মেদিনীপুর: এবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও থাবা বসালো স্ক্রাব টাইফাস। সতর্ক
স্বাস্থ্য দপ্তর। স্ক্রাব টাইফাস পজিটিভ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলো এক স্কুল
ছাত্রীর। ওই ছাত্রীর নাম মৌপ্রিয়া বেরা (১৫)।ঘটনার পরেই জেলা জুড়ে সতর্কতা
জারি স্বাস্থ্যদফতরের ৷ শুক্রবারই মৃত ছাত্রীর গ্রামে যাচ্ছে
স্বাস্থ্যদফতরের প্রতিনিধিরা ৷ জানালেন জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ
সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী ৷
মৃতা ছাত্রী
চাঁদড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলার বল্লা গ্রামে
হলেও পড়াশোনার জন্য মেদিনীপুর সদরের গুড়গুড়িপাল থানার এল্যাবনিতে মামাবাড়িতে
থাকতো। বুধবার বিকেলে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত
ছাত্রীর মামাবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগস্ট মাসের ২৫ তারিখ তার জ্বর এসেছিল। তখন গ্রামের স্থানীয় কোয়াক ডাক্তারের
কাছে চিকিৎসা করিয়েছিলেন। তিনদিন কেটে যাওয়ার পরও জ্বর না ভালো হওয়ায় দেপাড়া
এলাকায় অন্য এক চিকিৎসককে দেখান। ওই চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দেন। রক্ত
পরীক্ষায় জন্ডিস ধরা পড়েছে বলে জানান ওই ছাত্রীর মামা তারক পাল। তিনি বলেন, “জন্ডিসের চিকিৎসা চলছিল। পরেরদিন বমি শুরু হয়। ফের ওই
চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে বমি বন্ধের ওষুধ দেন।” গত মঙ্গলবার আবার জ্বর এলে
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মৌপ্রিয়াকে। বুধবার বিকেলে তার
মৃত্যু হয়। ওই ছাত্রীর মৃত্যু শংসাপত্রে স্ক্রাব টাইফাস পজিটিভের উল্লেখ রয়েছে।
সাধারণ
একপ্রকার কীট দ্বারা আক্রান্তের পরেই রোগীর জ্বর আসে। জ্বর, বমি, গায়ে, হাত-পায়ে ব্যথা স্ক্রাব টাইফাসের প্রাথমিক লক্ষণ। সাধারণ
জ্বরের থেকে বেশিদিন থাকে স্ক্রাব টাইফাস আক্রান্তকারীদের জ্বর। ফলে দ্রুত রক্ত
পরীক্ষার কথা বলছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা জানান, মূলত মাইট নামক একপ্রকার কীটের কামড়ে এই রোগ হয়। কামড়ানো জায়গায় কালো রঙের
ক্ষত তৈরি হয়, যা এই রোগের সন্দেহের অন্যতম লক্ষণ।
সাধারণত বর্ষায় এই রোগের প্রকোপ বাড়ে। প্রাথমিক ভাবে, এই পোকা কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে কোনও ব্যথা অনুভব হয় না। তবে
পরে তা শরীরের ভিতরে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে। তবে পরিবারে ওই ছাত্রী পোকার
কামড়ের কথা জানায়নি বলে জানিয়েছেন মৃত ছাত্রীর মামা। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য
আধিকারিক সৌম্য শংকর সারেঙ্গী বলেন, “পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এই প্রথম স্ক্রাব টাইফাস রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু
হল। সাধারণত গ্রামের জঙ্গল ও কৃষিজমিতে এই ধরনের পোকা দেখা যায়। সচেতনতার অভাব
অনেক সময় লক্ষ্য করা যায়। জঙ্গল বা জমি থেকে এসে ভালো করে হাত পা ধোয়া বা পোশাক
পরিষ্কার করা হয় না। সচেতনতার প্রচার বাড়ানো হবে ওই এলাকায়। শুক্রবার
স্বাস্থ্যকর্মীরাও যাবেন। এই ধরনের সমস্যায় জ্বর হয় ৷ কিন্তু সেই জ্বরে গুরুত্ব না দিয়ে অনেক দেরী করে হাসপাতালে এলে ততক্ষনে বিভিন্ন অঙ্গ হানি করে ফেলে জাবীনুটি ৷ তাই সকলকেই সতর্ক হতে বলবো জ্বর হলেই ৷” ওই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।