Employment : শুধু চাকরি নয়,শিল্প উদ্যোগী হৌন বেকার যুবক-যুবতীরা: শিল্প সিনার্জীতে আহবান মন্ত্রীর

মেদিনীপুর : রাজ্য থেকে কেন্দ্র কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এক অদ্ভুত জটিলতা তৈরি হয়েছে বর্তমান মুহুর্তে । মামলা জটিলতায় বহু বেকার যুবক-যুবতী নিয়োগ পাচ্ছেন না এই রাজ্যেও। এই পরিস্থিতিতে বেকার যুবক যুবতীদের শিল্পদ‌্যোগী হওয়ার আহ্বান জানালেন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়‌্যা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারে অনুষ্ঠিত ‘সিনার্জি’তে যোগ দিতে এসে ওই মন্তব্যই করেছেন তিনি। হাজির ছিলেন ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাও।

শুক্রবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরে এই সিনার্জি-এর আয়োজন করা হয়েছিল মেদিনীপুর শহরে প্রদ্যুত স্মৃতি সদনে। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া বলেন -“শিল্প সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে হবে। আর তাহলেই বাড়বে কর্মসংস্থান। ঘুচবে বেকারত্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ইচ্ছাতেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারে সিনার্জির মাধ্যমে হাজির হয়েছে দুয়ারে সরকার। শিল্পোদ্যোগীদের মুখ থেকে সমস্যা শুনে তৎক্ষনাৎ সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চাকরী দিয়ে সবাইকে সন্তুষ্ট করা যায় না।” মন্ত্রী আরো জানিয়েছেন-“চাকরীর আশায় বসে না থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে অপরকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করুন।” ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসারে অনুষ্ঠিত ‘সিনার্জি’তে যোগ দিতে এসে একই রকম মন্তব্যই করেছেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা সহ অন্যান্য রাও।

মানসবাবু, চন্দ্রনাথবাবু ছাড়াও হাজির ছিলেন জেলা সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি, জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরী, পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার, বিধায়ক দীনেন রায়, সুজয় হাজরা প্রমুখ। এদিন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে সমণ্বয় সাধনের জন্য দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামকে নিয়ে সিনার্জি অনুষ্ঠিত হয় জেলা পরিষদ হলে তথা প্রদ্যুৎ স্মৃতি সদন হলে। কয়েকশো শিল্পদ্যোগী হাজির ছিলেন। ডাকা হয়েছিল বিদ্যুৎ, পরিবেশ থেকে শুরু করে শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিভাগগুলিকেও।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলাশাসকের দাবি -চলতি আর্থিক বছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ার ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমান ঋণ দিয়েছে ব‌্যাঙ্কগুলি।এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৪৯৮৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে বা ঋণের অনুমোদন দিয়েছে। শুধু তাই নয়, ভবিষ‌্যৎ ক্রেডিট কার্ডের মাধ‌্যমে এই তিন জেলায় ব‌্যাঙ্কগলি মোট ৫৫৯৯ টি ঋণের আবেদন অনুমোদন করেছে। যার পরিমাণ ১০৮.২০ কোটি টাকা। এদিন মঞ্চে উপস্থিত ক্ষুদ্র মাঝারী শিল্প দপ্তরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বক্তব্যে বলেন -“পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে কাজু বাদাম প্রক্রিয়াকরণ ক্লাস্টারের জন‌্য একটি সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র স্থাপনের জন‌্য ২.৪৬ কোটি টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওই কেন্দ্রে কাজু প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ১৩০০ জন উপকৃত হবেন। আবার পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং ব্লকের অধীন রুইনানে ৫ কোটি টাকা ব‌্যয়ে মাদুর হাব তৈরি হয়েছে। যেখানে ওই ব্লকের কুড়ি হাজারেরও বেশী কারিগর ওই হাবের সুবিধা পাচ্ছেন। পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরেরই দাসপুর দুই ব্লকের ফরিদপুরে ৭.৭৮ কোটি টাকা ব‌্যয়ে একটি গোল্ড হাব তৈরি হচ্ছে। এতে প্রযুক্তি, দক্ষতা, উৎপাদনশীলতা এবং গুঁনমান বাড়বে। প্রায় ১২৫০ কারিগর এখানে নিরাপদ ও দূষণমুক্ত পরিবেশে কাজ করার সুযোগ পাবেন।”

সিনার্জিতে যোগ দিয়ে বক্তারা বেশিরভাগই নিজেদের বক্তব্যে চাকরির তুলনায় ছোটখাটো শিল্পের জন্য সকলকে উৎসাহ দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন। মঞ্চে উপস্থিত বিধায়ক সুজয় হাজিরা বলেন-” অবিভক্ত মেদিনীপুরেরই অংশ পূর্ব মেদিনীপুর ঝাড়গ্রামও। এই তিন জেলাতে বর্তমানে শিল্পক্ষেত্রে একটা নতুন যুগ এসেছে। আমরা আমাদের শাসক দলের পক্ষ থেকে কোথাও কোনো কারখানা বা শিল্প ক্ষেত্রে যাতে কোনোভাবে বাধার মুখোমুখি কেউ না পড়ে সেদিকে তৎপর রয়েছে। সকলেই নজর রাখছি এই ধরনের শিল্প কলকারখানার শ্রী বৃদ্ধির দিকে। যার ফলে কলকারখানার অনেক বেশি বিস্তার ঘটেছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কর্মসংস্থান। তাই আরো সকলকে বড় শিল্প ছাড়া ছোটখাটো শিল্পের জন্য উদ্যোগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাবো।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page