Vidyasagar : বিদ্যাসাগর লড়াই করেছিলেন নাবালিকা বিবাহের বিরুদ্ধে, তাঁর ঘাটালেই নাবালিকা বিবাহ ও পকশো মামলায় নাজেহাল প্রশাসন

 

মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুর
জেলাতে এই মুহূর্তে অন্যান্য সমস্যাগুলির মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে বাল্যবিবাহ।
করোনা পর্বের কারণে চরমভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে কয়েক বছর ধরে লাগাতার প্রচার
হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও খুব একটা উন্নতি হয়নি। যার সব থেকে বেশি প্রবণতা খোদ ঈশ্বরচন্দ্র
বিদ্যাসাগরের ঘাটাল এলাকাতেই । বাল্যবিবাহ ছাড়াও মামলা সবথেকে বেশি মেদিনীপুর ও
ঘাটালে। নিজেদের বিয়ে আটকানো তিন প্রতিবাদী কিশোরীকে সংবর্ধনা দিয়ে মাঠে নামলেন
জেলা শাসক খোরশেদ আলী কাদরী। জানালেন “কোনরকম বরদাস্ত আর নয়
, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জেলাতে এটা মানা যাবে না”।

 

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল
কেশপুর শালবনী সহ বেশ কয়েকটি এলাকা রয়েছে
, যেখানে সব থেকে বেশি
নাবালিকা বিবাহের প্রবণতা । জেলা প্রশাসনের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছে
, করোনা পর্বের সময়ে এই নাবালিকা বিবাহের প্রবণতা তৈরি হয়েছে সব থেকে
বেশি। স্কুল বন্ধ করে বাড়িতে থাকা অবস্থাতেই বহু কিশোর-কিশোরী পালিয়ে বিয়ে
করেছে
, অনেকের পরিবার আবার পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিয়ে
দিয়ে দিয়েছে। তবে নিজেদের বিয়ে আটকানোর প্রবণতাও কম নয়।

জেলাশাসক খোরশেদ আলী কাদেরী
বলেন-“নাবালিকাদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে অনেক স্থানে
,এতো
সচেতনতার পরেও বর্তমানে নাবালিকা বিবাহের প্রবণতা অনেকটাই। ২০২১ সালে ৫৭টি স্থানে
নাবালিকা বিয়ে আটকেছে প্রশাসন
, ২০২২ সালে ৮৮ টি স্থানে,
২০২৩ সালে এরই মধ্যে ৪০ টি স্থানে নাবালিকা বিয়ে আটকানো হয়েছে।
সকলে সক্ষম হচ্ছে না
, কিন্তু এমন অনেক নাবালিকা আছে যারা
নিজেদের ভবিষ্যৎ ভেবে প্রতিবাদ করে বিয়ে আটকেছে।”

সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার
চন্দ্রকোনা ও শালবনির এমন তিন নাবালিকা
, যারা নিজেদের বিয়ে আটকে
ছিলেন প্রতিবাদ করে তাদের জেলা শাসকের দপ্তরে হাজির করেছিলেন জেলা শাসক। তারা
প্রত্যেকেই জানায় “ভবিষ্যতে পুলিশ অফিসার হতে চাই”। জেলাশাসক নিজের
দপ্তরে ডেকে তাদের সংবর্ধনা
, সম্মাননা দেন। তুলে দেন উপহার।

 

জেলা জুড়ে এই নাবালিকা বিবাহের
প্রবণতা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে পকশো মামলা রয়েছে। পরিসংখ্যান দিয়ে জেলাশাসক
বলেন-” এটা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জেলা
, ২০০ বছর আগে তিনি
উদ্যোগ শুরু করেছিলেন নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করার জন্য। কিন্তু সেই এলাকাতেই এখনো
নাবালিকা বিয়ে আটকানো যাচ্ছে না। পকশো মামলায় জর্জরিত। টিনেজ প্রেগনেন্সি কুড়ি
শতাংশ। এটা আর বরদাস্ত হবে না। কড়া হাতে জেলা জুড়ে দমন করা হচ্ছে। সমস্ত পদক্ষেপ
হবে নাবালিকা বিয়ে ধরা পড়লেই
, সচেতনতার পরিমাণ বাড়ানো
হচ্ছে। “

প্রশাসনের হিসেবে দেখা গিয়েছে, টিনেজ প্রেগনেন্সি, বাল্যবিবাহ, পকশো মামলা সবথেকে বেশি খোদ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান ঘাটাল
মহকুমাতেই। তাই কড়া হাতে দমন শুরু হলো জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে।

শালবনির মৌপাল উচ্চ বিদ্যালয়ের
প্রধান শিক্ষক ডক্টর প্রসূন কুমার পড়িয়া বলেন-“প্রশাসনের এই উদ্যোগ খুবই
প্রয়োজন
,
আমরা অনেক চেষ্টা করেছি সচেতন করার। তাতে অনেক ছাত্রীকে হয়তো
আটকাতে পেরেছি। আজকে জেলাশাসকের যে উদ্যোগ শুরু হল তাতে আমাদের এ কাজ অনেক সহজ করে
দেবে।”


 

 


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page