Ghatal master plan: মাস্টার প্ল্যানের জন্য মাঠে নামছে দেব এর কমিটি, শুনেই দেবকে আশীর্বাদ ৯১ বছরের বৃদ্ধের
ঘাটাল : ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের বরাদ্দ হতেই এবার মাঠে নামার প্রস্তুতি বৈঠক হল রবিবার দুপুরের পরে ঘাটালে । যেখানে হাজির ছিলেন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভুঞা, সাংসদ দেব, জেলা শাসক খুরশেদ আলি কাদেরী, পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার সহ ঘাটাল সংসদ এলাকার শাসকদলের বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধিরা । এদিন আড়াই ঘন্টা ধরে বৈঠকে প্রতি ব্লক অনুসারে একটি করে মাস্টার প্ল্যান সাব কমিটি তৈরী হয়েছে । যারা সংশ্লিষ্ট এলাকার ওপরে থাকা নদী পথের স্থানীয় জমি দাতাদের সাথে কথা বলে কাজ এগোতে সহযোগীতা করবেন। কারন এই মাস্টার প্ল্যানের জন্য দাসপুরের চন্দ্রেশ্বর খাল সংলগ্ন এলাকার জমির মালিকেরা জমি দিতে রাজি নয়৷ যা নিয়ে জটিলতা তৈরী হয়েছে ৷ সেই সমস্ত দিক মাথায় রেখেই এই কমিটি তৈরী করা হয়েছে প্রতিটি ব্লক ধরে ৷ যাদের কাজ হবে মানুষকে বোঝানো ৷ বৈঠক সেরে সে বিষয়ে দেব জানালেন বিস্তারিত ৷ তবে কটাক্ষ করে বিজেপির ঘাটালের বিধায়ক শীতল কপাট বলেন- “বৈঠকে শুধু শাসকদলের নেতা মন্ত্রীরা ছিলেন ৷ আমি এখানকার বিজেপির বিধায়ক বলে আমাকে বৈঠকে ডাকা হয় নি ৷ কারন তাহলে তাদের কারচুপি সব ধরা পড়বে ৷ সকলকে অনুরোধ করবো এই প্রকল্পের দিকে নজর রাখার জন্য৷” সেই সাথে সিপিএমের স্থানীয় নেতা অশোক সাঁতরাও এই মাস্টার প্ল্যানের পরিকল্পনা নিয়েও সন্দিহান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন
বৈঠকের পরে দেব বলেন “এই বৈঠকে আধিকারিকরা সহ বিভিন্ন কৃষকদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তাদের মধ্যে এই মাস্টারপ্ল্যান বিষয়ে কি কি চলছে, কারো কোন সমস্যা রয়েছে কিনা সে নিয়ে কথা বলেছি। অনেকেই ভাবছে আমাদের এলাকার উপর দিয়ে নতুন করে নদী খনন করে নিয়ে গেলে তাদের এলাকা প্লাবিত হতে পারে, সেই সমস্ত ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই সমস্ত লোকদের বোঝানো হচ্ছে তাদের এলাকায় কেন ক্ষতি হবে না। আজকের বৈঠকের পর এই ধরনের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলার জন্য কাল থেকে আবার আধিকারিকরা মাঠে নামবে। বিরোধীরা বিরোধিতা করতেই পারে। মনে রাখবেন, এই লোকসভা কেন্দ্রের সাতটা বিধানসভার ছটাই তৃণমূলের। বাকি থেকে যাওয়া একটা বিধানসভার জন্য কেউ কখনো দু হাজার কোটি টাকা দেবে না। এটা সমস্ত ঘাটালবাসীর জন্য বরাদ্দ। এর পেছনে কোন রাজনীতি নেই। এটা ঘাটালের মানুষের জয় এবং সুস্থ রাজনীতির জয়। ভোটের আগে কথা দিয়েছিল এবং ভোটে জেতার পর কথা রাখছে। অনেকের নির্বাচনের আগে অনেক কিছু প্রতিশ্রুতি দেয় পরে তা ভুলে যায়। কিন্তু এই সরকার বা এই নেত্রী নির্বাচনের আগে যা বলেছিলেন তা করে দেখাচ্ছেন। আমি নিজে দাঁড়াবো না বলেছিলাম, কিন্তু দেখলাম এই একটা সুযোগ যদি আমি দাঁড়িয়ে মানুষের মাস্টার প্ল্যান করে দিতে পারি তাহলে ভালো হবে। আরামবাগ থেকে কথা দিয়েছিলেন, যেখানে যেখানে আমি বলেছিলাম সেখানে গিয়েও ছিলেন। অভিষেকবাবু নিজে এসে কথা দিয়েছিলেন, সেইমত আজকে জেতার এক বছরও পূর্ণ হয়নি। তার মধ্যে ১৫শ কোটি টাকার প্রোজেক্ট কাজে নেমে পড়েছে। এটা কিন্তু ভোটের রাজনীতি নয়, মানুষকে সুস্থ রাখার রাজনীতি।”
ঘাটালের মাস্টার প্ল্যান রূপায়ন করতে গিয়ে বড় বাঁধা হয়েছে চন্দ্রেশ্বর খাল খনন করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধা দেওয়া। তাদের ধারণা তাদের এলাকা দিয়ে নদী খনন করে নিয়ে গেলে বন্যার সময় তাদের এলাকায় বন্যা তৈরি হবে। সেই চন্দ্রেশ্বর খাল খনন প্রতিরোধে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। যারা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করতে চলেছে আগামী কয়েকদিনে।
সেই প্রসঙ্গে দেব বলেন-” যদি অরাজনৈতিক কোন সংগঠন আসে সাধুবাদ জানিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলব। আজ থেকে আমাদের একটি বিশেষ কমিটি গঠন হয়েছে। সেই কমিটি গিয়ে কথা বলবে তাদের সঙ্গে। কোন যুক্তিতে এই নদীর রুট ম্যাপ তৈরি হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণ হলে তাদের যে কোন ক্ষতি হবে না সেটা বোঝানোর কাজ শুরু হবে। এবং সেখানে দেখানো হবে যে তৈরি করা গেট থেকে তৈরি করা নদী দিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল ছাড়া হবে, যা কখনো বন্যা তৈরি করবে না। তাদের হাজারটা প্রশ্ন থাকতে পারে, আমাদের নিজেদের পাঁচ হাজার প্রশ্নের উত্তর তৈরি করে তাদের কাছে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছি। আজকে পর্যন্ত সেই প্রস্তুতি নিয়েছি কাল থেকে মাঠে নামবে সকালে। মানুষের ভয় বা ভুল বোঝা মেরামত করা হবে।”

বৈঠক স্থলে উপস্থিত ৯১ বছরের এক বৃদ্ধ গোপাল নন্দী দেবের কাছে হাত জড়ো করে বলেন- “আমি ভগবানকে জানি, আর আপনাকে জানি৷ এবার আপনার হাত ধরে হয়তো ঘাটাল মুক্তি পাবে ৷ এজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ৷”