মেদিনীপুর কলেজ স্কোয়ার থেকে সরানো হলো হকারদের, বিক্ষোভ-অবরোধ
ফুটপাত ও সরকারি জায়গা দখল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরেই মেদিনীপুর পৌরসভা এলাকায় রাস্তায় নামে প্রশাসন। রাস্তার ধারে ফুটপাতে থাকা দোকানগুলিকে সরানোর জন্য তালিকাও তৈরি করেন। সেই মতো বুধবার সকাল থেকে ফুটপাতে থাকা হকারদের সরানোর কাজ শুরু করে মেদিনীপুর পৌরসভা ও প্রশাসন। তবে উচ্ছেদ নয়, অন্যত্র তাদের পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে, এমনটাই দাবি প্রশাসনের। এদিন মেদিনীপুর কলেজ স্কোয়ারে থাকা সমস্ত হকারদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। বিকল্প হিসেবে ডিআই অফিসের রাস্তায় তাদের ব্যবসার জন্য জায়গা চিহ্নিত করে। সরানোর আগে মঙ্গলবার একটি বৈঠক করে হকারদের সঙ্গে প্রশাসন। মেদিনীপুর সদর মহকুমা শাসক মধুমিতা মুখার্জি বলেন, “আমরা যেখানে বিকল্প জায়গা পেয়েছি হকারদের বসানোর, সেই সমস্ত এলাকার ফুটপাতে থাকা হকারদের আপাতত সরানো হচ্ছে। মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট স্কুলের পাশে ফুটপাতে থাকা হকারদের বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে কারণেই তাদের সরানো হচ্ছে। তবে এটা উচ্ছেদ নয়।” হকারদের দোকান সরানোর পরেই বিক্ষোভ শুরু করে হকাররা। তৃণমূলের পতাকা নিয়ে রাস্তায় বসে অবরোধ শুরু করে দেয়। তাদের দাবি, এখান থেকে দোকান সরিয়ে নিলে তাদের কেনাবেচা অনেকটাই কমে যাবে। প্রত্যেক দোকানে দু-তিনজন করে কর্মচারী রয়েছে। বিক্রি কমে গেলে প্রত্যেকেরই সংসারের টান পড়বে। আর যেখানে আমাদের যেতে বলা হচ্ছে ওখানে আলো, জলের ব্যবস্থা নেই। সমস্ত দোকান ওই জায়গার মধ্যে ধরবে না।” মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, “বৈঠকে তারা সম্মতি দিয়েছিলেন বলেই সরানো হচ্ছে। তাদের এখন কি অসুবিধা হচ্ছে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। অথচ বৈঠকে কিছু বলেনি। যেখানে পাঠানো হচ্ছে সেখানে আলো এবং জলের ব্যবস্থা করবে পৌরসভা। পাশাপাশি প্রতিদিন পরিষ্কারও করা হবে। আমরা চাইছি ফুডজন হিসেবে আলাদা তৈরি করতে।” তবে ঐতিহাসিক কলেজ-কলেজিয়েট এলাকা থেকে সমস্ত দোকান সরানোর দাবি শহরবাসীর দীর্ঘদিনের। মানুষজনও চেয়েছিলেন এই ঐতিহাসিক স্থানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে। একাধিকবার পৌরসভায় দাবিও জানিয়েছিলেন। তবে দীর্ঘদিন পর দোকান সরানো হলে অনেকটাই খুশি তারাও। শুধু কলেজ স্কোয়ার নয়, শহরের যেখানেই বিকল্প জায়গা খুঁজে পাবে হকারদের বসানোর, সেখানেই রাস্তার ফুটপাত থেকে সরানো হবে হকারদের। এমনকি যে সমস্ত সরকারি জায়গা দখল করে একাধিক বাড়ি নির্মাণ হয়েছে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন মহকুমা শাসক। মেদিনীপুর শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে সরকারি জায়গা দখল করে বেশ কিছু বাড়ি নির্মাণ হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই বিষয়েও খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান মহকুমা শাসক।