Potato : “আমাদের আলু নিম্নমানের, বাইরে যেতে দিতে হবে, না হলে সব বন্ধ করে দেব” হুঁশিয়ারি আলু ব্যবসায়ীদের
গড়বেতা: রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে এই রাজ্যের আলু ভিন রাজ্যে রপ্তানি করা আপাতত বন্ধ। রাজ্যের সীমান্তগুলিতে নাকা পয়েন্ট করে পুলিশ আলু গাড়ি আটকে দিতেই বেঁকে বসলেন আলু ব্যবসায়ীরা। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে রবিবার সন্ধ্যায় জানানো হয়েছে-” আমাদের জেলায় উৎপাদিত আলুর মান নিম্নমানের। যা ওড়িশা বিহার মধ্যপ্রদেশ ঝাড়খণ্ডে রপ্তানি হয়ে থাকে। সেই আলু রপ্তানি না করতে দিলে দুদিনের মধ্যে বাকি সমস্ত ব্যবসা বন্ধ করে দেবো আমরা। বড় ধর্মঘটে নামছি।” তবে তার আগেই রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রীর পক্ষ থেকে বৈঠক রাখা হয়েছে সোমবার। অপেক্ষায় সব মহলই৷
চলতি বছরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৯২ টি হিমঘরে ২ কোটি ৯০ লক্ষ প্যাকেট আলু লোড করা হয়েছিল। সেই আলু বিভিন্ন সময়ে বের করে বিক্রি হয়েছে বা জেলায় ব্যবহারের জন্য কাজে লেগেছে। বর্তমানে এই আলুর প্রায় ৩৩ লক্ষ প্যাকেট মজুদ রয়েছে হিমঘরগুলিতে। যা নভেম্বর মাসের মধ্যেই ইতিপূর্বে প্রশাসন খালি করে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু শনিবার নতুন করে সেই সময়সীমা ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। তবে মজুদ ৩৩ লক্ষ প্যাকেট আলু ভিন রাজ্যে বেশিরভাগটাই রপ্তানি করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল আলু ব্যবসায়ীরা। সেই রপ্তানি করতে যেতেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিধি নিষেধ আরোপ।
বর্তমান বাজারে আলুর দাম চড়া, তাই বাজারের এই সমস্ত সবজির দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আপাতত ভিন রাজ্যে আলু রপ্তানি নিষেধ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ভিন রাজ্যে রপ্তানির সীমান্ত পথগুলিতে পুলিশের নাকা পয়েন্ট বসিয়ে আলুর গাড়ি ফেরানো শুরু হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে এমন ছটি নাকা পয়েন্ট রয়েছে। এখানে গত পাঁচ দিনে প্রায় ৩০০ লরি আলু আটকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
প্রগতিশীল আলো ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সম্পাদক বরুন পন্ডিত জানিয়েছেন-” হঠাৎ করে কয়েকদিনে প্রায় ৩০০ লরি আলু আটকানো হয়েছে সীমান্তে। কয়েকদিন অপেক্ষা করার পর সেই আলু পচে যাবে এমন আশঙ্কা করে সকলেই হিমঘরে নিয়ে এসে বাইরে খালি করেছে। আমাদের জেলাতে উৎপাদিত আলু নিম্নমানের। K 22,পোখরাজ -এই ধরনের নিম্নমানের আলু ওড়িশা বিহার ঝাড়খন্ড মধ্যপ্রদেশে বিক্রি হয়। আর আমাদের জেলার জন্য হুগলি তারকেশ্বর থেকে আলু আসে। আমাদের জেলা থেকে উৎপাদিত আলুর ৮০ শতাংশই বাইরে রপ্তানি হয়। কিন্তু রাজ্য সরকার হঠাৎ করে এই রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় চরম লোকসান হবে আলু ব্যবসায়ীদের। যার জেরে সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে আলু উৎপাদনে। অবিলম্বে এই রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা শিথিল না করলে আমরা আলু ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ রাখবো আপাতত।”
সম্ভাব্য পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই রবিবার রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্নার পক্ষ থেকে আলু ব্যবসায়ীদের বৈঠকের জন্য আহ্বান করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে সেই বৈঠক হবে কলকাতায়। সেই বৈঠক থেকে একটা ইতিবাচক পরিস্থিতি আনার চেষ্টা হচ্ছে। আলু ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বরুণ পণ্ডিত জানিয়েছেন-” এই বৈঠকে যদি আমাদের ক্ষেত্রে ইতিবাচক কিছু না ঘটে। তাহলে সোমবার সন্ধ্যা থেকেই রাজ্য জুড়ে আমরা আলু ব্যবসা বন্ধ রাখবো। হিমঘর থেকেও কোন আলু বের করব না।”
ফলে কয়েক মাস আগে ব্যবসায়ীদের এই আন্দোলনের জেরে বাজারে কৃত্রিম আলুর সংকট তৈরি হয়েছিল। আলু ব্যবসায়ীদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পুনরায় একই পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাজারজুড়ে।তাই সকলেই অপেক্ষা করছেন সোমবারের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে ৷