Potato cultivation: আলু চাষের চরম মুহূর্ত, সুযোগ বুঝে ৫০০ টাকা অতিরিক্ত রাসায়নিক সারের দাম, অভিযানে মহকুমা শাসক
ঘাটাল: পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমা ও মেদিনীপুর সদর মহকুমার একটা বড় অংশে এই মুহূর্তে আলু চাষের চরম ব্যস্ততা। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা আলু চাষ করে নিজেদের ক্ষয় মেরামতের বড় উদ্যোগ শুরু করেছেন। আর সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে রাসায়নিক সারের কালোবাজারিরা। বিভিন্ন রাসায়নিক সারের দোকানের মালিকেরা প্যাকেটে লেখা দামের তুলনায় ৫০০ টাকা অতিরিক্ত নিচ্ছে হিসাববহির্ভূত ভাবে। তিন দফায় অভিযোগ পেয়েই অতর্কিত সারের দোকানে হানা দিলেন ঘাটালের মহকুমা শাসক। পরপর বিভিন্ন সারের গোডাউনে ঢুকে হিসেব নেওয়া শুরু করলেন বুধবার ৷ জানালেন- ব্যাবস্থা নেওয়া হবে৷
মূলত আলু চাষের জন্য সব থেকে বেশি রাসায়নিক সারের প্রয়োজন এই মুহূর্তে। এখন জমিতে আলু লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই আলু লাগাতে গিয়ে রাসায়নিক সার কেনার সময় প্রচন্ড চাপে পড়েছেন কৃষকেরা। এমনিতেই ঘাটাল মহকুমায় বেশিরভাগ কৃষক বন্যায় টানা ডুবে থেকে প্রচন্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষের দিকে। তাই বন্যার জল কমতেই দ্রুত আলু চাষ করে সেই ক্ষয় মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছেন। আলু রোপণ করতে যে রাসায়নিক সার লাগে সেই ইফকো কোম্পানির ১০-২৬-২৬ নামের প্যাকেট সারে ৫০০ টাকা অতিরিক্ত নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। অনেক কৃষকই প্যাকেটে লেখা দাম না দেখেই দোকানদারের বলা দামে কিনে নিয়ে দ্রুত কাজে নেমে পড়েছেন। তবে যারা একটু চালাক তারা প্যাকেটের দাম দেখে খানিটা তর্ক বিতর্ক করছেন। কিন্তু শেষমেষ বাধ্য হয়ে দোকানের বলা অতিরিক্ত দামেই নিতে হচ্ছে তাদের।ঘাটালের বিভিন্ন এলাকার সাথে ঘটছে গড়বেতা চন্দ্রকোনাতেও ৷
ঘাটালের এক চাষী সুকুমার মান্ডি বলেন-“ইফকো কোম্পানির এই রাসায়নিক সার এই মুহূর্তে আমাদের খুবই প্রয়োজন আলু রোপন করার ক্ষেত্রে। কিন্তু দোকানদার প্রায় ৫০০ টাকা বেশি নিচ্ছে আমাদের কাছে। অথচ কোন পাকা রশিদ দিচ্ছে না । উপায় না দেখেই আমাদেরকে সেটা নিতে হচ্ছে।” একই রকম বক্তব্য স্থানীয় অপর কৃষক বুলু মাইতির। তিনি বলেন-” প্যাকেটে দাম লেখা রয়েছে নেওয়া হবে ১৪৭০ প্রতি বস্তা। কিন্তু আমাদের কাছে নিচ্ছে ১৯০০ থেকে ১৯৫০ টাকা। প্রতিবাদ করলেও উপায় নেই।”
আরো এক কৃষক স্বদেশ জানা বলেন-” আমরা সামান্য ছোটখাট কৃষক। এই ধরনের বড় ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিবাদ করে কোন লাভ হবে না আমাদের। প্রশাসন বিষয়টা দেখলে সুবিধা হয়।” রাসায়নিক সারের ওই বস্তাতে দাম লেখা রয়েছে ২১০৯ টাকা প্রতি বস্তা। সেখানে সরকার এর ছাড় রয়েছে ৬৩৯ টাকা। সেই ছাড় দেওয়ার পর কৃষকের কাছে ১৪৭০ টাকা প্রতি বস্তা দাম নিতে হবে-এই পুরো হিসেব রাসায়নিক সারের বস্তার ওপর লেখা রয়েছে। তারপরেও কৃষকদের কাছে ১৪৭০ টাকার স্থানে নেওয়া হচ্ছে ১৯০০ থেকে ১৯৫০ টাকা।
ইতিমধ্যেই সেই অভিযোগ ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাসের দপ্তরে হাজির হয়েছে। বেশ কয়েকটি অভিযোগ পাওয়ার পর বুধবার দুপুরে পরপর রাসায়নিক সারের দোকানগুলিতে অভিযান চালানো হয়। মহকুমা শাসক বিভিন্ন আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে দোকানগুলির দাম পরীক্ষা করেছেন। এদিন মহকুমা শাসক বলেন-” আমরা হেল্পলাইন নম্বর সহ আমার নিজের নাম্বার ও অন্যান্য কৃষি আধিকারিকদের নম্বরও বিলি করেছি। এরকম কোথাও ঘটলে আমাদের সরাসরি জানান। ইতিমধ্যেই যে সমস্ত এলাকায় অভিযোগ পেয়েছিলাম সেগুলিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”