Home Blog প্যারিসের অলিম্পিক্সে অংশ নিচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের মেয়ে

প্যারিসের অলিম্পিক্সে অংশ নিচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের মেয়ে

38
0

প্যারিসে অনুষ্ঠিত অলিম্পিক্সে সুযোগ পাচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের মেয়ে আভা খাটুয়া। এই খবরে খুশির হাওয়া জেলার ক্রীড়া মহলে। তবে আনন্দের এই খবরে খুশি হতে পারছেন না আভা ও তার পরিবার। আভার বৌদির আকস্মিক মৃত্যু ঘটেছে কয়েকদিন আগে। সেই শোক কাটিয়ে উঠতে পারছে না পরিবার। আভার বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের খুড়শি এলাকায়। শনিবার তাকে সংবর্ধনা দেয় যুব সংগঠন ডিওয়াইও। আভার বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সুশান্ত পানিগ্রাহী। আজ অর্থাৎ শনিবার পঞ্জাবের পাতিয়ালার উদ্দেশে রওনা দেবেন। ২০১৯ সাল থেকে ওখানেই  প্রশিক্ষণ নেন আভা। আগামী ১ অগস্ট থেকে প্যারিসে শুরু হচ্ছে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড অ্যাথেলেটিক্স। চলবে ১১ অগস্ট পর্যন্ত। মহিলাদের মধ্যে নজরে থাকবেন ২৯ বছরের বাংলা তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের আভা। আভা জানাচ্ছেন, তার আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং ২৩। এর আগে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এই অ্যাথলিটে একাধিক মেডেল জিতেছেন। কখনও সোনা, কখনও রুপো। ২০২৩ সালে ব্যাঙ্ককে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে শটপুট ১৮.০৬ মিটার ছুঁড়ে মনপ্রীত কাউরের সঙ্গে সিলভার মেডেল পান। চলতি বছরে কয়েকমাস আগেই ভুবনেশ্বরে জাতীয় ফেডারেশন কাপ অ্যাথেলেটিক্স প্রতিযোগিতায় শটপুটে ১৮.৪১ মিটার ছুঁড়ে নজির সৃষ্টি করেছেন। এছাড়াও নেপালের কাঠমাণ্ডুতে ২০১৯ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে সোনা ও ২০২২ সালে কাজাখিস্তানেও সোনা জয় করেন। শুধু শটপুট নয়, মাঝে দৌড় প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিলেন। ২০০, ৪০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়ে মেডেল জিতেছেন। তার জাতীয়স্তরের প্রতিযোগিতায় মেডেলের সংখ্যা প্রায় পঁয়তাল্লিশ। তবে এই জার্নি আভার পক্ষে কোনওভাবেই সহজ ছিল না। নারায়ণগড়ের প্রত্যন্ত গ্রাম খুড়শির বাসিন্দা আভার বাবা লক্ষ্মীকান্ত খাটুয়া ভাগচাষী। মেয়েকে পড়ানোর এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সেভাবে সহযোগিতা করতে পারেননি তিনি। তবে আভার কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বেলদার অনেকেই তার প্রতিভা দেখে সহযোগিতা করেছেন। আভা ২০১৭ সালে বেলদা কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে ঝাড়গ্রাম সেবাভারতী মহাবিদ্যালয় থেকে বিপিএড করেন। কলেজে পড়ার সময় থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। মাঝে কলকাতাতে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়াতে প্রশিক্ষণ নেন। ২০১৯ সাল থেকেই তিনি পঞ্জবের পাতিয়ালাতে থেকে প্রশিক্ষণ নেন। স্পোর্টস বিভাগের সংরক্ষণে কাস্টমসে চাকরিও করেন। অনেক কষ্ট ও অভাব নিয়ে জীবনে সাফল্যকে তুলে ধরেছেন আভা। অলিম্পিক্সে সুযোগ পাওয়া সেই ধারাবাহিক লড়াইয়ের ফসল। আভা জানান, বেস্ট থ্রো করা। ১৯ মিটার থ্রো করে নজির গড়তে চাই। সেই মতো প্রশিক্ষণ চালাচ্ছি। জয়ের আভা কি ছড়িয়ে দিতে পারবেন আভা ? আপাতত এই আশা ও প্রশ্নের মাঝেই শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়ে দিচ্ছেন আভাকে। নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট বলেন,”খুব কষ্ট করে বড় হয়েছে আভা। তার সাফল্য কামনা করছি।” আবার হাত ধরেই সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম সোনা পায় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৭ সালে অন্ধ্রপ্রদেশে আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতার হেপ্টাথেলন বিভাগে। তার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সঞ্জিত তোরই। তিনি বলেন, “আমরা সব রকম সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব। আভা আমাদের জেলার নাম উজ্জ্বল করেছে।”

Previous articleস্কুল-কলেজের সামনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি বন্ধে অভিযান
Next articleমহিলা ফুটবলে মায়ানমারের বিরুদ্ধে দেশের হয়ে খেলবেন শালবনীর মৌসুমী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here