শালবনী: গত এক সপ্তাহ ধরে
চলছিল পুকুর খননের কাজ। মাঝে পুকুরে জল থাকায় কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। পুনরায়
শনিবার সকাল থেকে মাটি কাটার কাজ শুরু হয় মেশিন দিয়ে। আর সেই সময় সন্ধ্যা
বেলায় মাটি কাটতে গিয়ে উঠে এলো কাঠের এক মূর্তি।কৌতুহলী কর্মীরা অনেক চেষ্টা
করে সেটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে ৷ ছড়ায় চাঞ্চল্য ৷ ভীড় জমে যায় ,শুরু হয়ে যায়
ভক্তিভরে প্রণাম করা,পুলিশ হাজির হয় সেটি উদ্ধারে৷কিন্তু গ্রামবাসীরা পুলিশের হাত থেকে
ছাড়িয়ে নেয় একপ্রকার ৷ রীতিমতো খোলকীর্তন সহযোগে, ধর্মীয় স্লোগান দিতে দিতে নিয়ে যায়
পাশের মন্দিরে ৷ গ্রামবাসীদের দাবি –এটি বিগ্রহ, তাই অধিকার গ্রামবাসীদের ৷ তাঁরা মন্দিরে
রেখে পুজো করবেন ৷
ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীর কুতুরিয়া
গ্রামে।ওই
এলাকাতে গ্রামের পাশে একটি বড়ো পুকুর খননের কাজ চলছিল জেসিবি দিয়ে ৷ সেখানেই শনিবার
দুপুরের পরে একটি কাঠের প্রাচীন মুর্তি উদ্ধার হয় মাটির তলা থেকে ৷ মুর্তিটি কিসের
মতো দেখতে তা পরিষ্কার করার আগেই গ্রামবাসীদের একাংশ তাতে সিন্দুর লাগিয়ে ঠাকুরের বিগ্রহ
বলে প্রণাম করতে শুরু করে দেয় ৷ ভীড়ভরা গ্রামবাসীদের ভক্তি দেখানোর মাঝে শালবনী থানার
পুলিশ হাজির হলে পুলিশকে সেই মুর্তি উদ্ধারে বাধা দেয় গ্রামবাসীরা ৷
স্থানীয়দের দাবি –“এটা কোন দেবদেবীর মূর্তি হবে।গ্রামের প্রাচীন পুকুর ৷ সেখানে উদ্ধার
হওয়া মুর্তিটি সম্ভবত বেল কাঠের তৈরী হবে ৷ ধাতব হলে পুলিশকে দিতাম ৷ কাঠের মুর্তি
আমরা মন্দিরে স্থাপন করে পুজো দেবো ৷”
পুলিশ গ্রামবাসীদের বোঝানোর আগেই গ্রামবাসীরা
খোল কীর্তন শুরু করে দেয় ৷ শাঁখ , কাঁসার ঘন্টা বাজাতে থাকে সকলে ৷গামছা কাঁধে হাজির
হয়ে যায় পুজারি ৷ পুলিশের হাত থেকে সেই মুর্তি তুলে নেয় কাঁধে ৷ সকলেই ভক্তি উগরানো
দেখে উপস্থিত পুলিশ কর্মীরাও প্রণাম করতে শুরু করে ৷ তাদের হাত থেকে সেই মুর্তি নিয়ে গ্রামবাসীরা হরহর
মহাদেব স্লোগান দিয়ে নিয়ে চলে যায় গ্রামের শীতলা মন্দিরের দিকে ৷
স্থানীয় বাসিন্দা সাগর দাস বলেন, “গ্রামের এই জায়গাটি এক ব্যক্তি কিনেছেন। তিনি পুকুর খননের কাজ শুরু
করেছিলেন এক সপ্তাহ ধরে। এদিন সন্ধ্যাবেলায় মাটি কাটতে গিয়ে এই কাঠের মূর্তিটি
বেরিয়ে আসে। সঙ্গে আরও একটি মূর্তি ছিল সেটাও মাটির নিচে রয়েছে। মূর্তিটি আমরা
মন্দিরে রেখে পুজো করব।” পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “গ্রামবাসীরা নিয়ে যেতে চাইলে নিতে পারেন। পুলিশের কোনো আপত্তি নেই।”