ষ থেকে হিসেব করে ২১ টা তৃণমূল কার্যালয় ও ১২ টা বিজেপি কার্যালয়, যা খড়্গপুরে রয়েছে তা সরানোর জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন-” বাংলো তো আর ভাঙতে পারবেনা। কিন্তু তৃণমূলের অফিস ভাঙতে হবে। পেছনে লাগলে এরকমই হবে। ভাঙিয়ে ছাড়বো। মুর্শিদাবাদে যেমন হিন্দুরা ঘর ছাড়া হয়েছে, এখানে তৃণমূলের লোকেদের ঘর ছড়া করে ছাড়বো। তৃণমূলের গুলো সরলে আমরাও আমাদের এগুলো সরিয়ে নেব। উত্তরপ্রদেশে যেমন ভাঙ্গা হয়েছে এখানেও হবে।”
শাস্ত্র অনুসারে বিয়ের পরই স্ত্রীকে নাকি সঙ্গ ছাড়া করা যায় না, অথচ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্ত্রীকে ছেড়ে খড়্গপুরে দিলীপ ঘোষ। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ কে জিজ্ঞাসা করা হলেও তিনি বলেন-” শাস্ত্র মেনেই আনিনি। বিয়ের পরের দিন বউয়েরা বাড়ির বাইরে যায় না। জোড় বলে কি হাতে ধরে ধরে ঘুরে বেড়াবে? এখানেও আসবেন। এখানে আমার মা এসেছেন। স্ত্রীও আসবে। কর্মীরাও চান, তাছাড়া উনিও পার্টির কর্মী। সুযোগ পেলেই এখানে আসবেন।”
তৃণমূলের খড়্গপুরের মহিলা কর্মী, যারা কয়েকদিন আগেই দিলীপ ঘোষকে বিক্ষোভ দেখিয়ে গন্ডগোল শুরু হয়েছিল। তারাও দিলীপ ঘোষকে ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানাবেন বলে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন-” তাতে কি যায় আসে? আমি কি ওদের কাছে শুভেচ্ছা চেয়েছি। বরং ওরা গিয়ে মুশিদাবাদের হিন্দুদের শুভেচ্ছা জানাক। সেখানকার হিন্দুদের সঙ্গে ওদের পার্টি যা দুর্ব্যবহার করেছে।”
