RGKar : “কংগ্রেস-সিপিআইএম ঢাল হয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে বাঁচাচ্ছে, ডাক্তারদের আন্দোলনকে ডাইভার্ট করা হচ্ছে” -বললেন দিলীপ ঘোষ

খড়্গপুর : মেদিনীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে খড়্গপুরে হাজির হয়েছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ৷ তিনি দলের প্রার্থী সহ কর্মীদের নির্বাচনের প্রচারের দিক নির্দেশ করতে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য রাখেন কর্মীদের সামনে ৷ সেখানে তিনি বলেন–“ পুজোর সময় ডাক্তাররা পর্যন্ত অনশন করেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তাই সেজন্য একটা অনুকূল বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। মানুষকে বোঝাতে হবে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিকল্প কেবল বিজেপি ৷ কংগ্রেস-সিপিআইএম ঢাল হয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে বাঁচাচ্ছে, ডাক্তারদের আন্দোলনকে ডাইভার্ট করা হচ্ছে৷”
কর্মীদের মন্ত্রনা দিতে দিলীপ ঘোষ বলেন- “সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে হাহাকার চলছে। আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। প্রতিদিনই মহিলাদের নিয়ে কিছু না কিছু ঘটছে। শিক্ষা স্বাস্থ্য রেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো টাকায় রাজ্য চলছে। কেন্দ্র সরকার চালডাল পাঠাচ্ছে বলে রাজ্যের মানুষ খেয়ে পরে বেঁচে আছে। মানুষ চিন্তার মধ্যে আছে। পুলিশের অবস্থা খুবই খারাপ। তাদেরও লোকে সন্দেহের চোখে দেখছে। তাদের কাছে লোকবল টাকা-পয়সা গাড়ি কিছুই নেই। থাকার ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। এই অবস্থায় পুলিশকে কাজ করতে হচ্ছে। কিছু হলেই মানুষ পুলিশকেই গালাগালি দিচ্ছে। কিন্তু তাদের তো নিধিরাম সরকার অবস্থা। হাতে কিছু নাই। তাই আমরাও চাই, মানুষের মনের মধ্যে যে ক্ষোভ আছে, উপনির্বাচনে বিজেপির পক্ষে ভোট দিয়ে তা প্রকাশ করুক। তৃণমূলকে হারিয়ে মানুষ বুঝিয়ে দিক। তৃণমূল সরকারে আছে। মানুষকে ভয় দেখিয়ে আটকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে জেতার চেষ্টা করবে। করেও তাই। তাতে সাধারণত সরকার যেতে। কিন্তু এবারে মানুষ প্রতিবাদ করতে শিখেছেন। ঐতিহাসিক আন্দোলন সকলে দেখেছে। সাধারণ মানুষ মাসের পর মাস সেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন”৷
তিনি আরও বলেন-“ পুজোর সময় ডাক্তাররা পর্যন্ত অনশন করেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তাই সেজন্য একটা অনুকূল বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। এখানকার যে বিরোধী পার্টি আছে কংগ্রেস সিপিআইএম, তারা চাইছে পরিবেশটাকে ঘেঁটে দিয়ে মমতা ব্যানার্জিকে বাঁচিয়ে রাখতে। যাতে বিজেপি ক্ষমতায় না আসে। মানুষ বুঝে গেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যদি সরাতে হয় বিজেপি হাতিয়ার। অন্য কোন শক্তি তৃণমূলকে সরাতে পারবে না। তাই কংগ্রেস সিপিএম ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে বাঁচানোর জন্য। তারা আন্দোলনকে ডাইভার্ট করে দিচ্ছে। এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে আন্দোলনকারী বামপন্থীদেরই পুরনো এক কর্মী ডাক্তার, তিনি চলে গিয়েছেন কুনাল ঘোষের সঙ্গে সেটিং করতে। দেখলাম সুজন বাবু থেকে সিপিআইএমের লোকেরা নাকি তাতে খুব কষ্ট পেয়েছে। তাকে গালাগালি করছে, কারণ ঝুলি থেকে বেড়ালটা বেরিয়ে পড়েছে। এটা আমরা বারবার বলছিলাম যে বামপন্থীরা আন্দোলন টাকে ডাইভার্ট করছে, আমাদেরকে এগোতে দিচ্ছে না, মমতার বিরুদ্ধে বলতে দিচ্ছে না। এই সেটিং টা তে প্রমাণ হয়ে গেল যে তাদেরই লোক ভেতরে ভেতরে তৃণমূলের সঙ্গে সেটিং করে আন্দোলনটাকে বিপথগামী করছে। আমাদের যেতে পর্যন্ত দিচ্ছিল না। যে আন্দোলনে সিপিআইএমের নেতারা যাচ্ছে সেখানে মোহাম্মদ সেলিম যাচ্ছে, কংগ্রেসের সভাপতিসহ বিভিন্ন নেতারা যাচ্ছেন। সকলেই হাঁটছেন ডাক্তারদের সঙ্গে। তারা তখন মানুষ হয়ে যাচ্ছেন। আর যখনই আমাদের লোক যাচ্ছে, এমপি থেকে বিরোধী দলনেতা সকলকেই গো ব্যাক বলা হচ্ছে। বিনা নেতৃত্বরা সাহায্য নিয়ে গেছেন তাদের কেউ গো ব্যাক বলা হচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে বিজেপির হাত থেকে আন্দোলনকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য একটা গোষ্ঠী ডাক্তারদের বিপথগামী করেছে। তাদের যে পরিশ্রম ত্যাগ সেটা মাঠে মারা যেতে বসেছে। এখন কেবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা হচ্ছে এই জন্য যাতে আন্দোলনের অনশনটাকে কোনভাবে তুলে নেওয়া যায়। আসল ইস্যু থেকে আন্দোলনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষতি না হয়। তাই এই ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। এই নির্বাচনে প্রমান করে দিতে হবে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন দোষী, যারা আন্দোলনকে বিপথগামী করছেন তারাও সমান দোষী। এদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে বিজেপিকে জিতিয়ে এই সরকারকে জবাব দিতে হবে”৷