ঘাটালে গোল্ড হাব, মাস্টারপ্ল্যান তিন বছরের মধ্যে
ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দেব-এর সমর্থনে শুক্রবার দুপুরে দাসপুরে প্রচারে হাজির হয়েছিলেন নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখানে কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সমাবেশ করেছেন। উপস্থিত ছিলেন জেলার তৃণমূল বিধায়ক থেকে নেতারা৷ বার্তা দিলেন মাস্টার প্ল্যান ও স্বর্ণ শিল্পীদের। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দেবকে কেন জেতানো দরকার তার সম্বন্ধে জেনে রাখুন। কোভিডের সময় ও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খাবার পৌঁছে দিয়ে এসেছে। এই এলাকায় অনেক স্বর্ণকার রয়েছে। আমি একবার মুম্বাইয়ে গিয়ে দেখেছিলাম। একটা ছোট্ট ঘর তার মধ্যে কুড়িজন বাংলার ছেলে ছিল। সেখানেই বাথরুম সেখানে কাজের জায়গা। বাংলার স্বর্ণকারেরা বিশ্বের সেরা। তাদের জন্য দাসপুরে গোল্ডেন হাব হচ্ছে। যেখানে আপনি কাজ করবেন। যেটা আপনার ঘর। হাওড়াতে করে দিয়েছি। এখানে দাসপুর, কেশপুর, পিংলা, সবং এর যারা রয়েছেন, তারা জেনে রাখবেন এখানে আমরা একটা ইকোনমিক করিডোর করছি। সেটা ডানকুনি থেকে হয়ে হলদিয়া যাবে। মেদিনীপুর হয়ে রঘুনাথপুর যাবে। রঘুনাথপুর হয়ে হলদিয়া যাবে। সারা রাস্তায় দু’পাশে বিভিন্ন শিল্পকারখানা হবে। মেদিনীপুরের গুরুত্ব অপরিসীম। মেদিনীপুর ছাড়া স্বাধীনতা আন্দোলন হত না। যাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে কোনো ভূমিকা ছিল না, কয়েকটা চোর জুয়াচ্চোর মিলে দেশ চালাচ্ছে। দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে। মা-বোনেদের অসম্মান করছে। আমরা বললে কথা রাখি। মোদিরা যেটা বলে, ওদের গ্যারান্টি হচ্ছে ফোর টুয়েন্টি। পরিযায়ী শ্রমিকরা জেনে রাখবেন ২৮ লক্ষ শ্রমিকের নাম আমরা রেজিস্টার করেছি। আমাদের ওয়েবসাইটে সেখানে গিয়ে রেজিস্টার করুন যারা পরিযায়ী শ্রমিক আছেন। প্রত্যেককে আলাদা করে একটা স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করে দেব। আমরা চাই দেশের ছেলেরা দেশে ফিরে আসুক। কি দরকার দুটো টাকা না হয় বেশি দেয়! ঘরে খেলে সেটা পুষিয়ে যাবে। যেভাবে বাইরে থাকেন কষ্ট করে, শুনলাম তো ভোট দিতে আসতে দেয়নি। এরপর বলবে তুমি ভোট দাও নি তুমি এনআরসি-তে ঢুকে গেলে। তাই দয়া করে ভোটার লিস্টে নামটা রাখুন। ভোটটা দিন, যেকোনো একটা ডকুমেন্টস থাকলেই হবে। ভোটটা শুধু আমাদের জন্য নয়, আপনার নিজের ভবিষ্যতের জন্য। মোদিকে বলুন না এনআরসির জন্য আগে অ্যাপ্লিকেশন করতে, অমিত শাহকে এপ্লাই করতে বলুন। এখানকার এমএলএ-কে একটা এপ্লাই করতে বলুন। করলেই বিদেশি৷” ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মনে রাখবেন আমি কথা দিলে ১০০ শতাংশ কথা রাখি। আমি দেবকে বলেছি আমার দু-তিন বছর লাগবে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য। কারণ এটা ১০০০ কোটি টাকার প্রকল্প। এত তাড়াতাড়ি ভেঙে পড়লে হবে না একটু সময় লাগবে। তবে ও বলার সাথে সাথে আমরা সার্ভে করা শুরু করে দিয়েছি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান তিন-চার বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে। ইতিপূর্বে কপালেশ্বরী, কেলেঘাই সম্পূর্ণ করেছি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানও নতুন বছরের মধ্যে হয়ে যাবে টাকাটা যোগাড় করতে পারলেই।”
এদিন দাসপুরের সভা সেরে হাজির হয়েছিলেন খড়্গপুর শহরে। যেখানে বিজেপির সব থেকে শক্ত ঘাঁটি ৷ গত লোকসভা নির্বাচনে যেখানে বিজেপির পার্থক্য খড়্গপুর থেকেই ৪৭ হাজার। এবার ভোটের আগেই সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসছেন প্রচারে ৷ ১৯ মে প্রধানমন্ত্রীর আসার আগেই খড়্গপুর শহরে পদযাত্রা করলেন নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় জুন মালিয়ার সমর্থনে। উপচে পড়া ভিড় নিয়ে বিএনআর গ্রাউন্ড থেকে তিন কিলোমিটার রাস্তা পদযাত্রা করেছেন। মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, “প্রচুর মানুষের ভিড় রয়েছে ৷ যা দেখে আমি আপ্লুত ৷ তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০ মে পুনরায় বিকেলে মেদিনীপুরে হাজির হব। ফের পদযাত্রা করবো মেদিনীপুরে।”