Accident: দিঘির পাড়ে প্রচণ্ড গতিতে গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা, মেদিনীপুরে চালকসহ মারুতি প্রায় ১৫ ফুট গভীর জলে
মেদিনীপুর: শনিবার সন্ধ্যা ছ-টা নাগাদ একটি মারুতি কার মেদিনীপুর শহরের পঞ্চুরচক থেকে রাজারদীঘি পাড় সংলগ্ন এলাকায় হাজির হয়। গাড়িতে ছিলেন দুই যুবক। রাস্তার শেষ প্রান্তে এসে তারা দেখেন সামনে রয়েছে একটি বড় দীঘি। অগাত্যা সরু গলিতেই গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান -প্রচন্ড গতিতে সেই গাড়ি ঘোরাতে গিয়ে বাঁধানো পাড় থেকে গভীর দিঘির জলে সজরে গিয়ে পড়েন গাড়ি সহ চালক। শীতের সন্ধ্যায় চালকসহ মারুতি জলে পড়তেই মারুতি ধীরে ধীরে ডুবতে শুরু করে। চালক বেরোনোর ক্ষেত্রে তৎপরতা দেখাতে পারেননি। সঙ্গে থাকা অপরজন তাঁকে কোনো ভাবে সেখান থেকে উদ্ধার করেন। এরপরেই ডুবে যায় গাড়ি। তারপরেই প্রচুর কৌতুহলী মানুষদের ভিড় হয় সেখানে। অনেক রাত পর্যন্ত চেষ্টা করেও গভীর জলে ডুবে থাকা গাড়ির সন্ধান পেলনা উদ্ধারকারীরা ৷

রাজারদিঘীর পাড় সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ইতি ঘোষ বলেন- ” আমি ইভিনিং ওয়াকে বেরিয়েছিলাম। হঠাৎ দেখলাম একটি মারুতি ভ্যান প্রচন্ড জোরেই এল। গাড়িতে দুজন ছিল। একজন নেমে অপরজনকে গাড়ি ঘোরানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছিল। কিন্তু গাড়ির চালক সম্ভবত নিজে চালক ছিলেন না। তিনি প্রচন্ড জোরে সেই গাড়ি-ঘোরাতে গিয়ে দীঘির ধাপ এর ওপর দিয়ে গাড়িকে সোজা গিয়ে পুকুরে নামিয়ে দেন। গাড়িটা ধীরে ধীরে গভীর জলে ডুবতে শুরু করে। আমরা বারবার চালককে সেখান থেকে যে কোনভাবে বেরোতে বলি। কিন্তু সে বেরোনোর মত অবস্থায় ছিল না। এর পরের তার সঙ্গে থাকা যুবক দ্রুত তাকে গিয়ে সেখান থেকে বের করে। চোখের সামনে গাড়িটা ধীরে ধীরে ডুবে যায় জলে।”
ঘটনা মেদিনীপুর পৌরসভা এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে রাজারদিঘির কাছে হওয়ায় ছুটে আসেন স্থানীয় কাউন্সিলর সৌরভ বসু। প্রচুর মানুষ ভিড় করতে থাকেন। কাউন্সিলর উদ্যোগ নেন সেই গাড়িকে উদ্ধার করার। সেইমতো একটি জেসিবি ডাকা হয়। কিন্তু সেই জেসিবির কর্মীরা ধাতব তার দিয়ে গাড়িটাকে বেঁধে তোলার উদ্যোগ নিলেও, উদ্ধারে আসা কর্মীরা গভীর জলে নেমেও অনেকটা গভীর জলে ডুবে থাকা গাড়ির সন্ধান করতে পারেননি। ফলে উদ্ধারকারী ২ যুবক জলে ডুবেও সেখান থেকে ফিরে আসতে বাধ্য হন। এই অবস্থায় বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে হয় আয়োজকদের। সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া হয় রবিবার দিনের বেলা সেই গাড়িকে উদ্ধার করার চেষ্টা হবে। তবে এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা অর্জিত বেরা বলেন -” সংকীর্ণ এই গলিতে যেভাবে গাড়িটি ঘোরানোর চেষ্টা হয়েছিল তা অস্বাভাবিক ছিল। তারপরে গাড়ি এখান থেকে সজরে গিয়ে জলে পড়েছে। যা দেখেছি তাতে মনে হয়েছে ওই চালক নেশায় আসক্ত অবস্থায় ছিলেন। এই কারণেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।”
কাউন্সিলর সৌরভ বসু বলেন- ” এই এলাকাতে বহু মানুষ সন্ধ্যেবেলা ইভিনিং ওয়াকে বের হন। তারা ছাড়াও প্রচুর বাচ্চা, কম বয়সী ও বেশি বয়সী লোকজন হাঁটাহাটি করেন এখানে। বাইরে থেকে যেকোনো গাড়ি ঢুকে আবার বেরিয়ে যাচ্ছে- এই বিষয়গুলি নজর রাখার সময় এসেছে। এটি থেকে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। আমাদের এবার এই বিষয়ে অন্যরকম দৃষ্টি দিতে হবে যা বুঝতে পারছি।”
তবে এদিন অনেকটা চেষ্টা করার পরেও গভীর জলে ডুবে থাকা গাড়িটাকে উদ্ধার করতে পারেনি কেউই। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুসারে দীঘিতে গভীর জল থাকায় গাড়িটি একেবারে জলের তলায় ডুবে গিয়েছে। কমপক্ষে ১০ ফুট গভীরে গাড়ি রয়েছে। তাই উদ্ধারকারী লোকজন এসেও গাড়ির সন্ধান বা নাগাল পায়নি জলে। রবিবার দিনের বেলা পুনরায় উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলর।