Elephant recovery: কুয়োতে বাচ্চা, জেসিবি-কে সাহায্য করল মা হাতি, দাঁড়িয়ে দেখলেন শতাধিক গ্রামবাসী

শালবনী: রাতে মা-এর দলের সাথে ঘুরতে বেরিয়েছিল ছোট্ট হাতির বাচ্চা ৷ দলের সাথে দুষ্টুামি করতে করতে হটাত্ অসাবধনতা বশত পড়ে যায় বাঁশবাগানে পাতায় ঢাকা কুয়োতে ৷ তারপরই চিত্কার৷ মা ও হাতি ছানা সকলের চিতকারে রাতের বেলা আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরী হয়েছিল গ্রামের পাশে ৷ গ্রামবাসীরা বুঝেছিলেন কোথাও সমস্যা কিছু হয়েছে ৷ জঙ্গলের বাসিন্দারা হাতিদের অভ্যাস জানতো ৷ সেই মতো টর্চ মেরে বুঝতে পারে পুরো ঘটনা ৷ দেখতে পায় মা হাতির সাথে রয়েছে আরও ৫টি বুনো হাতি ৷ তারপরই গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে শুরু হয়ে তাদের সহযোগীতার প্রক্রিয়া৷ বনদফতর ও গ্রামবাসীদের দীর্ঘ চেষ্টায় গভীর রাতে কুয়ো খুড়ে উদ্ধার ৷ তবে তাতে যে ঘটনা ঘটলো তা দাঁড়িয়ে উপভোগ করলেন গ্রামবাসীরা ৷ দেখলে মা হাতি সাহায্য করছে জেসিবি মেসিনের কুয়ো খোঁড়ার কাজে ৷ কাউকে আক্রমন না করে সুঁড় বাড়িয়ে যেনো সহযোগীতা করলো বনদফতরের জেসিবিকে৷  ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনীর পিড়রাকুলি এলাকাতে৷

স্থানীয় বনকর্তারা জানিয়েছেন- শালবনীর পিডরাকুলি সংলগ্ন এলাকাতে কয়েকদিন ধরেই ৬ টি হাতি ঘোরা ফেরা করছিল ৷ হাতির দলে একটি বাচ্চা ছিল ৷ সেই বাচ্চাটি মা এর সাথে ঘুরতে বেরিয়ে সোমবার রাত দশটা নাগাদ গ্রামের পাশে একটি বাঁশ বাগানের ভেচনে পাতায় ঢাকা কুয়োতে পড়া যায় ৷ কুয়োটি আগে সেচের কাজে ব্যাবহার করা হতো ৷ প্রায় ১৫ ফুটের বেশি গভীর কুয়োছিল সেটি ৷ বাচ্চাটি খেলতে গিয়ে হয়তো পড়ে যায় ৷ এরপরই মা হাতি সহ দলের হাতিরা চেঁচামেচী শুরু করে দেয় ৷ রাতেই গ্রামবাসীরা হাতির আওয়াজে বুঝতে পেরে যায় কোনো কিছু ঘটে গিয়েছে ৷ পরে টর্চ মেরে পুরো বিষয়টা বুঝতে পেরে বনকর্মীদের খবরে দেয় ৷

রাতেই বনকর্মীরা খবর পেয়ে সেখানে হাজির হয় ৷ কুয়োর পরিস্থিতি দেখে সেখানে জেসিবি নিয়ে যাওয়া হয় ৷প্রথমে হাতির দল আক্রমন করতে পারে এমন মনে করে হুলা পার্টি রাখতে হয় ৷ আলো জ্বালাতে হয় ৷ কিন্তু হাতির পাল সেভাবে আক্রমনাত্মক ছিলনা ৷ কোনোভাবে হাতির দল হয়তো বুঝতে পেরেছিল যে গ্রামবাসীরা তাদের সহযোগীতা করছে ৷ তাই মা হাতি সামনে থেকে বনকর্মীদের জেসিবিকে যেন সহযোগীতা করছিল ৷ প্রায় দুঘন্টা জেসিবির ফলার সামনে সুঁড় দিয়ে কাকুতি মিনতি করতে দেখা গিয়েছে মা হাতিকে ৷ বুলডোজার দিয়ে মাটি খোঁড়া শুরু হলেও হস্তি শাবককে ছেড়ে পিছু হটেনি হস্তিনী। পুরো উদ্ধার কার্যে একই রকম ভাবে দাঁড়িয়েছিল। মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছিল বুলডোজারের সঙ্গে হস্তিনীও শুঁড় বাড়িয়ে বাচ্চাকে তোলার চেষ্টা করছিল। বনকর্মীরা একসময় থমকে গিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন ওইভাবে শুঁড়ে আঘাত লেগে যেতে পারে। কিন্তু না। কোন মানুষকে তাড়া না করে বুলডোজারের উপর আক্রমণ না করে শাবককে নিয়ে জঙ্গলে ফেরত গেল। হস্তিনির এইরূপ আচরণে হতবাক বনকর্মী থেকে উপস্থিত মানুষজন। কুয়োর পাড় চওড়া করে শাবককে তুলে দিতেই মা হাতি সকলের দিকে কিছুক্ষন স্তব্ধ ভাবে তাকিয়ে বেরিয়ে যায় বাচ্চা সহ ৷ স্বাস্তি ফেরে গ্রামবাসীদেরও ৷

YouTube player
   

বনকর্মীরা বলছেন, এর আগে দেখা গিয়েছে কোন শাবক কুঁয়োয় পড়ে গেলে হাতিরা তাড়া করে নিয়ে আসে, মশাল জাললে তারা দূরে চলে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে হস্তিনী তার শাবককে ছেড়ে এক পাও পেছোয়নি। লালগড় রেঞ্জের আধিকারিক লক্ষীকান্ত মাহাত বলেন, “একটি শাবক কুঁয়োতে পড়ে গিয়েছিল। তাকে উদ্ধার করে সুস্থ অবস্থায় জঙ্গলে ফেরত পাঠানো গিয়েছে। হাতিদের বিরক্ত না করলে তারাও আক্রমণ করে না। হয়তো হাতিটিও বুঝতে পেরেছিল তার শাবককে উদ্ধার করার আমরা চেষ্টা করছি। সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল কোনরূপ আমাদের উপর আক্রমণ না করে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page