বিদ্যালয়ের উদ্যোগে শুরু হওয়া দুর্গা পুজো হয়ে উঠল সর্বজনীন

দু’ধারে সবুজ জঙ্গলের মাঝ দিয়ে চলে গিয়েছিল লাল মোরামের রাস্তা। সেই পথ দিয়ে হেঁটে যেতেন দলেদলে মানুষ। দু-পাঁচ কিলোমিটার নয়, দশ-পনেরো কিলোমিটার দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন আসতেন পুজো দেখতে। তবে ভিড় বাড়তো দশমীতে। সেই পুজো এবার ৬৬ বৎসরে পদার্পণ করল। যার ভার্চুয়াল উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটাই ছিল অর্থনৈতিক দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকা মেদিনীপুর সদর ব্লকে (পশ্চিম) সর্বপ্রথম দুর্গাপূজা। ১৯৫৮ সালে শুরু হয় চাঁদড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। তাও আবার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগেই। তখন থেকেই স্কুল চত্বরে পুজো হয়ে আসছে। তৎকালীন প্রথম প্রধান শিক্ষক বনোয়ারী লাল দে এই পুজোর সূচনা করেছিলেন আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষজনদের সঙ্গে নিয়ে। সাহায্য করতেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পরবর্তী প্রধান শিক্ষক কামনা কিঙ্কর দে সরকার সেই ঐতিহ্য বজায় রেখেছিলেন। পরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং এলাকার উন্নতি ঘটলে দায়িত্বে আসেন গ্রামবাসীরা। তখন থেকে বিদ্যালয়ের পুজো হয়ে ওঠে সর্বজনীন। এই পুজোতে মূল আকর্ষণ আতশবাজি প্রদর্শনী ও রাবণ দহন। পুজো কমিটির উদ্যোক্তা মিলন দে বলেন, “চাঁদড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে ১৯৫৮ সালে প্রথম দুর্গাপূজার সূচনা করেন তৎকালীন প্রধান শিক্ষক বনোয়ারী লাল দে। সেই বিদ্যালয় চত্বরেই আজও পুজো হয়ে আসছে। মূল আকর্ষণ আতশবাজি প্রদর্শনী ও রাবণ দহন। যা দেখতে দশমীতে হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয়।” স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন দে বলেন, “আশেপাশে কোথাও পুজো হতো না। তখনকার দিনে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে হেঁটে মানুষজন আসতেন। দিনে দু-একটা বাস চললেও সন্ধ্যা বেলা বাসের যোগাযোগ ছিল না।” বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষিকা অন্তরা ঘোষ বলেন, “আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুজো হওয়ায় একাত্মতা গড়ে ওঠে। বিভিন্নভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকারাও সাহায্য করেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page