সরকারি হোমের দুই নাবালিকাকে দত্তক নিল বেলজিয়ামের দম্পতি
মেদিনীপুরের সরকারি হোমে রয়েছে অনাথ শিশুরা। কোন না কোন স্থান থেকে পরিত্যক্ত হয়ে সরকারি হোমে ঠাঁই পেয়েছিল। এমনই দুই নাবালিকাকে সরকারি একাধিক নিয়ম মেনে নিজেদের করে দত্তক নিলেন প্রবাসী ভারতীয় দম্পতি। নিয়ে গেলেন বেলজিয়ামে। মেদিনীপুর শহরের জেলা শাসকের দপ্তরে অতিরিক্ত জেলা শাসক কেম্পা হোন্নাইয়া হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেন নিয়ম মেনে। গত প্রায় এক বছরে মেদিনীপুরের সরকারি হোম থেকে এমন ৪৫ জন অনাথ শিশুকে দত্তক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করানো হয়েছে। যার মধ্যে ছটি শিশু গিয়েছে বিদেশে।
এই দম্পতির মধ্যে রয়েছেন আদিল মাসুদ ও তার স্ত্রী রেহালা বানু। আদতে উত্তরপ্রদেশের লখনৌর বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে প্রায় ১৫ বছর ধরে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে থাকেন দুজনে। দুজনেই ব্রাসেলসে নামকরা দুই সংস্থায় কর্মরত। আদিল সেখানে একটি সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রির প্রজেক্ট ডিরেক্টর। রেহালা অন্য একটি একটি কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার। আর্থিক সঙ্গতি সম্পন্ন এই নিঃসন্তান দম্পতি সন্তান দত্তক নিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। সেইমতো অনলাইনে আবেদন করেছিলেন আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যম দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনের কাছে। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে তার বিভিন্ন ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল মঙ্গলবার বেলা দুটো নাগাদ জেলা শাসকের দপ্তরে। দত্তক নেওয়া দুই নাবালিকার বয়স একজনের পাঁচ বছর, অপরজন চার বছর। বছর দুয়েক আগে খড়গপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই দুই শিশু কন্যাকে উদ্ধার করেছিলেন চাইল্ড লাইনের আধিকারিকরা। তারপর তাদের মানুষ করা হচ্ছিল মেদিনীপুর শহরে রাঙামাটিতে অবস্থিত সরকারি হোম বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনে। আদিল বলেন, “একাধিক নিয়ম পার করে আমরা এই পর্যন্ত আসতে সক্ষম হয়েছি। তবে এই বাচ্চাগুলো সরকারী হোমে যেভাবে লালন পালন হচ্ছিল বা যত্ন নেওয়া হয়েছে তাতে আমরা খুবই আপ্লুত। এই দুই বাচ্চাকে পেয়ে আমাদের পরিবার সম্পূর্ণ হলো। নিজেদের মতো করে এদের বড় করতে চাই। তবে এরা ভবিষ্যতে কি হবে সেটা ওদের হাতেই ছেড়ে দেব।” অতিরিক্ত জেলা শাসক কেম্পা হোন্নাইয়া বলেন, “এ পর্যন্ত এই সরকারি হোমে থাকা ৪৫ জন শিশু এভাবে দত্তক হলো। যার মধ্যে ৬ জন শিশু বিদেশে গিয়েছে। এই পুরো প্রক্রিয়াতে আমরা খুবই খুশি ও সন্তুষ্ট।”