JSW Salboni : “জিন্দাল ইস্পাতে”-এর বদলে ১৬ হাজার কোটির “জিন্দাল তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র” হচ্ছে শালবনিতে, শিলন্যাসে মমতা বন্দোপাধ্যায়৷
শালবনী : ২০০৮ সালে বাম আমলে প্রথম পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীতে পা রেখেছিল শিল্পপতি সজ্জন জিন্দাল ৷ পাঁচ হাজার একর জমির ওপরে এশিয়া মহাদেশের সব থেকে বড়ো ইস্পাত কারখানা তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছিলেন ৩৫ হাজার কোটি বরাদ্দে ৷ সব ঠিকই ছিল , শিলন্যাসে আসা মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে ল্যান্ডমাইন ব্লাস্ট সব থমকে দেয় ৷ সেই কারখানা আর হয় নি ৷রাজ্য সরকারের অনের চেষ্টাতে সেখানে ছোট সিমেন্ট কারখানা হয়েছিল ৷ অবশেষে সেই জমিতেই ইস্পাত না হলেও এবার ১৬ হাজার কোটির তাপ বিদ্যুত প্রকল্প শুরু হতে চলেছে ৷ তাও আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের হাত ধরে ৷ ২১ এপ্রিল সেই পড়ে থাকা জমিতেই ৮০০ মেগাওয়াটের দুটি পাওয়ার প্ল্যান্টের শিলন্যাস হবে ৷ তাতেই আশা জাগতে শুরু করেছে হতাশ জঙ্গলমহলে ৷
প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, ২১ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় হেলিকপ্টারে করে হাজির হবেন সরাসরি শালবনীর সেই জামবেদিয়া এলাকার জিন্দাল কারখানা চত্বরে ৷ জেএসডব্লু নামের সেই কোম্পানির কারখানা চত্বরে ইতিমধ্যেই একটি সিমেন্ট কারখানা রয়েছে ৷ প্রায় ৫ হাজার একর নেওয়া জমির কিছুটাতে জিন্দালেরা ছোট সিমেন্ট কারখানা করলেও বাকিটা পতিত পড়েই ছিল প্রাচীর দিয়ে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ২০১৬ সালে সেই সিমেন্ট কারখানার শিলন্যাস করেছিলেন ৷ ২০১৮ তে সেই কারখানা উত্পাদন শুরু করে ৷ বেড়েছে সেই কারখানার পরিধি ৷ পাশেই রং তৈরীর কারখানাও হচ্ছে জিন্দালের ৷ এবার সেখানেই হচ্ছে ৮০০ মেগাওয়াট করে দুটি তাপবিদ্যুত কেন্দ্র ৷ যার শিলন্যাস করবেন ২১ এপ্রিল মমতা বন্দোপাধ্যায় ৷ সেখানে শিলন্যাস করে সড়ক পথে মুখ্যমন্ত্রী হাজির হবেন মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে ৷ রাতে সেখানে থেকে পরদিন দুপুরে মেদিনীপুর শহরের মেদিনীপুর কলেজ মাঠে প্রশাসনিক সভা করবেন তিনি ৷ থাকবে নানা শিসন্যাস ও পরিষেবা বিলি ৷ যার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে ৷
২০০৮ সালে ২ নভেম্বর বাম সরকারে আমলে শালবনীর জামবেদিয়াতেই তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে ইস্পাত কারখানার শিলন্যাস হয়েছিল ৷ জিন্দাল বলেছিল ৫ হাজার একর জমির ওপরে এশিয়ার বৃহত্তম ইস্পাত কারখানা করবেন ৷ যেখানে বাজেট ছিল ৩৫ হাজার কোটি ৷ তাকে ঘিরে আশার আলো দেখেছিল জঙ্গলমহল ৷ কিন্তু শিলন্যাস সেরে ফেরার পথেই মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টচার্যের কনভয়ে মাওবাদীদের ল্যান্ড মাইন ফাটানো সমস্ত কিছু থমকে দেয় ৷ ঘটনার জেরে শুরু মাওবাদী আন্দোলন দেখে জিন্দাল সব বন্ধ করে রেখে দেয়৷ সরকারটাই পাল্টে যায়৷ জমি পর্যন্ত ফেরত দিতে চেয়েছিল জিন্দাল ৷ কিন্তু পরে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দোপাধ্যায় উদ্যোগ নিয়ে সিমেন্ট কারখানা চালু করান ৷ তাতও হতাশ হয়েছিলেন শালবনীর জমি দাতারা ৷ কাজের আশায় বসেছিলেন ৷ অবশেষে বড়ো বিদ্যুত কেন্দ্র তৈরী হতে দেখে আশার আলো দেখচেন সকলেই ৷
স্থানীয় ল্যান্ড লুজার এসোসিয়েশন এর সম্পাদক পরিষ্কার মাহাতো বলেন- “আমরা সকলেই হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম । কিন্তু ভরোসা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ওপরে । তাই হল , নতুন উদ্যোগে জঙ্গলমহলের বহু বেকার ও জমিদাতারা চাকরি পাবেন এবার । সকলেই খুশি”। একই রকমের বক্তব্য অন্যদেরও ৷