খড়গপুর: খাবারের খোঁজে বেরিয়ে দশটি হাতির একটি বড় দল শাবক সহ কংসাবতী নদী পার হয়ে প্রবেশ করে যায় খড়গপুর শহরে। মঙ্গলবার ভোররাতে তারা খড়গপুর শহরে প্রবেশ করতেই হলুস্থুল কান্ড বেধে যায় । লোকজনের চেঁচামেচি ও মশাল পার্টির তাড়া খেয়ে হাতির দল আশ্রয় নেয় খড়গপুর শহরে মহাকুমা হাসপাতালের পেছনে। সেখানেই সকাল হয়ে যেতে হাতির দল কুক্ষিগত হয়ে আটকে থাকে। যেকোনো সময় হাতির আক্রমণ হতে পারে এই আশঙ্কায় মানুষজনকে দূরে সরিয়ে রাখতে ১৬৩ ধারা জারি করল প্রশাসন। পরে সেই হাতিকে জঙ্গলে নিরাপদে পাঠাতে ১১ টি মশাল বাহিনী নিয়োগ করতে হয়েছে বনবিভাগকে ৷
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে,মেদিনীপুর শহরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল হাতির দলটি প্রথমে। রাত পোহালে সেখানে উপনির্বাচন রয়েছে তাই আপ্রাণ চেষ্টা করে মশাল বাহিনী আটকে দিতে সক্ষম হলেও খড়্গপুরে কার্যত ব্যর্থ মশাল বাহিনী। তাদের কোন বাধা না মেনে প্রবেশ করল খোদ খড়্গপুর শহরে। যা ঘিরে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে গোকুলপুরে থেকে যাওয়া এক দাঁতাল। পাশাপাশি কোনো জঙ্গল নেই। ফলে হাতির থাকা নিয়ে অনেকটাই উদ্বেগ বাড়িয়েছে বনকর্তাদের।
বনকর্তারা মানছেন, বিগত দিনে হাতি এই পথে এর আগে আসেনি। ফলে এদিনের হাতির যাতায়াত ঘিরে ভবিষ্যতের চিন্তা তাদের বাড়িয়ে তুলছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে খড়্গপুর বনবিভাগের বিশাল মশাল বাহিনী এসে পৌঁছায় বড়কোলা গ্রামে। পৌঁছায় খড়্গপুর বনবিভাগের ডিএফও মণীশ যাদব সহ এডিএফও এবং বিভিন্ন রেঞ্জের রেঞ্জ আধিকারিকরা। তবে মশাল বাহিনী পুনরায় জঙ্গলে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়নি দলটিকে।
বনদপ্তরের পক্ষ থেকে ADFO চিন্ময় বর্মন বলেন-“হাতিকুলি বিভিন্ন জায়গায় তালা খেয়ে হাসপাতালের পেছনে ছোট জঙ্গলে এসে আশ্রয় নিয়েছে। সেখান থেকে যাতে কোনভাবে বিভ্রাট না ঘটে তাই ওই এলাকায় মশাল পার্টি ও বনদপ্তরের কর্মী পুলিশ ঘিরে রেখে পাহারা দিচ্ছে। মানুষের জটলা আটকাতে ১৬৩ ধরা জারি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সন্ধ্যে হলেই হাতিগুলিকে নিরাপদ রুটে বের করে দেওয়া হবে জঙ্গলের দিকে।”
তবে খড়গপুর শহরের ওই এলাকাতে ৯টা হাতি এভাবে আটকে থাকা ঘিরে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে খড়্গপুরের রেল শহর জুড়ে। ১৬৩ ধারা জারি করে মানুষের উপস্থিতি হাতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে প্রশাসন ও বনকর্তারা। পরে সন্ধা নামার আগেই খড়্গপুর শহরে বনদফতরের পক্ষ থেকে হাজির করানো হয়েছে ১১ টি প্রশিক্ষিত মশাল বাহিনীকে ৷ তাদের দিয়ে রাতে বিশেষ পথ ধরে হাতির পালকে পাঠানো হবে গবীর জঙ্গলে ৷