প্রখর রৌদ্রের তাপে ক্লান্ত হাতি, জল দিয়ে স্নান করিয়ে দিল যুবক, কে ওই যুবক ? বিস্তারিত জানতে পড়ুন
বালতিতে করে জল তুলে হাতিকে স্নান করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনই এক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বাহবা কুড়িয়েছেন ওই যুবক। অনেকে আবার হাতি-মানুষের সহবস্থানের কথাও উল্লেখ করেছেন। ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, এক যুবক একটি কালভার্টের নীচ থেকে বালতিতে করে জল তুলে হাতির গায়ে ছিটিয়ে দিচ্ছেন। হাতিটিও স্বস্তি অনুভব করে তার লেজ, কান নাড়িয়ে চলছে। কোনরকম আক্রমণ করার ইচ্ছাও তার নেই। এই চিত্র সিনেমায় দেখা গেলেও বাস্তবে বিরল। চিড়িয়াখানা বা পোষা নয়, দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলের দলছুট ওই হাতিটি। তার দাঁত নেই বলে স্থানীয় মানুষজন আদর করে নাম দিয়েছে ‘ফগলা’। হাতির প্রতি যে ভালোবাসা ওই যুবক দেখিয়েছেন, তাতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে নেট দুনিয়ায়। কিন্তু কে ওই যুবক? ঘটনাটি কোথাকার? জানা গিয়েছে, ভিডিওটি গত ১লা এপ্রিলের। সময় দুপুর সাড়ে বারোটা। জঙ্গল ছেড়ে ওই হাতিটি লোকালয়ে চলে যায়। ফের গ্রামের মানুষজন হাতিটিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করেন। প্রখর রৌদ্রের তাপে ক্লান্ত হাতিটি জলের খোঁজ চালায়। রাস্তায় একটি কালভার্টে জল দেখতে পায়। কিন্তু কালভার্টে জল এতটাই নিচে যে উপর থেকে শুঁড়ে নাগাল পায়নি। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা করে গিয়েছে জলের নাগাল পেতে। ওই সময় ওখানে ছিলেন ওই যুবক। সামনেই একটি বালতি পেয়ে জল তুলে হাতির শরীরে ছিটিয়ে দেয়। বেশ কয়েক বালতি জল দেওয়ায় কিছুটা হলেও রৌদ্রের তাপ থেকে স্বস্তি পেয়েছে ‘ফগলা’। ঘটনাটি ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইলের গোপালপুর এলাকায়। ওই যুবকের নাম নিতাই সিং (বয়স ২৪)। বাড়ি সাঁকরাইলের কুলঘাঘরী গ্রামে। তবে যুবকের এই কাণ্ড দেখে একদিকে যেমন বাহবা দিচ্ছেন মানুষজন, তেমনই বিপদেরও আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। অনেকে বলছেন, এই ভিডিও দেখে অনেকেই অতিউৎসাহিত হয়ে আরও কাছাকাছি চলে যাওয়ার চেষ্টা করবে। তখনই বিপদ ঘটতে পারে। উল্লেখ করা যায়, দক্ষিণবঙ্গের এক শান্তপ্রিয় হাতি হলো ‘রামলাল’। অনেকেই তার কাছাকাছি চলে যায়। লেজ ধরো টানাটানি করতেও দেখা গিয়েছে। যার পরিণতিতে মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তবে নিতাই ও তার বন্ধুরা বরাবরই হাতিদের ভালোবাসেন বলেই জানিয়েছেন। এলাকায় হাতি বেরোলে তারা হাজির হয়ে যায় ঘটনাস্থলে। তবে হাতিদের কোন বিরক্ত করে না। নিতাই বলেন, “হাতিটি লোকালয়ে চলে এসেছিল। পরে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় ওই কালভার্টে নিচে জল দেখতে পেয়ে দাঁড়িয়ে যায়। শুঁড়ে নাগাল না পেয়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। সেই দৃশ্য দেখার পর সামনে একটি বালতি পেয়ে জল ছিটিয়ে দিই শরীরে। হাতিটি কোনোরকম আক্রমণ করেনি। পরে সে জঙ্গলের দিকে চলে যায়।” তবে হাতিটি অসুস্থ রয়েছে বলে মনে করছেন নিতাই।